পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে ২৬ জুন থেকে। বাংলা প্রথম পত্র বিষয় দিয়ে এবারের পরীক্ষা শুরু হবে। এটি তোমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। মনে রেখো, উচ্চশিক্ষার প্রথম সোপান এইচএসসি পরীক্ষা।
এই পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তাই, এ পরীক্ষা নিয়ে টেনশন না করে ভালো জিপিএ কীভাবে অর্জন করতে পারো, তার প্রস্তুতি নাও।
পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মনের আনন্দ মিশিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করতে পারবে না, তা কিন্তু নয়। ঈদের আনন্দও করবে, সময়মতো পরীক্ষার পড়াও রিভিশন দেবে। ঈদের সময় ছুটিতে কী করবে, কী করবে না—সেটা জেনে নাও।
পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাসই সব
অনেক প্রস্তুতি, অনেক টেনশন, অনেক দুশ্চিন্তা—কোনোটাই করবে না। এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে ‘চিন্তামুক্ত’ থাকো। যদি তোমার মনে আত্মবিশ্বাস থাকে, পরীক্ষা অবশ্যই ভালো হবে। কারণ, তুমি প্রতিদিন ভালো করে পড়াশোনা করেছ, নিয়মিত ক্লাস করেছ আর প্রস্তুতি নিয়েছ। আর ঠিক এ কারণেই তোমার পরীক্ষা ভালো হবে। কোনো কিছু নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবে না। ঈদের ছুটিতে বেশ কিছু দিন পড়াশোনার কমতি হতে পারে, তা নিয়েও কোনো দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।
যা গুছিয়ে রাখবে
পরীক্ষার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যা যা তোমার দরকার, তা ঈদের পরেও কিনে গুছিয়ে নিতে সময় পাবে। এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র (কলেজ থেকে ঈদের পর বিতরণ করবে), কালো বা নীল বল পয়েন্ট কলম, পেনসিল, রাবার, স্কেল, কাটার, রাইটিং বোর্ড ইত্যাদি জিনিসপত্র পরীক্ষায় লাগবে। আরও কী কী কিনতে হবে তার একটা ‘প্রয়োজনীয় তালিকা’ তৈরি করে রাখো। হাতের কাছে তালিকা থাকলে পরীক্ষার আগে হুড়োহুড়ি করে কেনার প্রয়োজন নাই।
এবার রিভিশনের পালা
তোমার প্রতিটি বিষয়ের ‘চূড়ান্ত প্রস্তুতি’ শেষ হয়েছে। এখন শুধু ‘চূড়ান্ত রিভিশন’ দেওয়ার পালা। যে যত ভালো করে রিভিশন দিতে পারবে, পরীক্ষায় সে তত ভালো করবে। রিভিশন দেওয়ার আগে নিজে নিজে পরিকল্পনা করে নাও ঈদের ছুটিতে তুমি কীভাবে রিভিশন দেবে।
ঈদের ছুটির পর ২৬ জুন প্রথম পরীক্ষা শুরু হবে। বাংলা ১ম ও ২য় পত্র, ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্র, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি—এ ‘পাঁচটি বিষয়’ রিভিশনের প্রস্তুতি এই ঈদের ছুটিতে নিতে পারো। তাই এই কয়েকটি বিষয়ের বই হাতের কাছে রাখবে। যাতে করে একটু সুযোগ পেলে কোনো না কোনো বিষয়ের রিভিশন দিতে পারো। এতে তোমার প্রস্তুতির মাত্রা আরও বাড়বে।
নোট রাখা জরুরি
ঈদের ছুটিতে নিজের বাসায় বা দাদার বাড়ি বা নানাবাড়িতে যেতে পারো। রিভিশন দেওয়া সময় বইয়ের অনেক দরকারি তথ্য মনে পড়তে পারে, যা পরে দরকার পড়তে পারে। তাই একটা নোট খাতা তৈরি করে নেবে। যেখানে দরকারি তথ্য পরে দেখতে পারো বা পড়তে পারো বা সমাধান করে নিতে পারো।
সুস্থ থাকা দরকার
ঈদে অনেকেই বাড়ি যাবে, আনন্দ করবে বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে। তবে নিজের শরীরের প্রতি অবশ্যই যত্ন নেবে। এখন বর্ষাকাল চলছে। গরম-ঠান্ডার কারণে তোমার শরীরে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই রোদে যাবে না। বৃষ্টিতে ভিজবে না, জ্বর হতে পারে। তাই অসুস্থ হওয়া থেকে যথাসম্ভব সাবধান থাকবে।
সন্তানের প্রতি নজর দিন
মা-বাবার প্রতি, বিশেষ করে ঈদের সময় আপনার সন্তানের প্রতি নজর দিন। মনে রাখতে হবে, সন্তান এইচএসসি পরীক্ষা দেবে । তার প্রতি আপনার অনেক দায়িত্ব আছে। যেমন বেশি রাত জাগছে কি না, সময়মতো পড়তে বসছে কি না, কতটা সময় মুঠোফোন দেখছে, পরিমিত ঘুমাচ্ছে কি না, ঠিকসময়ে খাবার খাচ্ছে কি না ইত্যাদি। ঈদের সময় বেশি ঠান্ডাজাতীয় (ফ্রিজে রাখা সেমাই, পায়েস, দই, মিষ্টি, আইসক্রিম) খাবার বেশি খেতে দেবেন না। গরম-ঠান্ডাজনিত কারণে খাবারে অনিয়ম হলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাই আগে থেকেই একটু সাবধান থাকতে হবে।
লেখক: মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, ঢাকা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র প ঈদ র ছ ট ত র প রস ত ত পর ক ষ য় দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের ছুটিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬ করণীয়

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে ২৬ জুন থেকে। বাংলা প্রথম পত্র বিষয় দিয়ে এবারের পরীক্ষা শুরু হবে। এটি তোমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। মনে রেখো, উচ্চশিক্ষার প্রথম সোপান এইচএসসি পরীক্ষা।
এই পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তাই, এ পরীক্ষা নিয়ে টেনশন না করে ভালো জিপিএ কীভাবে অর্জন করতে পারো, তার প্রস্তুতি নাও।
পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মনের আনন্দ মিশিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করতে পারবে না, তা কিন্তু নয়। ঈদের আনন্দও করবে, সময়মতো পরীক্ষার পড়াও রিভিশন দেবে। ঈদের সময় ছুটিতে কী করবে, কী করবে না—সেটা জেনে নাও।
পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাসই সব
অনেক প্রস্তুতি, অনেক টেনশন, অনেক দুশ্চিন্তা—কোনোটাই করবে না। এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে ‘চিন্তামুক্ত’ থাকো। যদি তোমার মনে আত্মবিশ্বাস থাকে, পরীক্ষা অবশ্যই ভালো হবে। কারণ, তুমি প্রতিদিন ভালো করে পড়াশোনা করেছ, নিয়মিত ক্লাস করেছ আর প্রস্তুতি নিয়েছ। আর ঠিক এ কারণেই তোমার পরীক্ষা ভালো হবে। কোনো কিছু নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবে না। ঈদের ছুটিতে বেশ কিছু দিন পড়াশোনার কমতি হতে পারে, তা নিয়েও কোনো দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।
যা গুছিয়ে রাখবে
পরীক্ষার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যা যা তোমার দরকার, তা ঈদের পরেও কিনে গুছিয়ে নিতে সময় পাবে। এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র (কলেজ থেকে ঈদের পর বিতরণ করবে), কালো বা নীল বল পয়েন্ট কলম, পেনসিল, রাবার, স্কেল, কাটার, রাইটিং বোর্ড ইত্যাদি জিনিসপত্র পরীক্ষায় লাগবে। আরও কী কী কিনতে হবে তার একটা ‘প্রয়োজনীয় তালিকা’ তৈরি করে রাখো। হাতের কাছে তালিকা থাকলে পরীক্ষার আগে হুড়োহুড়ি করে কেনার প্রয়োজন নাই।
এবার রিভিশনের পালা
তোমার প্রতিটি বিষয়ের ‘চূড়ান্ত প্রস্তুতি’ শেষ হয়েছে। এখন শুধু ‘চূড়ান্ত রিভিশন’ দেওয়ার পালা। যে যত ভালো করে রিভিশন দিতে পারবে, পরীক্ষায় সে তত ভালো করবে। রিভিশন দেওয়ার আগে নিজে নিজে পরিকল্পনা করে নাও ঈদের ছুটিতে তুমি কীভাবে রিভিশন দেবে।
ঈদের ছুটির পর ২৬ জুন প্রথম পরীক্ষা শুরু হবে। বাংলা ১ম ও ২য় পত্র, ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্র, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি—এ ‘পাঁচটি বিষয়’ রিভিশনের প্রস্তুতি এই ঈদের ছুটিতে নিতে পারো। তাই এই কয়েকটি বিষয়ের বই হাতের কাছে রাখবে। যাতে করে একটু সুযোগ পেলে কোনো না কোনো বিষয়ের রিভিশন দিতে পারো। এতে তোমার প্রস্তুতির মাত্রা আরও বাড়বে।
নোট রাখা জরুরি
ঈদের ছুটিতে নিজের বাসায় বা দাদার বাড়ি বা নানাবাড়িতে যেতে পারো। রিভিশন দেওয়া সময় বইয়ের অনেক দরকারি তথ্য মনে পড়তে পারে, যা পরে দরকার পড়তে পারে। তাই একটা নোট খাতা তৈরি করে নেবে। যেখানে দরকারি তথ্য পরে দেখতে পারো বা পড়তে পারো বা সমাধান করে নিতে পারো।
সুস্থ থাকা দরকার
ঈদে অনেকেই বাড়ি যাবে, আনন্দ করবে বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে। তবে নিজের শরীরের প্রতি অবশ্যই যত্ন নেবে। এখন বর্ষাকাল চলছে। গরম-ঠান্ডার কারণে তোমার শরীরে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই রোদে যাবে না। বৃষ্টিতে ভিজবে না, জ্বর হতে পারে। তাই অসুস্থ হওয়া থেকে যথাসম্ভব সাবধান থাকবে।
সন্তানের প্রতি নজর দিন
মা-বাবার প্রতি, বিশেষ করে ঈদের সময় আপনার সন্তানের প্রতি নজর দিন। মনে রাখতে হবে, সন্তান এইচএসসি পরীক্ষা দেবে । তার প্রতি আপনার অনেক দায়িত্ব আছে। যেমন বেশি রাত জাগছে কি না, সময়মতো পড়তে বসছে কি না, কতটা সময় মুঠোফোন দেখছে, পরিমিত ঘুমাচ্ছে কি না, ঠিকসময়ে খাবার খাচ্ছে কি না ইত্যাদি। ঈদের সময় বেশি ঠান্ডাজাতীয় (ফ্রিজে রাখা সেমাই, পায়েস, দই, মিষ্টি, আইসক্রিম) খাবার বেশি খেতে দেবেন না। গরম-ঠান্ডাজনিত কারণে খাবারে অনিয়ম হলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাই আগে থেকেই একটু সাবধান থাকতে হবে।
লেখক: মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, ঢাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ