গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় এসব কমিটির অনুমোদন দেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিম। 

কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পার না হতেই উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পাওয়া রাজ তালুকদার তার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি অভিযোগ তোলেন, কমিটি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। এর আগেও তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, আর ভবিষ্যতেও থাকবেন না।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন দাবি করেছেন, ছাত্রদলের পদ পেতে রাজ তালুকদার তার কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছিলেন।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক ছাত্রদল নেতা নিহত

নিরাপদ ক্যাম্পাস ও উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি ঢাবি ছাত্রদলের

এদিকে, রাজ তালুকদারের করা পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকেই তার বক্তব্যকে স্বচ্ছ অবস্থান হিসেবে দেখলেও, কেউ কেউ ছাত্রদলের কমিটি গঠনের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রাজের এমন ফেসবুক পোস্টে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে রাজ তালুকদার লেখেন, “আসসালামু আলাইকুম, আমি রাজ তালুকদার। আজকে ডুমুরিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে আমাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। উক্ত কমিটি সম্পর্কে আমি অবগত নই। আমি আগেও কোনো রাজনীতির সঙ্গে ছিলাম না, ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ।

পোস্টের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজ তালুকদার বলেন, “কমিটি সম্পর্কে আমি কিছু জানিই না। আমি কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ছিলাম না, আর এখনো নেই। বিষয়টি ইতিমধ্যে ডুমুরিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ককে জানিয়েছি, আর ফেসবুকে পোস্ট করেছি।” 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন বলেন, “রাজ নামের ছেলেটি ছাত্রদলের কমিটিতে আসার জন্য আমার কাছে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছিলেন। হঠাৎ তার এই কর্মকাণ্ড আমাকে অবাক করেছে। হাই কমান্ডের সাথে কথা বলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ইউন য ন ছ ত রদল র ফ সব ক র জন ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভেঙে ফেলা হচ্ছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনের আদেশে ছুটি চলাকালীন সময়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশেই ভেঙে ফেলা হচ্ছে ভাস্কর্যটি।

ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছিলো বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ভবন এবং পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝামাঝি পুকুরের অংশে। 

জানা যায়, চার কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হয়। অনুষদ ভবনের সামনের পুকুরটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল ভাস্কর্যটি। তবে ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন মহল ও নতুন প্রশাসনের বিভিন্ন জনের আপত্তির কারণেই ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

ভাস্কর্যটি স্থাপন করেছিলেন দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের দায়ে অভিযুক্ত তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।

ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান তুষার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধনের অংশ হিসেবে তৈরি ‘অঞ্জলি লহ মোর’ নামক যে স্থাপনাটি, তা আজ প্রশাসনের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হচ্ছে- যা খুবই দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধনের স্থাপনাগুলোর মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।” 

তিনি আরো বলেন, “নতুন-নতুন স্থাপনার ভিড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন নান্দনিক সৌন্দর্যবর্ধনের স্থানগুলো আজকাল আর তেমন দেখা যায় না। ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত ছাড়াও অন্যভাবে এটি নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করা যেত, যা অধিক যুক্তিযুক্ত হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে হতাশ হলাম।”

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমি অবগত নই। পরিকল্পনা দপ্তর ও প্রকৌশল দপ্তর ভালো বলতে পারবে।”

প্রকৌশল দপ্তরের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে আমি অবগত না। পরিকল্পনা দপ্তর ও প্রকল্প পরিচালকের সাথে কথা বলুন।”

ভাস্কর্য ভাঙার বিষয় সম্পর্কে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “ভাস্কর্যটি বর্তমান প্রশাসন গ্রহণ করছে না। তাই এটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। উপাচার্য স্যারের পক্ষ থেকেই সিদ্ধান্ত এসেছে। এটির বিষয়ে প্রথমে ছাত্ররাই আপত্তি জানিয়েছিল। তারাই ভাঙার চেষ্টা করেছিল ৫ আগস্টের পর।”

তবে এমন কোন ধরনের আপত্তি ছাত্রদের পক্ষ থেকে জানানোর বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির। সংগঠন দুটির নেতারা জানিয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকে এমন কোন দাবি জানানো হয়নি।

উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করা ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী বলেন, “এ বিষয়ে অনেক আগেই ডিনবৃন্দ ও সবাইকে নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এটা সম্ভবত সেই সিদ্ধান্তের কারণেই হচ্ছে। তখন তো অনেকগুলো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হয়েছিল, কেউ কেউ ভাস্কর্যটি নিয়ে তীব্রভাবে আপত্তি জানিয়েছিল। ফলে ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”

ঢাকা/মিলন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভেঙে ফেলা হচ্ছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য