ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস, অবাধে হামলার ঘোষণা ইসরায়ে
Published: 14th, June 2025 GMT
ইসরায়েল গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করেছে। পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইরানও।
ইসরায়েল তেহরানে হামলা চালিয়ে একাধিক বিমানঘাঁটি ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি করেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির এবং ইসরায়েলি বিমান বাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল টমার বার আজ শনিবার সকালে প্রকাশিত এক মূল্যায়নে বলেছেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের মাধ্যমে ‘তেহরানে হামলার পথ প্রশস্ত করা হয়েছে।’
আরো পড়ুন:
দূরদেশে তারকাদের ঈদ
মধ্যপ্রাচ্যে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ট্রাম্পের পরবর্তী পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, “পরিকল্পনা অনুসারে, বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো এবার তেহরানের লক্ষ্যবস্তুতে বড় হামলা চালানো শুরু করবে।”
গতকাল রাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো তেহরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছিল আইডিএফ। এরপর দেশটির সামারিক বাহিনীর পক্ষ থেকে নতুন এই বিবৃতি এলো।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল বলছে, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করায় দেশটির রাজধানীতে বিমান হামলার স্বাধীনতা এখন আরো বেশি।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড কর্পস পরিচালিত ফারস সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার ভোরে ইসরায়েলের দুটি প্রজেক্টাইল তেহরানের মেহরাবাদ বিমানবন্দরে আঘাত হেনেছে। ইরানি সংবাদ সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, বিমানবন্দরে আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। ইরানের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত স্থাপনাগুলোর কাছাকাছি অবস্থিত এই বিমানবন্দরটিতে যুদ্ধবিমান ও পরিবহন বিমানসহ একটি বিমান ঘাঁটি রয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় বিমানঘাঁটিতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি দাবি করেছে ইরান।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইসর য় ল ব যবস থ ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।