মধ্যপাড়া খনিতে শ্রমিকদের ধর্মঘটে পাথর উত্তোলন বন্ধ
Published: 3rd, July 2025 GMT
চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের কাজে বহালের দাবিতে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়া খনিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেছেন খনি শ্রমিকরা।
বুধবার (২ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে খনির প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শ্রমিকরা।
মধ্যপাড়া কঠিন শীলা খনিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিন তিন শিফটে শ্রমিকদের মাধ্যমে পাথর উত্তোলনের কাজ পরিচালনা করে আসছে। চলতি বছরের মে মাসে কর্তৃপক্ষের দেয়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাথর উত্তোলন করেন শ্রমিকরা। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ‘প্রোডাকশন প্রফিট বোনাস' না দেয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হলেও কোনো সমাধান না হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় খনির ব্লাস্টার শফিকুল ইসলাম, লং ড্রিল অপারেটর রফিকুল ইসলাম, অপারেটর ওমর আলী এবং জুনিয়র হেলপার হাসান আলীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরই প্রতিবাদে এবং প্রোডাকশন প্রফিট বোনাসের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন শ্রমিকরা।
আরো পড়ুন:
৩৪ কোটি টাকার কষ্টিপাথর উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে হস্তান্তর
আন্দোলনরত খনি শ্রমিক সোলাইমান ইসলামসহ চাকরিচ্যুত খনি শ্রমিকরা বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পাথর উত্তোলন করেছি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদের 'প্রোডাকশন প্রফিট বোনাস' দিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’’
তারা বলেন, ‘‘আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া শ্রমিকদের পুনরায় চাকরিতে বহালের দাবি জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’’
মধ্যপাড়া পাথর খনির উপ-মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ রফিজুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সকাল থেকে খনির পাথর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে পাথর বিক্রিসহ অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি আরো জানান, শ্রমিকরা সরাসরি পেট্রোবাংলার অধীনে নয়। তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করেন। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সমাধানের চেষ্টা করছে।
ঢাকা/মোসলেম/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসার অভাবে শ্রমিক মৃত্যুর অভিযোগ, বন্দরে মহাসড়ক অবরোধ
অসুস্থ শ্রমিককে ছুটি না দেওয়া, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহাসড়কের মদনপুর অংশে তারা এ অবরোধ করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিচারের আশ্বাসে এগারোটায় মহাসড়ক থেকে সরে যায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা জানান, 'লারিস ফ্যাশন' নামে একটি রপ্তানিমুখি গার্মেন্টসের নারী শ্রমিক রিনা (৩০) অসুস্থ অবস্থায় ডিউটি করে যাচ্ছিলেন। গতকাল তিনি অসুস্থতা বোধ করলে কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। তবে কর্তৃপক্ষ তার আবেদনে কোনো সাড়া না দিয়ে কাজ করে যেতে বাধ্য করেন। পরে অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে সহকর্মীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শ্রমিক রিনা কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার দুলালের মেয়ে। অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ এ মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সড়িয়ে দেন। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ও পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।