ডিসেম্বরেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব, সেটাই জাতির জন্য সবচেয়ে উপযোগী: মির্জা ফখরুল
Published: 7th, June 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচনের জন্য ‘এপ্রিল মাস কোনোভাবেই উপযোগী নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং সেটাই জাতির জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে।
আজ শনিবার ঈদের দিন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি আজ বেলা সাড়ে ১১টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য দিতে যান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যে সময় (এপ্রিল মাস) নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই সময় বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য সঠিক সময় নয়। এখানে (এপ্রিল মাস) প্রচণ্ড গরম, ঝড়বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে…ওই সময় রোজার পরপরই.
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা করতে হবে রোজার মাসে, যেটা ডিফিকাল্ট হবে। আমাদের যে রিমার্কস, সেটা আমাদের স্ট্যাডিং কমিটি গতকাল রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতামত জানিয়েছে। আমরা মনে করি যে ডিসেম্বরেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং সেটাই জাতির জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে।’
২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সাপ্তাহের কোনো একটি দিন জাতীয় নির্বাচন হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে ঘোষণা দিয়েছেন, সে সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা গতকালই আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। আমাদের বরাবরই দাবি ছিল যে আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিলাম...জনগণের প্রত্যাশাও তা–ই ছিল।’
‘জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি’
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং পরে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আবদুল হালিম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, মীর নেওয়াজ আলী, আমিনুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০০৮ সালে কারাগারে যাওয়ার আগে প্রতি ঈদে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে দলের মহাসচিব স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দলের পক্ষ থেকে, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে থেকে আমি দেশবাসীকে ঈদ মোবারক জানাচ্ছি, শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই দিনে আমরা ত্যাগের মাধ্যমে সত্যকে অন্বেষণ করি এবং মহান আল্লাহ তাআলার কাছাকাছি পৌঁছাতে চাই। কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতা “কোরবানী”র একটি লাইন আছে, “ওরে হত্যা নয় আজি, সত্য-গ্রহ, শক্তির উদ-বোধন’। এই দিন (ঈদুল আজহা) সত্যিকার অর্থেই আমাদের ত্যাগ করতে শেখায়, আমাদের মানুষকে ভালোবাসতে শেখায়, আমাদের আরও মহৎ পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা দেয়।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড স ম বর ল ইসল ম র জন য আম দ র উপয গ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।