ঈদের ছুটিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬ করণীয়
Published: 4th, June 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে ২৬ জুন থেকে। বাংলা প্রথম পত্র বিষয় দিয়ে এবারের পরীক্ষা শুরু হবে। এটি তোমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। মনে রেখো, উচ্চশিক্ষার প্রথম সোপান এইচএসসি পরীক্ষা।
এই পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তাই, এ পরীক্ষা নিয়ে টেনশন না করে ভালো জিপিএ কীভাবে অর্জন করতে পারো, তার প্রস্তুতি নাও।
পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মনের আনন্দ মিশিয়ে ঈদ উদ্যাপন করতে পারবে না, তা কিন্তু নয়। ঈদের আনন্দও করবে, সময়মতো পরীক্ষার পড়াও রিভিশন দেবে। ঈদের সময় ছুটিতে কী করবে, কী করবে না—সেটা জেনে নাও।
পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাসই সব
অনেক প্রস্তুতি, অনেক টেনশন, অনেক দুশ্চিন্তা—কোনোটাই করবে না। এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে ‘চিন্তামুক্ত’ থাকো। যদি তোমার মনে আত্মবিশ্বাস থাকে, পরীক্ষা অবশ্যই ভালো হবে। কারণ, তুমি প্রতিদিন ভালো করে পড়াশোনা করেছ, নিয়মিত ক্লাস করেছ আর প্রস্তুতি নিয়েছ। আর ঠিক এ কারণেই তোমার পরীক্ষা ভালো হবে। কোনো কিছু নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবে না। ঈদের ছুটিতে বেশ কিছু দিন পড়াশোনার কমতি হতে পারে, তা নিয়েও কোনো দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।
যা গুছিয়ে রাখবে
পরীক্ষার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যা যা তোমার দরকার, তা ঈদের পরেও কিনে গুছিয়ে নিতে সময় পাবে। এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র (কলেজ থেকে ঈদের পর বিতরণ করবে), কালো বা নীল বল পয়েন্ট কলম, পেনসিল, রাবার, স্কেল, কাটার, রাইটিং বোর্ড ইত্যাদি জিনিসপত্র পরীক্ষায় লাগবে। আরও কী কী কিনতে হবে তার একটা ‘প্রয়োজনীয় তালিকা’ তৈরি করে রাখো। হাতের কাছে তালিকা থাকলে পরীক্ষার আগে হুড়োহুড়ি করে কেনার প্রয়োজন নাই।
এবার রিভিশনের পালা
তোমার প্রতিটি বিষয়ের ‘চূড়ান্ত প্রস্তুতি’ শেষ হয়েছে। এখন শুধু ‘চূড়ান্ত রিভিশন’ দেওয়ার পালা। যে যত ভালো করে রিভিশন দিতে পারবে, পরীক্ষায় সে তত ভালো করবে। রিভিশন দেওয়ার আগে নিজে নিজে পরিকল্পনা করে নাও ঈদের ছুটিতে তুমি কীভাবে রিভিশন দেবে।
ঈদের ছুটির পর ২৬ জুন প্রথম পরীক্ষা শুরু হবে। বাংলা ১ম ও ২য় পত্র, ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্র, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি—এ ‘পাঁচটি বিষয়’ রিভিশনের প্রস্তুতি এই ঈদের ছুটিতে নিতে পারো। তাই এই কয়েকটি বিষয়ের বই হাতের কাছে রাখবে। যাতে করে একটু সুযোগ পেলে কোনো না কোনো বিষয়ের রিভিশন দিতে পারো। এতে তোমার প্রস্তুতির মাত্রা আরও বাড়বে।
নোট রাখা জরুরি
ঈদের ছুটিতে নিজের বাসায় বা দাদার বাড়ি বা নানাবাড়িতে যেতে পারো। রিভিশন দেওয়া সময় বইয়ের অনেক দরকারি তথ্য মনে পড়তে পারে, যা পরে দরকার পড়তে পারে। তাই একটা নোট খাতা তৈরি করে নেবে। যেখানে দরকারি তথ্য পরে দেখতে পারো বা পড়তে পারো বা সমাধান করে নিতে পারো।
সুস্থ থাকা দরকার
ঈদে অনেকেই বাড়ি যাবে, আনন্দ করবে বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে। তবে নিজের শরীরের প্রতি অবশ্যই যত্ন নেবে। এখন বর্ষাকাল চলছে। গরম-ঠান্ডার কারণে তোমার শরীরে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই রোদে যাবে না। বৃষ্টিতে ভিজবে না, জ্বর হতে পারে। তাই অসুস্থ হওয়া থেকে যথাসম্ভব সাবধান থাকবে।
সন্তানের প্রতি নজর দিন
মা-বাবার প্রতি, বিশেষ করে ঈদের সময় আপনার সন্তানের প্রতি নজর দিন। মনে রাখতে হবে, সন্তান এইচএসসি পরীক্ষা দেবে । তার প্রতি আপনার অনেক দায়িত্ব আছে। যেমন বেশি রাত জাগছে কি না, সময়মতো পড়তে বসছে কি না, কতটা সময় মুঠোফোন দেখছে, পরিমিত ঘুমাচ্ছে কি না, ঠিকসময়ে খাবার খাচ্ছে কি না ইত্যাদি। ঈদের সময় বেশি ঠান্ডাজাতীয় (ফ্রিজে রাখা সেমাই, পায়েস, দই, মিষ্টি, আইসক্রিম) খাবার বেশি খেতে দেবেন না। গরম-ঠান্ডাজনিত কারণে খাবারে অনিয়ম হলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাই আগে থেকেই একটু সাবধান থাকতে হবে।
লেখক: মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র প ঈদ র ছ ট ত র প রস ত ত পর ক ষ য় দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষা: ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রে ভালো করতে হলে
এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টি সম্পূর্ণ তাত্ত্বিক হওয়ায় ভালো ফল অর্জন করতে অবশ্যই অধ্যায়ভিত্তিক মৌলিক বিষয়গুলো ভালোভাবে অধ্যয়ন করতে হবে। এ বিষয়ে ভালো ফল অর্জনের কৌশলগত বিষয়টি তোমরা নিশ্চয় জানো। এরপরও বলে রাখছি, যে করেই হোক পুরো নম্বরের উত্তর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সময় ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেহেতু সৃজনশীল অংশের জন্য সময় বরাদ্দ ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট অর্থাৎ ১৫০ মিনিট তাই জ্ঞানমূলক অংশের জন্য ২ মিনিট, অনুধাবনমূলক অংশের জন্য ৩ মিনিট, প্রয়োগমূলক অংশের জন্য ৭ মিনিট, উচ্চতর দক্ষতা অংশের জন্য ৮ মিনিট। একটি প্রশ্ন তোমাকে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট সময় নিয়ে লিখতে হবে।
বহুনির্বাচনি অংশ—
১. বহুনির্বাচনি অংশে ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য বিভিন্ন বছরের বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান করবে,
২. ভালো কলেজগুলোর নির্বাচনি প্রশ্নপত্র বহুনির্বাচনি অংশটা মনোযোগসহকারে সমাধান করা,
৩. বহুনির্বাচনি অংশের উত্তর সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করবে।
সৃজনশীল অংশ—
এইচএসসি পরীক্ষায় প্রথমে জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর আগে দেওয়াটা ভালো। পরে সময় নিয়ে উদ্দীপক নির্ভর প্রশ্ন যেমন প্রয়োগ মূলক ও উচ্চতর দক্ষতার প্রশ্নের উত্তর করাটা দেওয়াটা ভালো। এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই বুঝে লিখবে। অপ্রাসঙ্গিক কোনো ধরনের কিছু লিখবে না। নিচে দেখে নাও কোন কোন অধ্যায়ের প্রশ্নের ওপর গুরুত্ব দেবে।
আরও পড়ুনঅষ্টম শ্রেণিতে আবারও বৃত্তি পরীক্ষা ফিরছে, আছে প্রশ্নও২৮ জুলাই ২০২৫অধ্যায়-১ (ব্যবস্থাপনার ধারণা):
ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি, ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর এই দুটি বিষয় দিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন থাকতে পারে। তা ছাড়া ব্যবস্থাপনার উত্পত্তি ও ক্রমবিকাশ বহুনির্বাচনি অংশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যায়-২ (ব্যবস্থাপনা নীতি):
হেনরি ফেয়লের ১৪টি ব্যবস্থাপনার নীতিসমূহ সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষতা, ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসন দিয়েও সৃজনশীল প্রশ্ন আসতে পারে।
অধ্যায়-৩ (পরিকল্পনা প্রণয়ন):
পরিকল্পনার প্রকারভেদ, উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য, পরিকল্পনা প্রণয়নের ধাপ।
অধ্যায়-৪ (সংগঠিতকরণ):
সংগঠন কাঠামোর প্রকারভেদ ও সংগঠনের নীতিমালা সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।
অধ্যায়-৫ (কর্মী সংস্থান):
কর্মী সংগ্রহের উত্স, প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যায়-৬ (নেতৃত্ব):
নেতৃত্বের প্রকারভেদ দিয়ে সব সময় সৃজনশীল প্রশ্ন থাকে। এটি ভালোভাবে আত্মস্থ করতে হবে। আদর্শ নেতার গুণাবলি ও পরামর্শমূলক নির্দেশনা।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বাড়ছে১৪ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনজাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে তিনটি ডিপ্লোমা কোর্স, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে২৩ জুলাই ২০২৫অধ্যায়-১০ (নিয়ন্ত্রণ):
নিয়ন্ত্রণের বৈশিষ্ট্য, নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ ও নীতিমালা সৃজনশীলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সৃজনশীল অংশে ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য ক ও খ অংশের উত্তর যথাযথভাবে লেখা। অর্থাৎ সময়ক্ষেপণ না করে অতিরিক্ত কোনো কিছু না লেখা। উদ্দীপকনির্ভর প্রশ্ন ‘গ’ অংশে প্রথমে উত্তরের মূল অংশ প্রথম প্যারায় লিখতে হবে। এরপর দ্বিতীয় প্যারায় জ্ঞান অংশের ব্যাখ্যা করা এবং তৃতীয় প্যারায় উদ্দীপককে সামনে রেখে বা হাইলাইট করে উত্তর লেখা। একইভাবে ‘ঘ’ অংশের জন্য প্রথমে মূল উত্তর নির্ধারণ করতে হবে, এরপর মূল উত্তরের ব্যাখ্যা, প্রয়োগ, মূল উত্তরের পক্ষে বা বিপক্ষে যুক্তি, বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ মতামত তুলে ধরে উপস্থাপন করতে হবে।
লেখক: মোহাম্মদ মাজেদুল হক খান, সহযোগী অধ্যাপক, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা
আরও পড়ুনজার্মানির ডাড স্কলারশিপে স্নাতকোত্তর, মাসে ৯৯২ ইউরোর সঙ্গে বিমান টিকিট-বাড়িভাড়াসহ নানা সুবিধা২৮ জুলাই ২০২৫