জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাট: ছোট ও মাঝারি গরুর বিক্রি বেশি
Published: 4th, June 2025 GMT
ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে জমে উঠেছে বেচাকেনা। আজ ধোলাইপাড় হাটে ছিল ক্রেতা-বিক্রেতার সরব উপস্থিতি। বিক্রি হচ্ছে মূলত ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরু। দাম নিয়েও সন্তুষ্ট অধিকাংশ ক্রেতা।
বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর ধোলাইপাড় পশুর হাটে (সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশে) গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত এলাকা ছাড়িয়ে পাশের খোলা জায়গা, দয়াগঞ্জ, এমনকি ইট-বালু রাখার জায়গাতেও ত্রিপল টাঙিয়ে পশু রাখা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা খামারি ও ব্যবসায়ীরা এসব ছাউনির নিচে গরু বেঁধে রেখেছেন। মূল ফটকে ক্রেতাদের ভিড়; কেউ গরু কিনে হাট ছাড়ছেন, আবার কেউ পছন্দসই পশু খুঁজছেন।
মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে কোরবানির হাট: কম দামে খুশি ক্রেতা, হতাশ বিক্রেতা
কালীগঞ্জে পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাতের ১৫ টন লবণ বিতরণ
বেলা ৩টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা হাট ঘুরে দেখা যায়, শতাধিক ক্রেতা গরু কিনে হাট ছাড়ছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছোট ও মাঝারি গরু বেছে নিয়েছেন। এসব গরুর দাম ৭২ হাজার থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে।
রাজধানীর টিপু সুলতান রোডের বাসিন্দা মেসবাহ উল্লাহ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় একটি মাঝারি গরু কেনেন। তিনি বলেন, বিক্রেতা শুরুতে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা চাইছিলেন। আমি বলি দেড় লাখ। পরে দরকষাকষি করে ১ লাখ ৬০ হাজারে কিনে ফেলি। গরুটাও পছন্দ হয়েছে।
জুরাইনের বাসিন্দা হাজী আবদুস সামাদ হাট থেকে ৩০ হাজার টাকায় একটি বাদামি রঙের খাসি কেনেন। তার ভাষায়, “দামটা যেমন হওয়ার কথা, তেমনই পেয়েছি। হাটে ঢুকেই খাসিটি পছন্দ হয়, দেরি করিনি।”
বিক্রেতারা সন্তুষ্ট
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা করিম মোল্লা নামে এক গরু ব্যবসায়ী জানান, তিনি রবিবার রাতে হাটে পৌঁছান এবং মোট ৪০টি গরু এনেছেন। বুধবার বিকেল পর্যন্ত তিনি ছয়টি গরু বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে দুটি ৯৫ হাজার, দুটি ১ লাখ ৩০ হাজার, একটি ১ লাখ ৫০ হাজার এবং একটি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, এই হাটে মাঝারি গরুরই চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বড় গরুর দরকার হলে অনেকে গাবতলীর দিকে যান। তবে এখন পর্যন্ত বিক্রি মন্দ নয়।
ধোলাইপাড় পশুর হাটের ইজারাদার প্রতিনিধি মো.
তিনি আরও জানান, হাটে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত টিম গঠনের মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। হাটে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মোবাইল টয়লেট রাখা হয়েছে।
হাট এলাকায় দায়িত্বরত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এসআই মাহবুবুর রহমান বলেন, হাটে প্রবেশ ও বাহির পথ মনিটরিংয়ে আমাদের টহল টিম রয়েছে। এছাড়া ছিনতাই বা প্রতারণা ঠেকাতে সিভিলে পুলিশ সদস্যও কাজ করছেন। এখনো পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও জানান, হাট চলাকালীন সময়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। যানজট এড়াতে ট্রাফিক পুলিশকেও বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বেশ কয়েকজন খামারি ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর পশুর খাবার ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম কিছুটা বেশি হলেও তা অতিরিক্তনয়। হাটের দ যদি এভাবে বিক্রি হয়, তবে মূল ঈদের আগের দুদিনে চাপ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা/এএএম/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট ঈদ
এছাড়াও পড়ুন:
সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত
মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।
এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা
গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির।
আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।
ঢাকা/শাহীন/রফিক