নব্বই দশকের শুরুতে বলিউডে পা রাখেন অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর। ১৭ বছর বয়সে রুপালি জগতে পা রেখেই দর্শক হৃদয় হরণ করেন এই অভিনেত্রী। নব্বই দশকে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেত্রীও কারিশমা।

২০০৩ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন বলিউডের অন্যতম শীর্ষ নায়িকা কারিশমা কাপুর। শুরু হয় তার নতুন অধ্যায়। তবে ২০১৬ সালে চূড়ান্ত তিক্ততার মাধ্যমে এই সংসার জীবনের ইতি টানেন তারা।

গত বৃহস্পতিবার মারা গেছেন কারিশমা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয়। ফলে আবারো আলোচনায় সঞ্জয়-কারিশমার দাম্পত্য জীবন। কেন ভেঙেছিল এই জুটির সংসার, তা নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন।

আরো পড়ুন:

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত অভিনেত্রী সানা

তারকাবহুল ‘হাউজফুল ৫’ কত টাকা আয় করল?

বলিউড লাইফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সঞ্জয় কাপুর অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের খরচ নিয়ে তার ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করতেন। এরপর কারিশমা উপলদ্ধি করতে পারেন, ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ তারকা হওয়ার কারণে সঞ্জয় তাকে বিয়ে করেছেন; যাতে কারিশমার বদৌলতে আলোচনায় থাকতে পারেন তিনি। 

দিল্লিতে সঞ্জয়ের যে সার্কেল আছে, সেখানে কারিশমাকে ব্যবহার করাই সঞ্জয়ের গোপন লক্ষ্য ছিল। কারিশমাকে ব্যবহার করে খ্যাতি কুড়ানোরও চেষ্টা করেছিলেন সঞ্জয়। পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন কারিশমা। সর্বশেষ ১১ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন বলে এ প্রতিবেদনে জানানো হয়। 

ভাইরাল এনা টক ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন কারিশমা কাপুর। এ অভিনেত্রী বলেছিলেন, “আমরা যখন হানিমুনে ছিলাম, তখন সঞ্জয় তার বন্ধুদের কাছে আমার দাম বলেছিল। এমনকি, সঞ্জয় আমাকে তার বন্ধুদের সঙ্গে রাত কাটাতে বাধ্য করেছিল। সঞ্জয় আমাকে অনেক মারধর করত, মুখে মেকআপ লাগিয়ে আঘাতের দাগ লুকাতাম। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন পুলিশে অভিযোগ করা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না।”

সঞ্জয়ের সঙ্গে মেয়ে কারিশমার বিয়ে হোক তা চাননি অভিনেতা রণধীর কাপুর। হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বরেণ্য এই অভিনেতা বলেছিলেন, “আমাদের পরিচয় সবাই জানেন। আমরা কাপুর পরিবার! টাকার জন্য কারো কাছে যাওয়ার প্রয়োজন আমাদের নেই। আমরা কেবল টাকা নয়, মেধার আশীর্বাদে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে পারি। সঞ্জয় একজন থার্ড ক্লাস মানুষ।”

অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানার পর অর্থাৎ ২০০৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী সঞ্জয়কে বিয়ে করেন কারিশমা কাপুর। এ অভিনেত্রীর প্রথম হলেও সঞ্জয়ের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। ২০০৫ সালে তাদের সংসার আলো করে জন্ম নেয় কন্যা সামাইরা। ২০১১ সালে এ দম্পতির কোলজুড়ে আসে পুত্র কিয়ান।   

২০১৪ সালে সমঝোতার মাধ্যমে ছাড়াছাড়ি জন্য মুম্বাই আদালতে আপিল করেন কারিশমা-সঞ্জয়। ২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিচ্ছেদ নিয়ে একটি চুক্তিপত্রে সাক্ষর করেন তারা। চুক্তিপত্র অনুযায়ী, এ দম্পতির দুই সন্তান সামাইরা এবং কিয়ান তাদের মা কারিশমা কাপুরের সঙ্গেই থাকছেন। তবে বাবা সঞ্জয় ইচ্ছে করলেই সন্তানদের দেখতে যাওয়ার অনুমতি পান।

২০১৬ সালে দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা প্রিয়া সাচদেবকে বিয়ে করেন সঞ্জয় কাপুর। ইন্ডিয়ান-আমেরিকা হোটেল ব্যবসায়ী বিক্রম চাটওয়ালের প্রাক্তন স্ত্রী প্রিয়া। সঞ্জয় ও প্রিয়ার প্রথম দেখা হয় নিউ ইয়র্কে। পাঁচ বছর প্রেম করে ঘরোয়াভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তারা। তবে কারিশমা কাপুর আর বিয়ে করেননি। দুই সন্তান নিয়ে এখনো একা জীবনযাপন করছেন ৫০ বছরের এই অভিনেত্রী।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন

নিলামঘর সদবিস গতকাল শুক্রবার ইতালীয় শিল্পী মরিজিও ক্যাটেলানের তৈরি সম্পূর্ণ সোনার টয়লেটটি নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেছে। এ ভাস্কর্যটির নাম ‘আমেরিকা’।

সদবিস জানিয়েছে, এ শিল্পকর্ম এটাই দেখাতে চায়, কখনো কখনো শিল্পের ‘মূল্য’ আর তার বাজারে বিক্রির ‘মূল্য’ এক নয়। এটি শুধু শিল্পকর্মই নয়, একটি পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য টয়লেটও। এ টয়লেটেরই অনুরূপ একটি সংস্করণ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদ থেকে চুরি হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।

১৮ নভেম্বর নিউইয়র্কে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। টয়লেটটির সর্বনিম্ন দর ধরা হয়েছে এর সোনার বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী। এতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ১০১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম (২২৩ পাউন্ড) খাঁটি সোনা, যার দাম এখন প্রায় ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) মার্কিন ডলার (প্রায় ১২২ কোটি টাকা)।

সদবিসের নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান ডেভিড গ্যালপারিন বলেন, ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।

ক্যাটেলান শুধু বিতর্ক সৃষ্টিকারীই নন; বরং অত্যন্ত সফল শিল্পী। তাঁর আরেকটি কাজ, ‘কমেডিয়ান’। অর্থাৎ দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা। গত বছর নিউইয়র্কের এক নিলামে ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল শিল্পকর্মটি।

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালে ক্রিস্টিস নিলামে ক্যাটেলানের আরেকটি ভাস্কর্য ‘হিম’ ১ কোটি ৭২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। ভাস্কর্যটিতে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারকে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দেখা যায়।

ক্যাটেলান নিজেই বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

মরিজিও ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।ডেভিড গ্যালপারিন, সদবিস-এর নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান

ওই সময় গুগেনহাইম ভাস্কর্যটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কারণ তিনি জাদুঘর থেকে একটি ভ্যান গঘ চিত্রকর্ম ধার নিতে চেয়েছিলেন।

২০১৯ সালে ‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হয় উইনস্টন চার্চিলের জন্মস্থান হিসেবে বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদে। কিন্তু প্রদর্শনীর কয়েক দিনের মধ্যেই একদল চোর ভবনে ঢুকে সেটি পাইপলাইন থেকে খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।

চলতি বছরের শুরুতে দুই ব্যক্তিকে ওই চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সোনার টয়লেটটি আজও উদ্ধার করা যায়নি। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, এটি সম্ভবত ভেঙে গলিয়ে ফেলা হয়েছে।

গ্যালপারিন বলেন, তিনি অনুমান করতে চান না ‘আমেরিকা’ শেষ পর্যন্ত কত দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তাঁর ভাষায়, ক্যাটেলানের ‘ডাকটেপে আটকানো কলা’ শিল্পকর্মটি যেমন ‘অমূল্য ধারণা থেকে মূল্য তৈরি করা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘আমেরিকা’ ঠিক তার উল্টো। এখানে মূল উপকরণটিই (সোনা) অত্যন্ত মূল্যবান, যা বেশির ভাগ শিল্পকর্মে থাকে না।

ক্যাটেলান বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হবে সদবিসের নতুন নিউইয়র্ক কার্যালয় ব্রয়্যার বিল্ডিংয়ে, ৮ নভেম্বর নিলাম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত। এটি একটি বাথরুমে স্থাপন করা হবে, যা দর্শকেরা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।

তবে গুগেনহাইম ও ব্লেনহাইম প্রাসাদের মতো এবার দর্শকদের টয়লেটটি ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে না। তাঁরা শুধু দেখতে পারবেন, কিন্তু ফ্লাশ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনসোনার আস্ত একটি কমোড চুরি করেছিলেন তিনি০৩ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন