প্রকৃতিকে বশ করে নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য মানবসভ্যতায় বিস্ময়কর সব উদ্ভাবন দেখা যায়। রেফ্রিজারেশন বা হিমায়ন পদ্ধতি তেমনই একটি উদ্ভাবন বলা যায়। এই উদ্ভাবন মানুষের জীবনযাপন ও খাদ্য সংরক্ষণের ধারণাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির ফ্রিজ ও এসির ব্যবহার পর্যন্ত দীর্ঘ বৈজ্ঞানিক অভিযাত্রা দেখা যায়।
রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির ধারণাটি আধুনিক হলেও, খাদ্য সংরক্ষণের জন্য শীতল বস্তুর ব্যবহারের প্রবণতা মানব–ইতিহাসের প্রায় শুরু থেকেই বিদ্যমান। প্রাচীন সভ্যতায় মানুষ প্রাকৃতিকভাবে বরফ ও তুষার ব্যবহার করত খাবার ঠান্ডা রাখার জন্য। পারস্যে খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে ইয়াকচাল নামের একধরনের ঠান্ডা ঘরে মাটির নিচে বরফ সংরক্ষণ করা হতো। রোমানরা পর্বত থেকে বরফ এনে খাবার ও পানীয় ঠান্ডা রাখত বলে জানা যায়। প্রাচীন মিসরীয়রাও রাতের বেলায় পানিকে বাষ্পীভূত করে শীতল করার কৌশল ব্যবহার করত। মধ্যযুগে বরফ সংরক্ষণের কৌশল আরও উন্নত হয়। ইউরোপে বরফঘর তৈরি করে বরফ গ্রীষ্মকালের জন্য সংরক্ষণ করা হতো। বরফ সংগ্রহ তখন একটি লাভজনক ব্যবসা ছিল। ভারত ও চীনেও মাটির নিচে বরফ সংরক্ষণ ও ব্যবহারের প্রচলন ছিল। এই সময়ে লবণ ও বরফের মিশ্রণ ব্যবহার করে তাপমাত্রা কমানোর ধারণা বিকশিত হয়।
রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির আসল বিপ্লব আসে অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে। ১৭৪৮ সালে স্কটিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম কুলেন প্রথম কৃত্রিমভাবে শীতলতা তৈরির ধারণা দেন। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পরীক্ষা পরিচালনা করেন। তিনি ইথার ব্যবহার করে একটি আংশিক শূন্যস্থানে শীতলতা তৈরি করেন। এটি ছিল বাষ্পীভবনের মাধ্যমে শীতলতা তৈরির প্রথম পরীক্ষামূলক প্রমাণ ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী রেফ্রিজারেশন যন্ত্রের নমুনা তৈরি করেন।
১৯৪০–এর দশকে প্রথম ডিপ ফ্রিজের ধারণা জনপ্রিয় হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র ব যবহ র র জন য বরফ স
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তান টেস্ট দলের কোচ মাহমুদ, আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে শুরু
দীর্ঘদিনের টালমাটাল কোচিং স্টাফের অধ্যায় শেষে অবশেষে পাকিস্তান টেস্ট দলের হাল ধরছেন আজহার মাহমুদ। জাতীয় দলের এই সাবেক পেসার এবার আসছেন টেস্ট দলের হেড কোচের ভূমিকায়।
আজহার মাহমুদের নিয়োগকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) জানায়, তিনি কোচের দায়িত্ব পালন করবেন ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। তার অধীনে পাকিস্তান টেস্ট দলের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হতে যাচ্ছে চলতি বছর ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিতব্য দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ।
এর আগে ৫০ বছর বয়সী মাহমুদ ২০২৩ সালে তিন ফরম্যাটেই পাকিস্তানের সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে নানা জটিলতা শুরু হয়। মাত্র ছয় মাসেই সাদা বলের কোচ গ্যারি কারস্টেন দায়িত্ব ছেড়ে দেন। এরপর টেস্ট দলের দায়িত্ব ছাড়েন অস্ট্রেলিয়ান কোচ জেসন গিলেস্পি।
আরো পড়ুন:
মিরপুরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান তিন টি-টোয়েন্টি
মৃত্যুর সময় কাউকে পাশে পাননি পাকিস্তানী অভিনেত্রী আয়েশা খান
গিলেস্পির বিদায়ের পর অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে ছিলেন আকিব জাভেদ। তার অধীনে পাকিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দুটি টেস্ট এবং ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি টেস্ট খেলে। সেই সময়ই বোর্ডের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন আজহার মাহমুদ। একই সময়ে সীমিত ওভারের অন্তর্বর্তী কোচের ভূমিকাও সামলেছেন তিনি।
পাকিস্তান সম্প্রতি শেষ হওয়া ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে তলানিতে থেকে প্রতিযোগিতা শেষ করেছে। ১৪ ম্যাচে জয় এসেছে মাত্র ৫টিতে। টেস্ট পারফরম্যান্সের এই দুর্দশার প্রেক্ষাপটেই বোর্ডের নতুন ভরসা হয়ে এলেন আজহার মাহমুদ।
খেলোয়াড়ি জীবনেও জাতীয় দলে তার ছিল উজ্জ্বল উপস্থিতি। ১৪৩ ওয়ানডে ও ২১ টেস্টে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। এবার প্রমাণের পালা ডাগআউটে।
ঢাকা/আমিনুল