দেশের ক্রিকেট হঠাৎ করেই বাজার হারাচ্ছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজ বিক্রি হয়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজের টিভি সম্প্রচার স্বত্ব কিনতে চেয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান টোটাল স্পোর্টস। পাকিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠেয় টি২০ সিরিজের জন্য ভিত্তি মূল্যও দিতে চায়নি তারা। এ পরিস্থিতি দেখে হতবাক বিসিবি কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রচার স্বত্বের জন্য সাকল্যে পৌনে ৩ কোটি টাকার মতো দিতে রাজি ছিল টোটাল স্পোর্টস। যদিও টাকা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়ে টোটাল স্পোর্টসকে ই-মেইল দিয়েছিল বিসিবি। কিন্তু তারা টাকা বাড়াতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২ কোটি টাকায় দেশিয় একটি কোম্পানির কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করেছে বিসিবি। আর টোটাল স্পোর্টস আন্তর্জাতিক সম্প্রচার স্বত্ব কিনেছে ১ কোটি ২৩ লাখ টাকায়।

জাতীয় দলের সিরিজের টিভি স্বত্ব দুই বছরের জন্য বিক্রি করতে চেয়েছিল বিসিবি। যেখানে পাকিস্তান ছাড়াও ভারতের বিপক্ষে তিনটি করে টি২০ আর ওয়ানডে ম্যাচ ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপোড়নের কারণে ভারত ২০২৫ সালের আগস্টের পরিবর্তে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসবে বলে জানিয়েছে। এ বাস্তবতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজটি আলাদা করে বিক্রির উদ্যোগ নেয় ক্রিকেট বোর্ড। 

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হলে শুধু টোটাল স্পোর্টস বিডে অংশগ্রহণ করে। দেশের একমাত্র স্পোর্টস চ্যানেল টি-স্পোর্টস বা কনসোর্টিয়াম সিরিজটি কিনতে আগ্রহ দেখায়নি। এতে পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ বিক্রি থেকে আয়ের সুযোগ দেখছে না বিসিবি। ফলে বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে হাঁটতে হয় বিসিবিকে। এতে সিন্ডিকেট পরোক্ষে লাভবান হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, ‘যেহেতু বিডে ভিত্তি মূল্যও পাওয়া যায়নি, তাই সেটাকে বাতিল করে যে প্রতিষ্ঠাগুলো ফরম নিয়েছিল, আলোচনার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে ভালো টাকা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিসিবির আইনজীবী আইনগত দিকটি দেখছেন। আশা করি, ভালো টাকা পাওয়া যাবে।’

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রচার আলাদা করে বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিল বিসিবি। দেশের ভেতরে স্বত্ব ৪ কোটি টাকা ভিত্তি মূল্য ছিল। আর আন্তর্জাতিক বাজার মিলিয়ে পৌনে ৮ কোটি টাকা ন্যূনতম মূল্যে সিরিজটি বিক্রি করতে চেয়েছিল বিসিবি।

জানা গেছে, খোদ পাকিস্তানি চ্যানেলও ভিত্তি মূল্য দিতে রাজি হয়নি। সেখানে টোটাল স্পোর্টস জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্যাকেজের জন্য পৌনে ৩ কোটি টাকা দিতে চেয়েছে। বিসিবি কর্মকর্তারা জানান, এ টাকায় টিভি প্রডাকশন খরচও হবে না। সে কারণে বিকল্প পথের খোঁজ করা হচ্ছে।

জাতীয় দলের সিরিজ কিনতে দেশের টিভি চ্যানেলগুলো কেন অনিচ্ছুক– জানতে চাওয়া হলে নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মালিক পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘প্রথমত, তারকাশূন্য হয়ে পড়েছে জাতীয় দল। দ্বিতীয়ত, সম্প্রতি দেশে-বিদেশে ম্যাচ জিততে পারছেন না লিটন কুমার দাসরা। এ ছাড়া দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীল না থাকা ক্রিকেটের বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে।’

বিসিবি আন্তর্জাতিক মার্কেটিং এজেন্সি দিয়ে টিভি স্বত্বের আর্থিক বাজার পর্যালোচনা করে প্রস্তাবনা দিলেও তাতে নির্ভর করেনি বোর্ড। প্রস্তাবিত মূল্যের চেয়ে অনেক কমে খেলা বিক্রি করতে রাজি হয়েও গ্রাহক পাচ্ছে না বিসিবি, দেশের ক্রিকেটের জন্য যেটা দুশ্চিন্তার কারণ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট ২০ স র জ ট ট ল স প র টস র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের

তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের ওপর বিশ্ববরেণ্য ইসলামী বক্তা ড. জাকির নায়েককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট ডিগ্রি’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।

সোমবার (৩ নভেম্বর) এ দাবিতে ঢাবি উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ তথা জানান তারা।

আরো পড়ুন:

বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু

ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ড. জাকির নায়েক একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইসলামী চিন্তাবিদ ও মানবতাবাদী সংগঠক। তিনি শুধু ইসলাম প্রচারই করেননি, বরং মানবকল্যাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ইউনাইটেড এইড’ নামের সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো শিক্ষার্থী বৃত্তি ও সহযোগিতা পাচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি বিশ্বমঞ্চে মানবতার প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।

তারা বলেন, ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকারের ষড়যন্ত্রে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হলেও মালয়েশিয়া তাকে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে গ্রহণ করেছে। এমন একজন মানবতাবাদী ও জ্ঞানচর্চার প্রতীক ব্যক্তিত্বকে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করে, তাহলে তা দেশের মর্যাদাকে আরো উজ্জ্বল করবে।

এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে ড. জাকির নায়েককে ডিগ্রি প্রদান করে দাবি জানান।

এছাড়া তারা ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি ক্রমবর্ধমান বুলিং, হ্যারাসমেন্ট ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জ্ঞানচর্চার স্থানে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণ ও অনলাইন বুলিং উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। আমরা উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় জেনেছি, ইতোমধ্যেই হ্যারাসমেন্ট ও সাইবার ট্যাগিং প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এসব কমিটি দ্রুত কার্যকর করতে হবে, যাতে অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসে।
 

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ