হারানো কোরবানির মহিষটি ভারত থেকে ফেরত আনলো বিজিবি
Published: 8th, June 2025 GMT
খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বাগানবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. নাজিম উদ্দিন। পবিত্র ঈদুল আজহায় কুরবানির দেওয়ার উদ্দেশে একটি মহিষ কেনেন তিনি। গতকাল ঈদের দিন সকালে অসাবধানতাবশত ছুটে যায় মহিষটি। দিনভর চেষ্টার পরও ধরা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে আতঙ্কিত হয়ে মহিষটি ছুটতে ছুটতে ফেনী নদী সাঁতরে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে।
ঘটনাটি বিজিবির বাগানবাজার বিওপির সদস্যরা জানতে পারেন। বিওপি কমান্ডার সঙ্গে সঙ্গে বিজিবির রামগড় ব্যাটালিয়নের (৪৩ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
বিএসএফ মহিষটি উদ্ধারে তাৎক্ষণিকভাবে তল্লাশি শুরু করলেও ঘন জঙ্গল ও সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নামায় মহিষটি গতকাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আজ সকাল ১১টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা আবারও মহিষটি ধরার চেষ্টা করলে ফেনী নদী পার হয়ে সীমান্ত পিলার ২২১৩/এমপির কাছ দিয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বিজিবি সদস্যরা মহিষটিকে আটক করে। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মহিষটি মালিক নাজিম উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মহিষ ফেরত পেয়ে আবেগাপ্লুত নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বিজিবির সহানুভূতিশীলতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা শুধু আমাদের কুরবানির পশুটি ফিরে পাইনি বরং আমাদের ঈদের আনন্দও ফিরে পেয়েছি। এটি শুধু একটি পশু ফেরত আনার ঘটনা নয় বরং এটি বিজিবির পক্ষ থেকে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং সীমান্তবাসীর পাশে থাকার এক অনন্য উদাহরণ।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, বিজিবি সবসময়ই মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সীমান্তবর্তী এলাকার প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকে। বিজিবির আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের এই অনন্য দৃষ্টান্ত আবারও তা প্রমাণ করল।
এ ব্যাপারে রামগড় ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক বলেন, ‘কোরবানি মুসলমানদের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি যখন এমন একটি দুর্ঘটনায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তখন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর উচিত মানবিকভাবে পাশে দাঁড়ানো। আমরা বিএসএফের সাথে সমন্বয় করে মহিষটি ফেরত আনার উদ্যোগ নেই এবং সেটি সফল হয়েছে। মহিষটিকে আজ কুরবানি করা হয়েছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক রব ন ব এসএফ ক রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ