জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইরান অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের উৎপাদন আরো বাড়িয়েছে। শনিবার একটি গোপন প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

বিবিসির দেখা একটি গোপন প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের কাছে এখন ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতা পর্যন্ত ৪০০ কেজিরও বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এই ইউরেনিয়াম বেসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত স্তরের চেয়ে অনেক বেশি এবং অস্ত্রের স্তরের কাছাকাছি। গত তিন মাসের মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, আরো পরিশোধিত হলে এগুলো প্রায় ১০টি পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য যথেষ্ট। তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনার সময় গত তিন মাসে ইরান প্রতি মাসে প্রায় একটি পারমাণবিক অস্ত্রের সমান হারে অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করেছে।

ইরান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, তার পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, “ইরানের মাধ্যমে অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের উৎপাদন এবং সঞ্চয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি.

.. গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।”

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি প্রতিক্রিয়া এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্রকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মনে করে।

টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেছেন, “যদি বিষয়টি পারমাণবিক অস্ত্রের হয়, তবে হ্যাঁ, আমরাও এই ধরণের অস্ত্রকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। আমরা এই বিষয়ে তাদের সাথে একমত।”

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সংকট সমাধানে আর কত অপেক্ষা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘদিন ধরে চলমান অচলাবস্থাকে দেশের উচ্চশিক্ষাব্যবস্থার জন্য হতাশাজনকই বলতে হবে। ছাত্ররাজনীতি, প্রশাসনিক শূন্যতা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী দ্বন্দ্বের জটিলতার কারণে ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসনের মধ্যকার আস্থার সংকট আজ বিশ্ববিদ্যালয়টির স্বাভাবিক কার্যক্রম পুরোপুরি স্তব্ধ করে দিয়েছে। এই স্থবিরতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি কবে মুক্তি পাবে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

প্রথমত, উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো একরকম অচল হয়ে পড়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা ছাড়াও প্রায় ১ হাজার ১০০ শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা আটকে আছে; ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ থমকে গেছে—যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ভবিষ্যৎ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোগত উন্নয়নের ওপর।

দ্বিতীয়ত, শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক অনাস্থা এবং একে অপরের দাবিকে প্রহসন হিসেবে দেখা, সংকট নিরসনের পথকে আরও দীর্ঘায়িত করছে। শিক্ষকদের বিচারের দাবি যেমন যুক্তিসংগত, তেমনি শিক্ষার্থীদেরও নিরাপদ শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করার দাবি উপেক্ষিত হতে পারে না। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা তাদের মানসিকভাবে প্রভাব ফেলছে। দীর্ঘ সেশনজটের কারণে ভবিষ্যৎ পেশাজীবনেও তাদের ভুগতে হতে পারে। এখানে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ উপাচার্য দ্রুত নিয়োগ দিয়ে তাঁকে পূর্ণ প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান না করলে এই অচলাবস্থা আরও ঘনীভূত হবে।

সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান, তারা যেন অবিলম্বে একজন দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দেয় এবং তার নেতৃত্বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। সব পক্ষের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কোনো পক্ষ নিজেকে বঞ্চিত বা অসম্মানিত না ভাবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যাতে বারবার রাজনীতি ও প্রশাসনিক দুর্বলতার বলি না হয়, তা নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন সংকট নতুন নয়। কিন্তু এভাবে দীর্ঘদিন ধরে স্থবির পরিস্থিতি বিরাজ করা কোনো পক্ষের জন্যই সুফল দেয় না। তা ছাড়া এর ফলে প্রাতিষ্ঠানিক সুনামও ক্ষুণ্ন হয়। যাহোক, এখন সংকট কত দ্রুত নিরসন করা যায়, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টারা এ বিষয়ে বিশেষ নজর দেবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোগান্তি সীমাহীন, টনক নড়ছে না সরকারের
  • যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের প্রতিক্রিয়া অগ্রহণযোগ্য: ট্রাম্পের বিশেষ দূত
  • সংকট সমাধানে আর কত অপেক্ষা
  • একটি দল ছাড়া কোনো দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না, তা সঠিক নয়: গণফোরাম