সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) সংস্কারে ১০ দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের সঙ্গে চাকরিপ্রত্যাশী ও শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ ত্যাগ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার রাজুতে অবস্থানের ঘোষণা দেন তারা।

শুক্রবার বিকেলে ‘ছাত্র সমাবেশ’ ব্যানারে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এতে আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

অবস্থানকালে আন্দোলনকারীরা ‘পিএসসির কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সংস্কার সংস্কার, পিএসসি সংস্কার' ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ ৪৪তম, ৪৫তম ও ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সরকার এসব বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তারা বিসিএস পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পূর্ণ নম্বর প্রকাশের দাবিও জানান।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী সালেহিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই পিএসসি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। আজকের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সেই দাবি আরও জোরালোভাবে উত্থাপন করা হয়েছে।

পুলিশের হামলার অভিযোগ তুলে আন্দোলনকারীরা পরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তারা দাবি করেন, শাহবাগে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ বিনা উস্কানিতে লাঠিচার্জ করে, ফলে কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন। তারা সরকারের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

এ সময় আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, পিএসসি সংস্কার আন্দোলনের ১০ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজু ভাস্কর্যে দিনরাত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প এসস শ হব গ অবস থ ন শ হব গ প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ