হত্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন আসামিরা। হাজিরা শেষে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের ঘিরে ফেলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা হয়ে দাঁড়ান আইনজীবী। জোর করে নিয়ে যেতে চাইলে আইনজীবীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় ডিবির। পরে এক আইনজীবীসহ দুই আসামিকে হেফাজতে নেয় ডিবি। বুধবার বেলা তিনটার দিকে ময়মনসিংহ আদালতপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই আইনজীবীর নাম রাসেল তালুকদার। গৌরীপুরে ২০১৮ সালের একটি হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী তিনি। মামলার আটজন আসামির সবাই জামিনে আছেন বলে তিনি জানান।

রাসেল তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, আজ শুনানি শেষে মক্কেলদের নিয়ে তিনি আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের সামনে গেলে সাদাপোশাকে ডিবি পুলিশের একটি দল আসামিদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তিনি বাধা দিয়ে বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে এভাবে নিয়ে যেতে পারে না। কিন্তু তারা কোনো কথা শোনেনি। এ সময় ধস্তাধস্তি করে তাঁকে লাঞ্ছিত করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডিবি হেফাজতে নেওয়া অন্য দুজন হলেন মো.

লিয়ন সরকার (২৫) ও তাঁর ছোট ভাই রিপন সরকার (২২)। তাঁদের বাড়ি গৌরীপুরের সিধলা ইউনিয়নের হাসনপুর গ্রামে। হত্যা মামলায় ২ নম্বর আসামি তিনি।

এদিকে আইনজীবীর সঙ্গে ডিবির ধস্তাধস্তির ঘটনায় উপস্থিত লোকজন ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, আইনজীবীর মক্কেলদের টানাহেঁচড়া করছেন সাদাপোশাকের একদল পুলিশ সদস্য। ডিবি লেখা কোটি পরা কয়েকজন সদস্যও ছিলেন। আইনজীবী বাধা দিতে চাইলে তাঁকেও কয়েকজন আটকানোর চেষ্টা করা হয়। পরে আইনজীবীকে ধরে টেনে ডিবি কার্যালয়ের দিকে নিতে দেখা যায়।

পরে ময়মনসিংহ আইনজীবী সমিতির একটি দল ডিবি কার্যালয়ে যায়। পরে আলোচনা শেষে বিকেল চারটার দিকে ডিবি হেফাজত থেকে আইনজীবীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যসচিব সৈয়দ সাদউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, একজন আসামিকে পুলিশ ধরতে চাইলে আইনজীবীর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা ও ভুল–বোঝাবুঝি হয়। পরে তাঁরা ডিবি পুলিশের কাছে গিয়ে আলোচনা করে আইনজীবীকে নিয়ে এসেছেন।

জেলা ডিবির ওসি মহিদুল ইসলাম বলেন, লিয়ন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাঁকে আটক করা হয়েছে। কোনো একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আজ ঘটনার সময় তাঁর ভাইও সঙ্গে থাকায় তাঁকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিষয়েও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘লিয়নকে ধরার সময় আইনজীবী বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় বাধ্য হয়ে আইনজীবীকেও আমাদের নিয়ে আসতে হয়েছিল। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব র স আইনজ ব ক

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে: মামুনুল হক

খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের গণভোট বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা মনে করি, জুলাই সনদের ফসল ঘরে তুলতে না পারলে বাংলার মানুষ অর্জিত স্বাধীনতা আবার হাতছাড়া করবে। পরিষ্কার ভাষায় আমরা বলে দিতে চাই, জুলাই সনদ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান করতে হবে।’

আজ শনিবার বেলা একটার দিকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সরকারি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে খেলাফত মজলিস আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মামুনুল হক বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে আপনাদের উপস্থিতি প্রমাণ করে হালুয়াঘাটের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এ দেশের আলেম সমাজ ও ইসলামপন্থীরা ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, জুলুমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। খেলাফত মজলিসের নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনার জুলুম ও নির্যাতনের টার্গেটে পরিণত হয়েছিল। আমরা ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে জীবন দিয়েছি। ২০২১ সালে আন্দোলনে জালিমের বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছি, জালিমের রক্তচক্ষুর সামনে মাথা নোয়াইনি।’

শেখ হাসিনার সমালোচনা করে মামুনুল হক বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের অন্যায়ভাবে বছরের পর বছর বন্দী রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা নির্যাতন সহ্য করেছি, তবু দেশ ও ইসলামের প্রশ্নে আমরা মাথা নত করি নাই। দেশ, স্বাধীনতা ও ইসলামের প্রশ্নে আমরা কোনো অপশক্তির সামনে মাথা নত করব না ইনশা আল্লাহ। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, এ দেশের তামাম ছাত্র-জনতার রক্তের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী, বিদেশি আধিপত্যবাদ–বিরোধী বিপ্লবের প্রতিটি অর্জন ঘরে তোলার জন্য খেলাফত মজলিস সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।’

সমাবেশে খেলাফত মজলিসের হালুয়াঘাট উপজেলা সভাপতি ও ময়মনসিংহ-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা তাইজুল ইসলাম আকন্দের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি হেদায়াতুল্লাহ হাদী, কেন্দ্রীয় বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান প্রমুখ।

পরে বেলা আড়াইটার দিকে জেলার ফুলপুর সরকারি কলেজ মাঠে পাঁচ দফা দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যহীন, ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে হলে আল্লাহ প্রদত্ত খেলাফত ছাড়া কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। যেখানে রয়েছে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের জন্য একই ব্যবস্থা। জুলাই বিপ্লব ইসলামি বিপ্লবের পূর্বাভাস ছিল। আগামীর বাংলাদেশ ইসলাম ও খেলাফতের বাংলাদেশ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আপিল বিভাগের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করলেন নেপালের প্রধান বিচারপতি
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকারযুক্ত সংবিধানই জনগণ চায়
  • খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত
  • মাহিদুল ও মজিদের সেঞ্চুরি, ৮ রানের জন্য পাননি মুমিনুল
  • মাহিদুল-মজিদের সেঞ্চুরির দিনে মুমিনুলের ৮ রানের আক্ষেপ
  • দেশজুড়ে বৃষ্টি ও তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস
  • জুলাই সনদ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে: মামুনুল হক
  • এখন দেখছি নতুন প্রতারকের জন্ম হয়েছে: কায়সার কামাল
  • ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ