ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা রাম চরণ। তার অভিনীত ‘গেম চেঞ্জার’ সিনেমা চলতি বছরের শুরুতে মুক্তি পায়। তবে বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে এটি। রাম চরণকে নিয়ে নতুন মিশন শুরু করেছেন পরিচালক বুচি বাবু সানা। 

তেলেগু ভাষার ‘পেদ্দি’ সিনেমার শুটিং এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। ট্রেনে অ্যাকশন দৃশ্যের শুটিংয়ের মাধ্যমে ক্যামেরা চালু করেন নির্মাতা। হায়দরাবাদে সিনেমাটির দৃশ্যধারণের কাজ চলছে। মাত্র শুটিং শুরু হওয়া সিনেমাটি এরই মধ্যে মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করেছে। 

সিয়াসাত ডটকম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওটিটি মার্কেটে ‘পেদ্দি’ ইতিহাস তৈরি করেছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স সিনেমাটির ডিজিটাল স্বত্ব কিনে নিয়েছে। ১০৫-১১০ কোটি রুপিতে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪৮-১৫৫ কোটি টাকা) সিনেমাটির স্বত্ব কিনে নিয়েছে নেটফ্লিক্স। তেলেগু সিনেমার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি হওয়া ডিজিটাল স্বত্বর মধ্যে এটি অন্যতম।

আশির দশকে অন্ধ্রপ্রদেশের গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠেছে ‘পেদ্দি’ সিনেমার কাহিনি। সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন রাম চরণ। শক্তিশালী এক শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য খেলাধুলার মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের একত্রিত করেন তিনি। এতে প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করছেন শ্রীদেবী কন্যা জাহ্নবী কাপুর।

তাছাড়াও সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন শিবা রাজকুমার, জগপতি বাবু, দিব্যেন্দু শর্মা প্রমুখ। সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করছেন এ.

আর. রহমান। এরই মধ্যে সিনেমাটির চারটি গানের শুটিং শেষ করেছেন নির্মাতারা। এখন হায়দরাবাদে জোর গতিতে শুটিং চলছে। খুব শিগগির সেখানে যোগ দেবেন জাহ্নবী কাপুর।

২৫০-৩০০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ‘পেদ্দি’ সিনেমা। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের ২৭ মার্চ সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা। 

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সংবাদ সম্মেলন: গাইবান্ধার সাঁওতালদের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের চেষ্টা করছে অর্ন্তবর্তী সরকারও

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের তিন ফসলি জমি নষ্ট করে কোনো মতেই ইপিজেড নির্মাণ করা যাবে না। সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের আগেই শান্তিপূর্ণ আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ফসলি জমি সাঁওতালদের ফিরিয়ে দিতে হবে। আগের সরকারের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সাঁওতালদের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের চেষ্টা করছে।

আজ সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘গাইবান্ধায় সাঁওতালদের পূর্বপুরুষের জমিতে বৈধ অধিকারের স্বীকৃতি এবং তিন ফসলি কৃষি জমি সুরক্ষার’ দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ১৩ টি সংগঠন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।

২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের আওতাধীন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে স্থানীয় সাঁওতালদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের তিনজন মারা যান। আহত হন পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন। পরে পুলিশের অভিযানে চিনিকলের জমিতে গড়ে ওঠা বসতি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করা হয়। এরপর থেকেই ওই জমি উদ্ধার এবং ফেরত পাওয়ার দাবিতে স্থানীয় সাঁওতাল ও বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন আন্দোলন করে আসছে।

আজকের লিখিত বক্তব্যে বেশ কয়েকটি দাবির কথা বলা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে গোবিন্দগঞ্জ বাগদা ফার্ম এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের আগে যথাযথ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে স্বাধীন নিরপেক্ষ সমীক্ষার মাধ্যমে প্রস্তাবিত প্রকল্পের পরিবেশগত ফলাফল (ইআইএ) এবং সামাজিক অর্থনৈতিক প্রভাব (এসআইএ) নিরূপণ করা। এ ছাড়া গোবিন্দগঞ্জ বাগদা ফার্ম এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলের ভূমি, পানি, পরিবেশ ও কৃষিতে এ প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদি ও সুদূরপ্রসারী  প্রভাব নিরূপণ করারও দাবি ওঠে।  জমি রক্ষার আন্দোলনে নিহত টমাস হেমব্রম, মঙ্গল মারডি ও রমেশ টুডু বিচার নিশ্চিত করতে আবুল কালাম আজাদসহ সকল অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান এবং নিহত ও আহতদের পরিবারকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করা হয় আজ।

সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে এএলআরডি চেয়ারপারসন ও নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশি কবির বলেন, বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে কৃষি জমি সংরক্ষণ করা জরুরি।  এ জন্য সাঁওতালদের তিন ফসলি কোনো মতেই ইপিজেড নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সাঁওতালরা পূর্ব পুরুষের জমি রক্ষার জন্য আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছে। অবিলম্বে তাদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এ ছাড়া কর্মসংস্থানের কথা বলে কৃষি জমিতেই ইপিজেড নির্মাণ সঠিক নয়। কৃষিই আমাদের কর্মসংস্থানের জোগান দেয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পাকিস্তান আমলে ইক্ষু চাষ ও চিনিকল নির্মাণের জন্য সাঁওতালদের ১৮৪২ দশমিক ৩০ একর জমি হুকুম দখল করা হয়। পরে ১৯৬২ সালে তৎকালীন সরকার এ জমি রংপুর সুগার মিলকে হস্তান্তর করে। কথা ছিল, যথাযথ কাজের জন্য এসব জমি ব্যবহার না করা হলে জমির মালিকে জমি ফেরত দেওয়া হবে। ২০০৪ সালে রংপুর সরকার মিল বন্ধ হয়ে গেলেও জমি ফেরত দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে বিগত স্বৈরাচারী আমলে এ জমিতে ইপিজেড নির্মাণের কথা বলা হয়েছিল। নানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সে প্রকল্প বন্ধ হলেও ৫ ই আগস্টের পর অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে এটি করার চেষ্টা করছে। স্থানীয় প্রশাসনের কোনো কোনো কর্মকর্তা  ইআইএ ও এসআইএ সম্পন্ন হওয়ার আগেই সেখানে বসবাসরত সাঁওতাল ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান,নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন। সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করে এএলআরডি, নিজেরা করি, টিআই-বি, ব্লাস্ট, বেলা, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন, বারসিক, নাগরিক উদ্যোগ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, এইচডিআরসি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, কাপেং ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ