সমু চৌধুরী কীভাবে মাজারে গেলেন বলতে পারছেন না কেউ
Published: 12th, June 2025 GMT
অভিনেতা ও নাট্যকার সমু চৌধুরী গাবগাছের নিচে মাটিতে মাদুর পেতে গামছা পরে শুয়ে আছেন। শরীরের ওপরের অংশ উন্মুক্ত। পাশেই পড়ে রয়েছে একটি পুতুল, পানির বোতল।
এমন দৃশ্য কোনো নাটক বা সিনেমার নয়। ‘বাস্তব অনেক সময় সিনেমাকেও হার মানায়’ কথাটি আবার মনে করিয়ে দিলো ঠিক এমন দৃশ্যের একটি ভিডিও। ভিডিওটি মিথ্যা নয়, মানুষটিও সত্য। আর এ কারণেই মুহূর্তেই ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনাকাঙ্খিতভাবে আলোচনায় চলে আসেন সমু চৌধুরী।
ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার মুখী শাহ্ মিসকিন মাজারের পাশে গাবগাছের নিচে সমু চৌধুরীকে শুয়ে থাকতে দেখা যায় আজ (১২ জুন) দুপুরে। স্থানীয় মামুন নামে এক যুবক সমু চৌধুরীকে চিনতে পেরে তার ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন।
মামুন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গতকাল বুধবার রাত আনুমানিক ১২টায় একটি মোটরসাইকেলে মাজারে শুধু একটা ট্রাউজার পরে আসেন সমু চৌধুরী। এ সময় তার শরীরের উপরের অংশে কাপড় ছিল না। আসার পর মোটরসাইকেল চালক ভাড়া চাইলে তাকে মারতে যান সমু চৌধুরী। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করেন।’’
‘‘এরপর রাতে এখানে কী হয়েছে আমার জানা নেই। পরে আমি আবারও দুপুরের দিকে গিয়ে দেখি মাজারের পাশেই বিশাল একটি গাবগাছের নিচে গামছা পরে ঘুমিয়ে আছেন সমু চৌধুরী। তাকে চেনার পরও নাম জানতে চাইলে তিনি নিজেই বলেছেন তার নাম সমু চৌধুরী। পরে তার কয়েকটা ছবি তুলে আমার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করি। পরে ছবিগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।’’ বলেন স্থানীয় তরুণ মামুন।
তিনি আরও বলেন, ‘‘উনাকে যেন তার পরিবারের লোকজন দ্রুত খুঁজে পায়, এ কারণে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম।’’
এদিকে ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম মাজারে যান। খবর পৌঁছায় ঢাকাস্থ অভিনয়শিল্পী সংঘের কাছে। তারা পাগলা থানায় যোগাযোগ করেন।
ফেরদৌস আলম বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে (সমু চৌধুরী) বিধ্বস্ত অবস্থায় পেয়েছে। তাকে থানায় নিয়ে আসার জন্য অনেক অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি আসবেন না। ঢাকায় উনার সহকর্মী ও পরিবারের লোকজন বিষয়টি জেনেছেন। তারা আসছেন। মাজার থেকেই তারা অভিনেতাকে ঢাকা নিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।’’
এ দিকে সংঘের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মামুন অপু বলেন, ‘‘সমু ভাইয়ের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে দ্রুত তাকে ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করছি। আপাতত তিনি নিরাপদ আছেন।”
যদিও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢাকা থেকে কেউ সমু চৌধুরীর কাছে যাননি। প্রশ্ন হলো, সমু চৌধুরী সেখানে অত রাতে মোটরসাইকেলে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় গেলেন কীভাবে এবং কী কারণে? এ প্রশ্নের উত্তর জানা যায়নি। এমনকি পুলিশও এ প্রসঙ্গে কিছু জানতে পারেনি।
‘‘সমু চৌধুরী এখানে অভিনয় করতে আসেননি। তিনি গতকাল একা একা চলে এসেছেন। আচার-আচরণে সমু চৌধুরীকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে,’’ বলেন ফেরদৌস আলম।
মিলন//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।