নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকা থেকে ‘নৌকা’ বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বলেছে, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় তাদের দলীয় প্রতীক নৌকা তালিকায় থাকার কোনো সুযোগ নেই। একই সঙ্গে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়া না হলে রাজনৈতিক লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির নেতারা।

রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এনসিপির নেতারা। এ সময় এনপিপির যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়ার ব্যাপারে তারা ইসিতে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবেদনটি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ সময় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, দলীয় প্রতীক হিসেবে এনসিপির শাপলা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই। যদি বাধা দেওয়া হয় তাহলে আমরা রাজনৈতিকভাবে লড়াই করব।

এক প্রশ্নের জবাবে নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে। ইসি এখন একটি দলের মুখপাত্র হয়ে কাজ করছে। এ ইসিতে যারা ভালো কাজ করছেন তাদের রেখে নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাচন ভবনে যান এনসিপির পাঁচ সদস্যের দল। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে ১১টার দিকে এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি বৈঠকে বসেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধনের লক্ষ্যে প্রতীকের তফসিলে শাপলা ছাড়াই ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি, যা ওইদিনই আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠায়। ইসির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এনসিপি।

২২ জুন এনসিপি নিবন্ধন আবেদন দাখিলের সময় শাপলা প্রতীক চায়। আবার মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য ১৭ এপ্রিল একই প্রতীক চায়। এছাড়া দুটি দলই শাপলা নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও করে ইসির সঙ্গে। শাপলা নিয়ে এই পাল্টাপাল্টি দাবির মধ্যেই প্রতীকটি তফসিল অন্তর্ভুক্তই করেনি ইসি।

বর্তমানে ৫০টি দল নিবন্ধিত দল আছে। বাকি প্রতীকগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থী ও অন্যান্য নতুন দলগুলোকে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য ন গর ক প র ট এনস প আওয ম ল গ এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ