Samakal:
2025-11-03@11:16:52 GMT

কোরবানির জন্য কোন গরু কিনবেন

Published: 1st, June 2025 GMT

কোরবানির জন্য কোন গরু কিনবেন

আসছে ৭ জুন দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদের মূল আকর্ষণ হলো চতুষ্পদ জন্তু কোরবানি দেওয়া। এককভাবে অনেকেই ছাগল কোরবানি দেন, তবে যৌথভাবে কোরবানির ক্ষেত্রে গরু সবার প্রথম পছন্দ। দেশে সাধারণত তিন ধরনের গরু দেখা যায়– দেশি, প্রিমিয়াম বা আঞ্চলিক ও শাহিওয়াল ক্রস। গরুর ধরন যাই হোক, যদি গরুটির মুখের নিচের চোয়ালে দুধদাঁতের পাশাপাশি দেখতে কোদালের মতো ২টি স্থায়ী দাঁত থাকে, যা ‘ইনসিসর’ দাঁত নামে অধিক পরিচিত, তবে সেই গরু কোরবানির জন্য যথার্থ। পাশাপাশি ক্রয়ের আগে গরুটির শিংয়ের গোড়া দেখতে হবে। যদি শিংয়ের গোড়া মোটা হয় তবে তা কোরবানির জন্য উপযুক্ত। মনে রাখতে হবে, কিছু গরু দেখতে বড়সড় মনে হলেও যদি ‘ইনসিসর’ দাঁত না গজায় বা শিংয়ের কাঠামো চিকন ও লম্বা থাকে, তবে তা কোনো অবস্থায় কোরবানির জন্য কেনা যাবে না। 

কোন গরুটি দেশি, আঞ্চলিক বা শাহিওয়াল ক্রস? দেশি গরু যে কোনো রঙের হতে পারে। আঞ্চলিক জাত হিসেবে মুন্সীগঞ্জের ‘মিরকাদিম’ (সাদা রং), পাবনা ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের ‘পাবনা ক্যাটল’ (সাদা বা ছাই রঙের), বগুড়ার সারিয়াকান্দির ‘নর্দান ব্ল্যাক গ্রে’ (ধূসর কালো বা ছাইরঙা), চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির রেড চিটাগং ক্যাটল (লাল রং), মোহনগঞ্জ হাওর অঞ্চলের ব্ল্যাক ক্যাটল (কালো রং) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 
দেশি বা আঞ্চলিক জাতগুলোর দুই দাঁতের একটি ষাঁড় গরুর লাইভ ওয়েট বা জীবন্ত ওজন ২০০ থেকে ৬০০ কেজি পর্যন্ত ওঠানামা করে। তাই অনেকেই দেশি বা শাহিওয়াল ক্রসের ভেতর সংশয়ে পড়তে পারেন। গ্রামের বাজারগুলোয় দেশি ছোট বা মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। দেশি বা প্রিমিয়াম গরু চিনবেন কীভাবে? দেশি বা প্রিমিয়াম গরুর কান ছোট, মাথা ছোট, কপাল সমান, পা তুলনামূলক ছোট, গলকম্বল নেই বললেই চলে (থাকলেও সামান্য), বডি কম্প্যাক্ট ও স্কয়ার লুক এবং নাভাল ফ্ল্যাপ বা ঝুলানো নাভি নেই। শাহিওয়াল ক্রস গরু চেনার উপায়– এসব গরুর কান বড়, মাথা বড়, কপাল একটু কার্ভ, গলকম্বল বড়, পেট বড়, ঝুলানো নাভি অনেক দূর থেকে দেখা যাবে এবং চামড়া বেশ মোটা।

আমাদের দেশে শাহিওয়ালের সঙ্গে ক্রস হয়েছে এমন গরু কোরবানিতে ক্রস গরু হিসেবে বেশি বেচাকেনা হয়। এসব গরু বাদামি সাদা রঙের হয়ে থাকে, যার দৈহিক ওজন ৫০০-৭০০ কেজি পর্যন্ত। এসব ক্রস গরুর চাহিদা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও চিটাগংয়ে বেশি। গরুগুলোর খাবার উপাদান ও মোটাতাজাকরণ কৌশলের ওপর নির্ভর করে কী পরিমাণ মাংস পাওয়া যাবে। দেখা যায়, দেশি গরু শুকনা খড় ও সবুজ ঘাস বা সাইলেজের ওপর নির্ভর করে লালনপালন করা হয় বিধায় এদের মাংসে চর্বি থাকে না। ফলে ছোট সাইজের কোরবানিযোগ্য একটি খাঁটি দেশি গরু তার দৈহিক ওজনের মাত্র ৫২ শতাংশ মাংস দিতে সক্ষম। পাশাপাশি গরুটি যদি আঞ্চলিক জাতের হয় তবে ৫৭-৬০ শতাংশ মাংস পাওয়া যায়। কারণ এসব গরুর খাদ্যে সবুজ ঘাস ও দানাদার উপাদান থাকে এবং তাদের ৪-৬ মাস ফ্যাটেনিং করা হয়। 
উল্লেখ্য, প্রিমিয়াম গরুর ফ্যাটেনিং সময়ে দানাদার খাদ্য ২৫  শতাংশের বেশি দেওয়া হয় না। তবে শাহিওয়াল ক্রস গরুর দৈহিক আকার বেশি হওয়ায় তাদের ফ্যাটেনিং করানো হয় ৫০:৫০। অর্থাৎ সবুজ ও দানাদার খাদ্য সমান সমান থাকে। এসব গরুর পেট বড় ও চামড়া মোটা হওয়ায় মাংস কম পাওয়া যায়। যেমন ৫৫ শতাংশের বেশি মাংস পাওয়া দুষ্কর। প্রতিবছর বাজারে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার গরুর চাহিদা বেশি। কারণ জনপ্রতি ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে সাতজন মিলে গরু কোরবানি দিলে ১৫ থেকে ২২ কেজি মাংস ভাগে পায়। অন্যদিকে ক্রস গরু কোরবানি দিলে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয় এবং এক মণ থেকে দেড় মণ মাংস পাওয়া যায়।

জেনে রাখবেন, গরুর ফ্যাটেনিং সময়ে অনেক খামারি কৃত্রিমভাবে মোটাতাজাকরণে ব্যবহৃত নিষিদ্ধ ভেটেরিনারি ড্রাগ যেমন স্টেরয়েডাল গ্রোথ হরমোন বা ইনজেকশন দিয়ে থাকে। স্টেরয়েড প্রয়োগ করে গরু মোটাতাজা করলে গরুর প্রস্রাব বন্ধ হয়ে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে যায়। ফলে শরীর অতিরিক্ত ফাঁপা মনে হয়। তাই আঙুল দিয়ে গরুর শরীরে চাপ দিলে দেবে গিয়ে গর্ত হয়ে যায় এবং সেই গর্তটি পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে লম্বা সময় নেয়। স্বাভাবিকভাবে মোটাতাজা করা গরুর ক্ষেত্রে ওপরের কোনো লক্ষণই পরিলক্ষিত হবে না।
আশার কথা, খাঁটি দেশি গরুর জেনেটিক মেকআপ এমন যে, এদের কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ ড্রাগ প্রয়োগ করে হৃষ্টপুষ্ট করে বেশি লাভবান হওয়া যায় না। তবে আঞ্চলিক ও শাহিওয়াল ক্রস গরুগুলোর বেলায় লাভ বেশি। তাই আসুন, সবাই সাধ ও সাধ্যের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে কোরবানির জন্য উপযুক্ত বয়সের সুস্থ ও সবল গরু ক্রয় করি এবং স্বাস্থ্যসম্মত মাংস ভক্ষণ করে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হই। 

ড.

মো. আবুল কালাম আজাদ: প্রফেসর অব মিট সায়েন্স, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ ল আজহ

এছাড়াও পড়ুন:

শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষা ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আব্দুল কাদির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

শাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার

শাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সাজেদুল করিম বলেন, “গুচ্ছ প্রক্রিয়া না থেকে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষকরা আজ উপাচার্যের কাছে একটা স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকতে চায় না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এককভাবে ভর্তি পরীক্ষার নেওয়ার জন্য সামনের দিকে কাজ এগোচ্ছি। অতিদ্রুত ভর্তি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি নির্ধারণ করে প্রকাশ করা হবে।”

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শাবিপ্রবি গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে। এবারো একইভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে, গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে চিঠি পেলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়।

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ