বিনিয়োগবান্ধব হতে হবে ব্যাংকঋণের সুদহার
Published: 1st, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট এখন ঘোষণার অপেক্ষায়। বাজেটে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য কী সুবিধা থাকছে, তা দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা। সব সময় দেখি বাজেটে বড় উদ্যোক্তাদের যেভাবে নীতিসহায়তা দেওয়া হয়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সেভাবে সুবিধা পাননি। বিশেষ করে মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য নীতি-সহায়তা খুব কম দেখতে পাই।
বর্তমানে ব্যাংকঋণের সুদের হার ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এত বিপুল পরিমাণ সুদে বিনিয়োগ করে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা কঠিন। সুদের হার বিনিয়োগবান্ধব হওয়া উচিত। আবার গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সুবিধা যেন নিরবচ্ছিন্ন থাকে, সে বিষয়ে বাজেটে দিকনির্দেশনা চাই।
আমার চাওয়া, বাজেটে মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য নীতিসহায়তা দেওয়া হোক। অর্থনৈতিক অঞ্চলে বড়রা কারখানা গড়ে তোলার সুযোগ পাচ্ছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের শিল্পনগরীতে প্লট–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যদিও সেখানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সেভাবে প্লট পাওয়ার নজির কম। মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সেভাবে সুবিধা নেই। তবে সরকার চাইলে সুবিধা দিতে পারে। যেমন দেশে অনেক শিল্পাঞ্চলে বহু প্লট খালি পড়ে আছে। কোনোটিতে গুদাম নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। যারা প্লট পেয়েছে, তারা ব্যাংকঋণ নিয়ে কারখানা করেনি। এ রকম নজির অনেক।
এখানে সরকার খালি প্লটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সরকার যদি নির্ধারিত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে শিল্পকারখানা গড়ার শর্ত কড়াকড়ি করে তাহলে অব্যবহৃত প্লট ফিরিয়ে নিয়ে নতুন উদ্যোক্তাদের দিতে পারে। এখন শুধু বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লক্ষ্য করে সরকার বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে কারখানা গড়ে তোলার জন্য নানা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। অথচ দেশীয় উদ্যোক্তাদের সেভাবে সুবিধা দেওয়ার ঘোষণার কথা শোনা যাচ্ছে না। আমার মনে হয়, বাজেটে এই বিষয়টিতে জোর দেওয়া দরকার।
সরকার যদি বাংলাদেশকে উৎপাদনের হাব করতে চায়, তাহলে দেশীয় উদ্যোক্তাদের নীতিসহায়তা দিতে হবে। গ্যাস-বিদ্যুতের সুবিধাসহ বিদ্যমান শিল্পাঞ্চল সংস্কার করে নতুন নতুন কারখানা গড়ে তোলার নীতিসহায়তা দরকার। তাহলে নতুন কর্মসংস্থান হবে। কারণ, অন্য খাতের তুলনায় শিল্পে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয়।
দেশে হালকা প্রকৌশল, খাদ্যপণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পসহ ছোট অনেক সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে। এসব খাতকে প্রণোদনা দিয়ে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তা ভাবা দরকার। প্রয়োজনে খাতভিত্তিক ছোট ছোট শিল্পনগরীর অবকাঠামো গড়ে তুলতে উদ্যোক্তাদের বরাদ্দ দিতে পারে সরকার। তাহলে বাংলাদেশ উৎপাদনের হাব হতে পারে।
জসীম আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আর জে এম ফুটওয়্যার
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ