বৈষম্যের অভিযোগ তুলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপ থেকে ওয়াকআউট করেছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এবং ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক শাহাদাত হোসেন সেলিম। পরে আয়োজকদের আশ্বাসে তারা সংলাপে ফিরেছেন।

বুধবার (১৮ জুন) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত এ সংলাপে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমদ কথা বলতে শুরু করেন। ঠিক সে সময়ই ড.

মিজানুর রহমান সংলাপস্থল ত্যাগ করেন। তার পেছন পেছন বেরিয়ে আসেন রুহিন হোসেন প্রিন্স ও শাহাদাত হোসেন সেলিম।

সংলাপস্থল ত্যাগের কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর তিনজন নেতা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, অথচ আমাদের একজনকে কথা বলতেও বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা এ বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়েছি।”

তিনি জানান, আয়োজকরা তাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করেছেন এবং বিষয়টি নোট করেছেন বলেই তারা সংলাপে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “আমরা যখন বক্তব্য দিতে চেয়েছি, তখন আমাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ, জামায়াত নেতারা অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছিলেন। আমি বিষয়টি তুলে ধরলে একজন নেতা প্রশ্ন করেন, আপনি কতজনকে প্রতিনিধিত্ব করেন?”

তিনি বলেন, “এ ধরনের আচরণ সভার পরিপন্থী এবং সংলাপের মূল উদ্দেশ্যকে ক্ষুণ্ন করে।”

সংলাপে ঘটে যাওয়া এই অপ্রীতিকর ঘটনার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। তারা ওয়াকআউট করা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সম্মেলন কক্ষে ফিরিয়ে আনেন।

ওয়াকআউটের কিছুক্ষণ পর তিন নেতা আবারও সংলাপ কক্ষে প্রবেশ করেন এবং বৈঠকে অংশ নেন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়, ভবিষ্যতে সব অংশগ্রহণকারী দলের নেতাদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশন কিংবা সরকারের ভূমিকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে: নুরু

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কিংবা সরকারের ভূমিকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে ঐকমত্য কমিশন কিংবা সরকারের ভূমিকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে কিংবা কোনো কোনো দলের প্রতি বিশেষ একটা প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এটা হলে এ সংস্কার কিংবা এই সময়ের সর্বজনীন বিষয়টা আমার মনে হয়, হারিয়ে যাবে।’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা হয়। সেই আলোচনার বিরতির সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘এখনো তো নির্বাচন হয় নাই, কাজেই ভোট ছাড়া কোন দল বড়, কোন দল ছোট, মেজরিটি পার্টি তো আপনি নির্ধারণ করতে পারেন না। সরকার যদি আগেই কোনো কোনো পার্টির প্রতি একটা দৃষ্টিভঙ্গি রাখে যে এই পার্টি বড়, এই পার্টি মেজরিটি, তাহলে তো অনেক ক্ষেত্রেই অনেকের কথার গুরুত্ব থাকে না। সে ক্ষেত্রে আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কিংবা সরকারের ভূমিকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে কিংবা কোনো কোনো দলের প্রতি বিশেষ একটা প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।’

আজকের আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অংশ না নেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গণ অধিকারের পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দেওয়া বা তাদের কেন্দ্রিক সংস্কার বা জাতীয় ঐকমত্যের আলোচনাটাকে নিয়ে যাওয়া প্রতিয়মান হওয়ার অভিযোগ জামায়াতসহ কিছু কিছু রাজনৈক দল করছে।’ তিনি বলেন, এই রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরেও গণ-আন্দোলনে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো সবার মতামতকে প্রতিয়মান করে না। রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি পেশাজীবী সংগঠনগুলো তথা সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসকদের মতামত নেওয়া দরকার।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, ‘আমরা বারবার জোর দিচ্ছি, নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখা হয়েছিল। সবাই ভালো ভালো কথা বলেছিল, লিখে দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে কেউ কথা রাখেনি। সে জায়গা থেকে আমরা বারবার গণভোটের মাধ্যমে এ সংস্কারকে বাস্তবায়ন এবং এর একটা লিগ্যাল বেসিস তৈরির জন্য আহ্বান জানিয়েছি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়েছে।

আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত রয়েছেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনসিসি গঠন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজ পদ্ধতিতে সম্মত এবি পার্টি
  • দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় পারষ্পরিক অবস্থান সম্পর্কে জানার সুযোগ হ
  • জামায়াত‌কে বে‌শি কথা বল‌তে দেওয়ায় গণ‌ফোরাম-সি‌পি‌বির সংলাপ থে‌কে ওয়াক আউট
  • ঐকমত্যের সংলাপে আবারো অংশ নিল জামায়াত
  • জামায়াতে ইসলামী আজ ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নিল
  • শুভস্য শীঘ্রম
  • সংস্কার বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার, কোনো অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না: সিপিবি
  • ঐকমত্য কমিশনের আগামীকালের আলোচনায় জামায়াত অংশ নেবে, আশা প্রেস সচিবের
  • ঐকমত্য কমিশন কিংবা সরকারের ভূমিকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে: নুরু