গোপালগঞ্জের ঘটনায় সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করবে: সেতু উপদেষ্টা
Published: 22nd, July 2025 GMT
গোপালগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে সহিংস ঘটনার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, “সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সহিংস ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, কেবল তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, নিরীহ কাউকে হয়রানী করা হবে না।”
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে ক্ষতিগ্রস্থ স্থাপনা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রেস বিফিং-এ তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সড়ক পথে বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে সঙ্গে নিয়ে গোপালগঞ্জ সার্কিট হাউজে পৌঁছান সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সেখানে দুই উপদেষ্টাকে দেয়া হয় গার্ড অব অনার।
আরো পড়ুন:
চলতি মাসেই খুলতে পারে চিলমারী-হরিপুর ব্রিজ
বৌলতলী সেতু পাল্টে দিচ্ছে ২০ গ্রামের চিত্র
এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় জেলা কারাগার, জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ, এনসিপির সভাস্থল, পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের বাসভবন পরিদর্শন করেন তারা। এ সময় উপদেষ্টারা কিভাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়, তার বর্ণনা শোনেন।
পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আইন-শৃংখলা রক্ষকারী বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বেলা ২টায় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
এ সময় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে, এমন ঘটনা আর হতে দেওয়া যাবে না। আমরা এ ঘটনার গভীরে যেতে চাই। এ ঘটনা যাতে আর না হয়, এজন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের।”
তিনি বলেন, “একজন বিচারপতির নেতৃত্বে এ কমিশন গঠন করা হবে। এ কমিশনে সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও সমাজের সুশীল কর্মকর্তারাও থাকবে। এ কমিশন ২-১ দিনের মধ্যে গঠন হয়ে যাবে। যারা নিরপেক্ষ তদন্ত করেন, তারা এই তদন্ত কমিশনকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন। আমরা তাদের কাছ থেকে জানতে পারব, কি হয়েছিল, কেন হয়েছিলো, কি করলে এটা এড়ানো যেত এবং আগামীতে আমরা কিভাবে রোধ করতে পারি।”
তিনি আরো বলেন, “এখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, এই ধরনের ঘটনা ঘটবে সেটা তারা বুঝতে পেরেছিলেন। তবে তার ব্যাপকতা এই পরিমাণ হবে, তা তারা বুঝতে পারেননি। তবে তারা তাদের সীমিত সক্ষমতা দিয়ে সবাই মিলে সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সাংবাদিকরাও আহত হয়েছেন।”
সেতু উপদেষ্টা বলেন, “অন্তর্বতী সরকার একটি দল নিরেপেক্ষ সরকার। এটা শহীদদের রক্তের উপর গঠিত ২০/৩০ হাজার আহতদের আত্মত্যাগের সরকার। গোপালগঞ্জও আমাদের কাছে যা, আমাদের প্রত্যেকের নিজের জেলাও তাই, প্রধান উপদেষ্টা সেই বার্তাটা দিয়েছেন। গোপালগঞ্জের সহিংস ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, কেবল তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরীহ কাউকে যাতে হয়রানী করা না হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “আগামী নির্বাচন আমরা সুন্দর ও নিরপেক্ষভাবে করতে চাই। সেখানে মানুষ নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার গণতন্ত্রের চর্চা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। আগে গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি, বিরোধী মত হলেই দমন করা হয়েছে, আয়না ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, নানা রকম শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন চাচ্ছি, সেই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে।”
এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড.
গত ১৬ জুলই এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিতে পাঁচজন নিহত হন ও বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর করা হয়।
ঢাকা/বাদল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ প লগঞ জ কর মকর ত উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী
অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।
পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।
পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।
ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।