প্লুটো গ্রহ না বামন গ্রহ, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। গ্রহের ধরন নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন, প্লুটোর জলবায়ু সম্পর্কে জানতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এরই ধারাবাহিকতায় প্লুটোতে ধোঁয়াশার মতো ভিন্ন ধরনের জলবায়ুর খোঁজ পেয়েছেন তাঁরা। বিজ্ঞানীদের দাবি, প্লুটোর বায়ুমণ্ডলে থাকা ধোঁয়াশা বেশ অদ্ভুত। প্লুটোর জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করছে এই ধোঁয়াশা।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্লুটোর ধোঁয়াশা টাইটানের মতো। সেখানে জৈব কণার পাশাপাশি হাইড্রোকার্বন ও নাইট্রিল বরফও রয়েছে। ধোঁয়াশা প্লুটোর বায়ুমণ্ডলীয় ভারসাম্যকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এ বিষয়ে ফ্রান্সের প্যারিস অবজারভেটরির জ্যোতির্বিদ টাঙ্গুই বার্ট্রান্ড বলেন, ‘এমন ধোঁয়াশা সৌরজগতে অনন্য। একটি নতুন ধরনের জলবায়ুর খোঁজ দিচ্ছে আমাদের।’

প্লুটোকে একসময় হিমায়িত, বৈশিষ্ট্যহীন মহাজাগতিক বস্তু হিসেবে মনে করা হতো। ২০১৫ সালে নাসার নিউ হরাইজনস মহাকাশযান প্লুটোর পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় সেখানে বরফের সমভূমি ও রুক্ষ পাহাড় প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয়। এবার বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা প্লুটোর চারপাশে একটি নীল ও বহু স্তরযুক্ত ধোঁয়াশার খোঁজ পেয়েছেন। পৃষ্ঠ থেকে ৩০০ কিলোমিটারের বেশি ওপরে অবস্থান করছে এই ধোঁয়াশা।

প্লুটোর পৃষ্ঠের গঠন এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। প্লুটোর একটি পাতলা বায়ুমণ্ডল রয়েছে, যা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় জমাট বাঁধে ও গলে যায়। প্লুটোর পাঁচটি পরিচিত উপগ্রহ রয়েছে। এদের মধ্যে ক্যারন, নিক্স, হাইড্রা, কারবেরোস ও স্টাইক্সের গঠন নিয়েও বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। ২০০৬ সাল থেকে প্লুটোকে বামন গ্রহ হিসেবে পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জলব

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’

পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ