সীতাকুণ্ডে একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর, আগুন
Published: 1st, June 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর পাহাড়ি গ্রামে সর্বজনীন শ্রীশ্রী মহাশ্মশান কালী ও শিবমন্দির নামে একটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মন্দিরটি জঙ্গল সলিমপুরের ২ নম্বর সমাজ এলাকায় অবস্থিত।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে মন্দির কমিটি। ঘটনার খবর পেয়ে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই ঘটনায় মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে সীতাকুণ্ড থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, মন্দিরের জায়গাটি দখলে নেওয়ার জন্য একদল দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে। পুলিশ তাদের চিহ্নিত করেছে। আরও তদন্ত করে বিষয়টি নিশ্চিত হলে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
মন্দির কমিটির সভাপতি অমর মজুমদার বলেন, মন্দিরটি টিনশেডের তৈরি। ভেতরে কালী প্রতিমা ছিল। দুর্বৃত্তরা প্রতিমাটিকে মন্দির থেকে বের করে পাশের জমিতে ফেলে ভেঙে দেয়। পরে মন্দিরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। আজ রোববার সকালে তাঁরা ঘটনাস্থলে গেলে মন্দিরটি আগুনে পুড়ে ছাই অবস্থায় দেখেন। পরে তাঁরা পুলিশকে খবর দেন।
অমর মজুমদার বলেন, তাঁদের এলাকার হিন্দুদের সঙ্গে কারও বিরোধ নেই। মূলত মন্দিরের জায়গাটি দখলের জন্য একদল দুর্বৃত্ত সেটি পুড়িয়ে দিয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।
ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মন্দিরের জায়গা দখলের জন্য ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। তাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিছু লোককে চিহ্নিত করেছেন। আরও অধিকতর তদন্ত করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস