ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক সংগঠনের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এই সংঘর্ষ হয়। এতে দুই গ্রুপের ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন নগর ভবনে যান। এ সময় তিনি দুই পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নগর ভবনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে অন্তর্কোন্দলে জড়িয়েছে দুই পক্ষ। বিএনপি নেতা ইশরাককে মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দাবিতে চলমান আন্দোলনে বৃহস্পতিবার এই দুই পক্ষই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ডিএসসিসির জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ ও শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান প্রিন্স গ্রুপের কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষের সময় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে ব্যাপক ভাঙচুর করেন তারা। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়।

এ ঘটনার পর নগর ভবন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রিন্স গ্রুপের প্রিন্স মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকর্মীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কর্মী জানিয়েছেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়েই মূলত এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের কারণে নগর ভবনের সাধারণ কর্মচারী-কর্মকর্তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে ব্যাহত হচ্ছে। এরই মধ্যেই জরুরি সব কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ চৌধুরী বলেন, নগরভবনে আজকের ঘটনায় আমি নিজেও আহত হয়েছি। তবে ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে আমাদের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে। তারা ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

অন্যদিকে আরিফুজ্জামান প্রিন্সকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এসস স স ঘর ষ ইশর ক হ স ন নগর ভবন স ঘর ষ র

এছাড়াও পড়ুন:

একটি দল ছাড়া কোনো দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না, তা সঠিক নয়: গণফোরাম

গণফোরাম বলেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে গিয়ে একটি দল ছাড়া আর কোনো দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা সঠিক নয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছে বলেও উল্লেখ করেছে দলটি।

আজ শুক্রবার বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণফোরামের সভাপতি পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণফোরামের সভাপতি পরিষদের অন্যতম সদস্য এস এম আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, সভাপতি পরিষদের সদস্য সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মেজবাহউদ্দীন, মোশতাক আহমেদ, সুরাইয়া বেগম, সেলিম আকবর, শাহ নুরুজ্জামান প্রমুখ।

সভায় আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে গণফোরামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর বলে প্রতীয়মান হচ্ছে এবং এর ফলে ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে।

গণফোরামের নেতারা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের সুফল পাওয়ার জন্য দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা জরুরি। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের রূপরেখা ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এ দায় রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে দুঃখজনক।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আলোচনা এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের বৈঠক জাতিকে আরও হতাশ করেছে বলে উল্লেখ করেছে গণফোরাম। দলটি বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার এবারের বৈঠকে গণফোরামকে আমন্ত্রণ না জানানোর ফলে সরকার ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

গণফোরামের নেতারা আরও বলেন, গত ৯ মাসে সরকার আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার ও জনপ্রশাসনের অস্থিরতা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। এ ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার বা দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা এখনো লক্ষ করা যায়নি। ফলে সরকারের প্রতি জনসমর্থন যেমন হ্রাস পাচ্ছে, তেমনি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ও জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে।

গণফোরাম সভাপতি পরিষদের সভায় অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণার দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, সে ঐক্য যেন কোনো অশুভ শক্তি বিনষ্ট করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ