‘জিয়া সাড়ে ৩ বছরে যা করে গেছেন, আমরা ৪৫ বছরেও তা পারিনি’
Published: 19th, June 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘দিনের পর দিন বা রাতের পর রাত যদি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা বলা হয়, তাহলেও তাঁর সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। মাত্র সাড়ে তিন বছরে তিনি দেশের জন্য যে কাজ করে গেছেন, আমরা ৪৫ বছরেও তা অর্জন করতে পারিনি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে আবদুল মঈন খান এ কথা বলেন। জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
বিগত সরকার ১৭ বছরে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার হয়তো চেয়েছিল জাতিকে মূর্খ করে রাখতে।
মঈন খান আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি নিয়ে পিএইচডি গবেষণা হতে পারে। তিনি যে শিক্ষানুরাগী ছিলেন, হিযবুল বাহারে মেধাবীদের নিয়ে তিনি যে সমুদ্রযাত্রায় গিয়েছিলেন, সেটা প্রমাণ করে।
সেমিনারে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশ ও মানুষের জন্য যে অবদান তৈরি করার, সেটি জিয়াউর রহমান করেছেন। মানুষকে স্বনির্ভর করতে তাঁর ছিল মহান পরিকল্পনা। উৎপাদনমুখী শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্যে তিনি নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁর শিক্ষাচিন্তা ছিল দূরদর্শী।
‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি‘ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান। এতে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন বাস্তববাদী ও ভবিষ্যৎমুখী নেতা। জাতি পুনর্গঠনের সাহসী পথপ্রদর্শক। উৎপাদনমুখী রাজনীতি ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক জিয়াউর রহমান ছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার।
সভাপতির বক্তব্যে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বলেন, ‘গত ১৭ বছরে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমন ক্রান্তিকালে আমরা প্রত্যাশা করি, আগামীর বাংলাদেশ হবে শিক্ষানির্ভর।’
সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মো.
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম সোহাগ আউয়াল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসচিব এ টি এম আবদুল বারী, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন (পাভেল), জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষ ব যবস থ ব এনপ র মঈন খ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘বৈচিত্র্য’ মূল শক্তি সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের
আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন একজন নারী প্রার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, রাকসুর ৬৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো নারী ভিপি পদে লড়ছেন। এই নারী শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে রাকসু নির্বাচনে লড়ছে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল।
২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন। রাকসুতে সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খান। এ প্যানেলে পাহাড়ি, সনাতন ধর্মাবলম্বী, নারী, কবি, সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন ক্লাব সংগঠনের পরিচিত মুখ রাখা হয়েছে। নারী ভিপি প্রার্থীসহ এই বৈচিত্র্য প্যানেলটির ‘মূল শক্তি’ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এ প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়ছেন ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাজন আল আহমেদ ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে সাবেক সমন্বয়ক মাহাইর ইসলাম।
প্যানেলের শক্তিতাসিন খান ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এই সমন্বয়ক বিভিন্ন ক্লাব-সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত আছেন। জিএস প্রার্থী রাজন বিজ্ঞান অনুষদে পরিচিত মুখ। এজিএস মাহাইর সাবেক সমন্বয়কের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে কবি ও সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিত। এ ছাড়া প্যানেলে তিনজন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্যকে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শীত কুমার ওরাং, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে অমিত তঞ্চঙ্গ্যা, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে উজ্জ্বল তঞ্চঙ্গ্যা।
শীত কুমার ওরাং একজন সংগ্রামী মানুষ। তিনি চা–শ্রমিক ছিলেন। ভালো ফুটবলার হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন গোপাল রায়। গোপাল ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ, তিনি শিল্প-সাহিত্য চর্চা করেন। প্যানেলে আরও দুজন নারী শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব করবেন। তাঁরা হলেন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে সামসাদ জাহান ও সহমহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে নাদিয়া হক। সামসাদও ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ।
এ ছাড়া এ প্যানেল থেকে সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. লাদেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে সরোয়ার জাহান, সহমিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মুনান হাওলাদার, সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে শরিফুল ইসলাম, সহবিতর্ক ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে আর রাফি সিরাজী, সহপরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে এস এম রিজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাহী সদস্য পদে লড়বেন ফেরদৌস শরিফ, ইমাম হোসাইন, হাফিজুরুল ইসলাম ও আবদুল্লাহ আল মুয়াজ।
আরও পড়ুনরাকসু নির্বাচনে বামদের প্যানেলে নারী একজন, শক্তি ‘ধারাবাহিক লড়াই’১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫অপূর্ণাঙ্গ প্যানেলরাকসুর ২৬ পদের মধ্যে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ ১৯টি পদে প্রার্থিতা দিয়েছে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে তাঁরা প্রার্থিতা দিতে পারেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাকসু নির্বাচনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তোফায়েল আহমেদ। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছে তাসিনদের প্যানেল। তোফায়েল বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটারের সভাপতি ও সায়েন্স ক্লাবের সহসভাপতি।
এ বিষয়ে তাসিন খান বলেন, ‘আমরা যেসব মতাদর্শের শিক্ষার্থীরা এক জোট হয়েছি, সে রকম মতাদর্শের কাউকে বাকি পদগুলোতে পাইনি। এ জন্য পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করতে পারিনি।’
আরও পড়ুনগান, গম্ভীরা, চিঠি—রাকসু নির্বাচনের প্রচারণায় অভিনব যত কৌশল৪ ঘণ্টা আগে