সংলাপ থেকে ওয়াকআউট করে আবার যোগ দিল গণফোরাম-সিপিবি
Published: 18th, June 2025 GMT
বৈষম্যের অভিযোগ তুলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপ থেকে ওয়াকআউট করেছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এবং ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক শাহাদাত হোসেন সেলিম। পরে আয়োজকদের আশ্বাসে তারা সংলাপে ফিরেছেন।
বুধবার (১৮ জুন) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত এ সংলাপে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমদ কথা বলতে শুরু করেন। ঠিক সে সময়ই ড.
সংলাপস্থল ত্যাগের কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর তিনজন নেতা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, অথচ আমাদের একজনকে কথা বলতেও বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা এ বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
তিনি জানান, আয়োজকরা তাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করেছেন এবং বিষয়টি নোট করেছেন বলেই তারা সংলাপে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “আমরা যখন বক্তব্য দিতে চেয়েছি, তখন আমাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ, জামায়াত নেতারা অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছিলেন। আমি বিষয়টি তুলে ধরলে একজন নেতা প্রশ্ন করেন, আপনি কতজনকে প্রতিনিধিত্ব করেন?”
তিনি বলেন, “এ ধরনের আচরণ সভার পরিপন্থী এবং সংলাপের মূল উদ্দেশ্যকে ক্ষুণ্ন করে।”
সংলাপে ঘটে যাওয়া এই অপ্রীতিকর ঘটনার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। তারা ওয়াকআউট করা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সম্মেলন কক্ষে ফিরিয়ে আনেন।
ওয়াকআউটের কিছুক্ষণ পর তিন নেতা আবারও সংলাপ কক্ষে প্রবেশ করেন এবং বৈঠকে অংশ নেন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়, ভবিষ্যতে সব অংশগ্রহণকারী দলের নেতাদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।
ঢাকা/হাসান/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে