দরিদ্র পরিবারের হারিয়ে যাওয়া ভ্যানিটি ব্যাগে চিকিৎসার জন্য রাখা প্রায় ২ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ফিরিয়ে দিয়ে একজন অটোচালক হয়ে উঠেছেন সততার জীবন্ত প্রতীক।

জানা যায়, গত ৫ জুলাই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে আছিয়া বেগম নামের এক নারী তার অসুস্থ মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে আসেন। চিকিৎসা শেষে ক্লান্ত আছিয়া বেগম একটি অটোরিকশায় করে বাড়ির পথে রওনা হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ব্যস্ততায় তিনি একটি ভ্যানিটি ব্যাগটি অটোরিকশায় ফেলে যান। ব্যাগটিতে ছিল স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।

অটোরিকশাচালক সবুজ পরে ওই ব্যাগ দেখতে পান এবং মালিককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ পর ওই ব্যাগে থাকা মোবাইলে একটি ফোন আসলে সবুজ জানতে পারেন, এটি আছিয়া বেগমের মালিকানাধীন।

সবুজ জানান, দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর তিনি নগরকান্দা উপজেলার কৃষ্ণারডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা আছিয়া বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যাগটি সঠিকভাবে হস্তান্তর করেন।

ব্যাগ ফেরত দেওয়ার সময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন এবং অটোচালক সবুজের সততার প্রশংসা করে তাকে ধন্যবাদ জানান।

সবুজ ফরিদপুর শহরের মাওলানা আব্দুল আলী সড়কে ভাড়া বাড়িতে থাকেন।

আছিয়া বেগম তার হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণলঙ্কার ফিরে পেয়ে আনন্দ আত্মহারা হন আরেকদিকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। অটো চালক সবুজকে আশীর্বাদ করেন সততা নিয়ে বেঁচে থাকেন আজীবন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ