জিহ্বা, মুখ ও গলার ওপরের অংশের মাংসপেশি শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এসব মাংসপেশি আমাদের খাওয়া, কথা বলা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া ঘুমানোর সময় বাতাস চলাচলের রাস্তা বা এয়ারওয়ে খোলা রাখতে সাহায্য করে।
জিহ্বা, মুখ ও গলার ওপরের অংশের মাংসগুলো যখন দুর্বল থাকে, তখন শ্বাসনালির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ফলে বাতাস ভেতরে যেতে পারে না, অর্থাৎ শ্বাস যাওয়ার রাস্তা ব্লক হয়ে যায়। তখন আমরা স্লিপ অ্যাপনিয়া বা নাক ডাকায় ভুগে থাকি।
নাক ডাকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ওজন বৃদ্ধি, অর্থাৎ ওবেসিটি। ওজন বেশি হলে শ্বাসনালির আশপাশে অনেক ফ্যাট বা চর্বি জমা হয়, যা শ্বাসনালির রাস্তা সরু করে দেয়। ফলে বাতাস যেতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
গবেষকরা বলছেন, যাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে বা নাক ডাকেন, তাদের উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার, ডায়াবেটিস, ঘাড়ব্যথা, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যাও বেশি থাকে।
মুক্তি পাবেন কীভাবে
স্ট্রেনদেনিং এক্সারসাইজ বা মায়োফাংশনাল থেরাপির মাধ্যমে স্লিপ অ্যাপনিয়া বা নাক ডাকা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে জিহ্বা, চোয়ালের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করতে হবে।
কীভাবে করবেন
১.
২. মাথা উঁচু করে জিহ্বা দিয়ে নাক স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। তারপর ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। ১০ বার একইভাবে এ ব্যায়াম করুন।
৩. ইনডেক্স ফিংগার ব্যবহার করে মুখের মধ্যে হাত দিয়ে চোয়াল বাইরের দিকে টানুন। তারপর ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এই এক্সারসাইজ ৫-৭ বার করুন এবং উভয় দিকে করুন।
৪. মুখের ভেতরে বাতাস নিয়ে, অর্থাৎ মুখ ফুলিয়ে ধরে রাখুন ১০ সেকেন্ড। এ এক্সারসাইজ ৫-৭ বার করুন এবং উভয় দিকে করুন। এরপর ধীরে ধীরে বাতাস ছেড়ে দিন।
৫. ঘুমানোর আগে অবশ্যই ভালোভাবে নাক পরিষ্কার করতে হবে। হালকা গরম পানির সঙ্গে লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করুন পাঁচবার।
পরামর্শ
১. চিৎ হয়ে শোয়া যাবে না। যে কোনো একপাশে কাত হয়ে শুতে হবে।
২. ওজন বেশি থাকলে কমাতে হবে।
৩. ধূমপান বর্জন করুন।
৪. অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকুন।
৫. প্রচুর পানি পান করুন।
মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ১০ স ক ন ড
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় বাড়ছে গোমতী নদীর পানি
নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বাড়ছে। তবে তা এখনও বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি সমকালকে জানান, টানা বর্ষণ এবং ভারত থেমে আসা পানিতে গোমতীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রন কক্ষ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১০৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৮১ মিটার। যদিও বিপৎসীমা নির্ধারিত আছে ১১ দশমিক ৩০ মিটার। নদীর পানির উচ্চতাসীমা এখনও বিপৎসীমার ৪.৪৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতে কুমিল্লা রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে নগরীর অধিকাংশ প্রধান পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। জলাবব্ধতার সৃষ্টি হয় নগরীর বেশ কিছু এলাকায়। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে জনজীবনে। পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। শুক্রবার সকাল থেকে সরেজমিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লা সিটি কপোরেশনে সামনের সড়ক, রেইসকোর্স, বিসিক শিল্পনগরী, জিলা স্কুল সড়ক, নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে কান্দিরপাড় সড়ক, ঠাকুরপাড়া, মুরাদপুর, ছাতিপট্টি, কান্দিরপাড়-রাণীর বাজার সড়ক, অশোকতলা, ধর্মপুর ছায়া বিতান ও শুভপুরসহ নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। অনেকেই ড্রেনে পড়ে আহত হন।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি রোকেয়া বেগম শেফালী বলেন, নগরীতে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জলাবব্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতামুক্ত নগরীর জন্য নাগরিক ও নগর কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। পানি প্রবাহের ড্রেন ও খাল গুলি এখনই খনন করতে হবে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন সমকালকে বলেন, গত দুই দিনের হঠাৎ বৃষ্টিতে নগরীর বেশ কিছু সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। এতে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা পানি সরাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, নগরীর পানি প্রবাহের প্রধান প্রধান বড় বড় ড্রেন ও খালের মাটি অপসারণে ৯ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ঈদের পর কাজ শুরু হবে।