গ্রামের নাম বাঘময়না! প্রথম দিন এ কথা শুনে চমকে গেছিলাম। দূর অতীত থেকে একঝলক আলো ও সুগন্ধ এসে আমাকে আনমনা করেছিল। সেই থেকে হঠাৎ হঠাৎ কোনো অলস মুহূর্তে একটা আবেগ আমার বুকে ঘন হয়ে ওঠে। কত কত প্রজন্ম, শত শত বছর আর টলটলা পানির সীমাহীন ধু ধু পৃথিবী চোখের সামনে ভেসে থাকে! তার মধ্যখানে কালো একটা দ্বীপ। ছোট্ট গ্রাম বাঘময়না। তারও আগে হিজল-জারুল-বরুনের ঘন জঙ্গল ছিল আর ছিল সাপ-শিয়াল-মেছোবাঘের রাজত্ব। উজানের পাহাড়ে লাগাতার বৃষ্টি হলে উৎসব ভাতার মতো বন্যার তোড়ে ভেসে আসত ২/১টা টিক্কাপড়া বাঘ কিংবা সাত-আট হাত লম্বা রয়েল বেঙ্গল টাইগার!
গ্রামের এই–এই দানব টাইপ পুরুষেরা সড়কি-বল্লম আর বিষবাঁশের লাঠি নিয়ে বাঘের মুখোমুখি হতো। তখন কয়জন পুরুষ ছিল বাঘময়নাতে? ২০-২২টা পরিবার। গ্রামপ্রধান ছিলেন ময়না মিয়া। হাওরে শত শত বিঘা জমি। এই মোটা গোঁফের গোছা, গোল গোল লাল চোখ, গব্দাগাব্দা হাত-পায়ের মানুষটা জোরে ডাক মারলে আশপাশের বিড়াল-কুকুর ভয়ে দৌড় মারত আর সাহস-শক্তিতে তিনি ছিলেন মহাবীর রামচন্দ্র। তাঁর নেতৃত্বেই দিনের বেলায় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা বাঘকে ঘিরে ফেলা হতো কুড়ি মণ ওজন আর আধমাইল লম্বা দড়ির জাল দিয়ে। দিন-রাত পালা করে চলত পাহারা। এই–এই মরদ একেকজন। বোয়াল মাছের একবোল ভুনা সালুন দিয়ে দুই সের বিরন চালের ভাত কয়েক খাবলায় খেয়ে ফেলত। তাদের মাথার বাবরি, গোঁফের জৌলুশ আর হাঁকডাক শুনে বন্দী বাঘ জালের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ত। তখন সবাইকে পেছনে রেখে লাঠি নিয়ে বাঘের সামনে দাঁড়াতেন ময়না মিয়া।
ভূগোল ও ইতিহাসের পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা দেখতে দেখতে বর্তমানের দিকে তাকিয়ে দেখি হাওর নাই; রানি মাছ-আইড় মাছ, বাঁশের মতো মোটা মোটা বাইন মাছ দেখি না কত বছর! ডাহুক-কুড়াপক্ষীরাও বিপন্ন। বিপুল জনসংখ্যার চাপে হাওর এখন বর্ষায় বড় বড় বিল আর শীতে সবুজ মাঠ! সিমেন্টে ঢালাই করা রাস্তা আর বিদ্যুতের তার শিরা-উপশিরার মতো ছড়িয়ে পড়েছে হাওরের অঙ্গে অঙ্গে। হাওর নামে সুনামগঞ্জে যে বিস্ময়কর ঐশ্বর্য ছিল, আজ লুপ্তপ্রায়!
দীর্ঘশ্বাস শুনে কানের কাছে ভূগোলের শিক্ষক আমাদের প্রিয় বিমল স্যার যেন পড়াতে শুরু করেন, সৃষ্টির পর থেকেই পৃথিবীর ভূমিক্ষয় শুরু হয়েছে। নদী ভরাট হতে হতে নালা আর পর্বত গলতে গলতে টিলা এবং আধুনিক সভ্যতা সেই ধ্বংস কিংবা রূপান্তরকে করছে শুধু বেগবান। ক্ষয়-ধ্বংস-বিলয় ও সৃষ্টি রহস্যময়ী প্রকৃতির ধর্ম।
একদিন রানিগঞ্জের বাউল সাবুল শাহর কাছে কথাটা বললাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বাঘময়না দেখতে যাইবেন?’
‘হ;’ বলে আমি উৎসাহের চোখে বাউলের দিকে তাকাই।
‘আজকু মাছ মারা নাই, তাইলে চলুক্কা.
মাত্র চার-পাঁচ কিলোমিটার পথ! আমরা ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে হাঁটতে শুরু করি। রাস্তার দুই পাশেই হাওরের পানি, কচুরিপানা, হঠাৎ হঠাৎ বাড়িঘর, ঝোপঝাড়, খাল-ডোবা... হাঁটুপানিতে শিশুরা মাছ ধরছে। মাথার ওপর আষাঢ়ের মেঘ-রোদের ছলচাতুরি। বাতাসে পানি-সাপ-ব্যাঙ আর কলমিপাতার গন্ধ! মনে আজব ভাব। মাঝেমধ্যে আষাঢ় মাসের আমছি (কুয়াশার মতো মিহি বৃষ্টি) আসে। আমরা পাত্তা দিই না। আঁকাবাঁকা পাকা পথ। হঠাৎ হঠাৎ ইজিবাইক শাঁ করে আমাদের পেছনে ফেলে বাঘময়নার দিকে ছুটে যায়। জিনস প্যান্ট আর গেঞ্জি গায়ে কালো কালো পোলাপান আনাগোনা করে। কেউ কেউ হাঁ করে আমার গোঁফের দিকে তাকিয়ে থাকে। পরস্পর কানাকানি করে। আমি উপভোগ করি।
অধিকাংশই টিনশেড দালান। আম-জাম, হিজল-জারুল আর ইউক্যালিপ্টাসে ছাওয়া ছোট ছোট পাড়া, বাড়ির আশপাশে নোংরা–আবর্জনা, পলিথিন-প্লাস্টিকের জঞ্জাল পানিতে ভাসছে। এই সবের মধ্যে হঠাৎ হঠাৎ গোতুম মাছের মতো চকচকে কালো চামড়ার এক-দুইজন কালো শশী চোখে পড়ে। হাওরদেশে ফরসা মানুষ বিরল। রঙিন সালোয়ার-কামিজ, বাহারি ওড়না, ছোট-বড় সবার হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। হাওর কই?
তবু নিঃস্ব-গরিবের মতো খাবলা খাবলা হাওর দূর থেকে আমাদের দিকে এতিম এতিম চোখে তাকিয়ে থাকে। আমি নাম জিজ্ঞাসা করি। বাউল বলেন, ‘মই হাওর।’
‘এর অর্থ কী?’ আমি বাউল ভাইয়ের কাছে জানতে চাই।
‘এর মানে খালা। খালা হাওর!’ সাবুল শাহ বলেন।
প্রায় নিঃশেষ হয়ে যাওয়া খালা হাওরের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলি, তাই সে এত ছোট!
হাওরের নাম ও অর্থ জেনে মনটা আমার শান্তিতে জুড়িয়ে যায় আর শ্রদ্ধায় ঝুকে পড়ে আমাদের প্রাচীন পিতাদের দিকে। তাঁদের সমাজপতিরা কত গভীর হৃদয় আর সুন্দর চিন্তার মানুষ ছিলেন। তাই তো হাওরের নাম রেখেছেন মায়ের বোন খালা!
সামনে পড়ে আরেকটা গ্রাম। একই দৃশ্য। তাই আমরা ডানে-বাঁয়ে তাকাই না। সোজা সামনের দিকে নজর রেখে হাঁটি আর টুকটাক বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে আবার একটা হাওরে এসে পড়ি। আকৃতি-প্রকৃতিতে সে এখনো শ্রদ্ধাজাগানিয়া। পড়ন্ত বিকেলের রোদে সাদা চকচকে পানি। জোরালো বাতাসে ঢেউ ফুঁসছে। দূরের গ্রামগুলো নারীর চোখের ভ্রুভঙ্গির মতো বাঁক-খাওয়া কালো। হাওয়ায় গতর ভাসিয়ে উড়ছে কিছু কিছু পাখি। পানির আঁশটে গন্ধে মন কেমন কেমন করে। আমি মনে মনে লম্বা লম্বা গলাওয়ালা সারসের ঝাঁক, বুকসাদা খয়েরি রঙের কালিম পাখি তালাশ করি। কিন্তু চোখে পড়ে শুধু কানিবগ!
বাউল ভাইকে হাওরের নাম জিজ্ঞাসা করি। তিনি একটু হেসে বলেন, ‘পেলপোড়া হাওর।’
‘পেলপোড়া মানে?’ আমি অবাক গলায় জানতে চাই।
‘অনেক বছর আগের কতা...’ সাবুল শাহ বলতে শুরু করেন, ‘বোরখেতে কাম করার পরে কিছু মানুষ শীতে কাঁপতে কাঁপতে আমনের শুকনা নাড়ায় আগুন দিল। আগুন পোহাইতে পোহাইতে এক ব্যাডার অন্ডকোষ পুইড়া গেল। সেই থাইকা এর নাম পেলপোড়া হাওর।’
চেয়ে দেখি, বাউল ভাই নির্বিকার। তাই আমি হেসে উঠতে গিয়েও চেপে যাই।
‘আগের দিনের পুরুষ মানুষরা আছিন সাহসী, শক্তিধর আর হাওরের বাতাসের মতন একরুখা।’ আমার মনের ভাব বুঝে সাবুল ভাই এই সব বলতে থাকেন।
আমরা হাঁটতেই থাকি। সেই-ই একই দৃশ্য! হৃদয় কী দেখতে চায় আর চোখ কী দেখায়! খালের ঘোলা পানিতে হাঁসেরা প্যাঁকপ্যাঁক করছে। একজন ঠেলা জাল দিয়ে পাশের খেতের হাঁটুপানিতে মাছ ধরছে। মাছ দেখার জন্য আমি রাস্তার পাশে দাঁড়াই। লোকটা জাল তুলে তন্ন তন্ন করে মাছ খোঁজে, তিঁতপুঁটি, দুধের শিশুর মতো ছোট ছোট টাকি মাছ, গোতুম মাছের পোনা ধরা পড়তে দেখে আমার দুঃখ লাগে।
আমার মন বুঝে বাউল ভাই মরমি গলায় বলতে থাকেন, ‘হেই-ই বাঘময়না কি আছে? কুশিয়ারা গাঙ্গেই খায়ালাইছে অর্ধেকটা। তারপরে ধরেন, মানুষ বাড়ছে, গ্রাম বাড়ছে... এইভাবে বাঘময়নারে ঘিরে পরত পরত আরও পাঁচ-ছয়টা গেরাম পত্তন হইছে।’
আমার উৎসাহ একেবারে মরে যায়। যেখানে কুশিয়ারা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে, তার পাশে একটা বুড়ো জারুলগাছের নিচে আমরা বসে পড়ি। নদীর পার এদিকে ভাঙছেই। ওপারে জেগে ওঠা নতুন চরের পানিতে কয়েকটা বক সারি ধরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতীক্ষা! তিতিক্ষা! নিষ্ঠাবান তাপসদের সামনে দিয়ে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছেন আজব এক গুরু। কেউ দেখে না, কেউ বুঝতে চায় না।
‘সেই-ই ডাকাইত–ডাকাইত পুরুষ নাই, বাঘময়নাও নাই।’
বাউল ভাইয়ের ক্ষীণ দীর্ঘশ্বাস আমার কানে লাগে। আমি সময়ের দিকে শূন্য চোখে তাকিয়ে থাকি আর যেন একটু একটু শুনতে পাই, পেলপোড়া হাওরের দিক থেকে ছুটে আসা বাতাসের সাথে রেশম–রেশম কান্নার মতো কিছু একটা বুঝি আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে!
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব উল ভ ই আম দ র হ ওর র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
দোষ বিয়ারিং প্যাডের নয়, যারা লাগিয়েছে কিংবা বুঝে নিয়েছে, তাদের: ডিএমটিসিএল এমডি
মেট্রোরেল চালুর আগে নিরাপত্তার পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষা (সেফটি অডিট) ছাড়াই যাত্রা শুরু হয়েছিল ঢাকার মেট্রোরেলের। এর মধ্যে বিয়ারিং প্যাড নিচে পড়ে একজন পথচারী মারা গেছেন। এবার নতুন করে নিরাপত্তার নিরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর আজ সোমবার সকালে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের আগে সেফটি অডিট হয়নি। তাই সেফটি অডিট করতে চাইছি। যত দ্রুত করা যায়, সেটা আমরা করব। থার্ড পার্টিকে (তৃতীয় পক্ষ) দিয়ে এই অডিট করানো হবে। ইউরোপীয় কোনো প্রতিষ্ঠান দিয়েই করানো হবে। আমাদের কাছে ফ্রান্সের দুটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। সেফটি অডিট করার জন্য আমরা খুব শিগগির টেন্ডারের প্রক্রিয়ায় যাব।’
এক বছর আগে ঢাকার মেট্রোরেলের স্তম্ভের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার পর গত ২৬ অক্টোবর ফার্মগেটে আরেকটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু হয়। এরপর ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় শাহবাগ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল।
বিয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার পর এগুলোর নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, ‘বিয়ারিং প্যাড হঠাৎ করে পড়ে যায়নি। এটা হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ার জিনিস নয়। যেহেতু এটা নিয়ে তদন্ত চলছে, ফলে এ বিষয়ে আমি জাজমেন্টাল হতে চাই না। তবে যেটা হতে পারে, সেটা বলতে পারি, ডিজাইন ফল্ট হতে পারে। যে জিনিসের ওপর বসানোর কথা বলা হয়েছিল, যা যা দেওয়ার কথা ছিল, সেটা বসানো হয়নি। যে ডিজাইনে হওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়তো ঠিকাদার করেনি। যে পরামর্শককে বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারা হয়তো ঠিক করে জিনিসটা বুঝে নেয়নি। এই চারটা কারণে হতে পারে অথবা এর মধ্যে কোনো একটা কারণেও হতে পারে।’
ফারুক আহমেদ আরও বলেন, ‘দোষ কিন্তু বিয়ারিংয়ের নয়। বিয়ারিং যে লাগিয়েছে, সেটি বাজেভাবে লাগানো হয়েছে কি না? যার আসলে বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল, সে বুঝে নিয়েছে কি না, সেগুলো এখন দেখতে হবে।’
আরও পড়ুনবৃষ্টির পানি ঢোকে, এসি বিকল হয়, মেট্রোরেল ব্যবস্থায় ৪৫ সমস্যা০২ নভেম্বর ২০২৫এসব কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য হাজার কোটি টাকায় বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ করা আছে জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘প্রথম ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেবেন পরামর্শক। আমাদের বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পরামর্শকদের। তখন এই কাজগুলো কিছুটা তাড়াহুড়া হয়েছে। কেন হয়েছে, সেটার উত্তর তো আমি দিতে পারব না। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেই অংশে অনেক ডিফেক্ট আছে। ফলে সেটা এখনো আমরা বুঝে নিইনি।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, যেখানে বিয়ারিং প্যাড পড়ে গিয়েছিল, ওই অংশের ত্রুটি সারিয়ে দেওয়ার সময়সীমা (ডিফেক্ট লায়াবেলিটি) গত জুন পর্যন্ত ছিল। কিন্তু ডিএমটিসিএল তাদের এই সময়সীমা গ্রহণ করেনি। কারণ, এখনো অনেক বড় ত্রুটি রয়ে গেছে। যত সমস্যা আছে, এগুলো ঠিকাদারকে মেরামত করতে হবে। এ জন্য ‘ডিফেক্ট লায়াবেলিটি’ দুই বছর বাড়ানোর জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর মেট্রোরেলের সব কটি পিলার পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, এর আগে পুরো পথের বিয়ারিং প্যাডের ছবি ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে তোলা হয়েছে। এরপর কর্মকর্তারা সরেজমিনে নিরীক্ষা করেছেন। যেসব স্থানে ত্রুটি শনাক্ত করা হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। ডিএমটিসিএলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো, যেখানে ত্রুটি বা সমস্যা পাওয়া যাবে, সেখানে বিয়ারিং প্যাড অবশ্যই পরিবর্তন করা হবে।
আরও পড়ুনমেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড কী, খুলে পড়ার কারণ কী হতে পারে২৬ অক্টোবর ২০২৫চার বছর আগে তাড়াহুড়া করে ঢাকার মেট্রোরেল চালু করা হয়েছিল দাবি করে ফারুক আহমেদ বলেন, প্রকল্পটি চালুর আগে ন্যূনতম ছয় থেকে নয় মাসের পরীক্ষামূলক চলাচল নিশ্চিত করার প্রয়োজন ছিল। তিন বছরে মেট্রোরেল চালু হবে বা পাঁচ বছরে মেট্রোরেল সম্পূর্ণ হবে—এ ধরনের ধারণা আসলে ভুল। কোনো মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সব ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার পর ছয় থেকে সাত বছর লাগে। এর আগে প্রকল্প প্রণয়ন, সম্ভাব্যতা যাচাই ও অন্যান্য প্রস্তুতিতে চলে যায় তিন বছর।
২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের যে লক্ষ্যমাত্রা আগে নেওয়া হয়েছিল, তা কিসের ভিত্তিতে হয়েছে, তা তার বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেন ডিএমটিসিএলের এমডি।
নতুন মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প তাহলে মুখ থুবড়ে পড়ছে কি না, এমন প্রশ্ন করা হলে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেট্রোরেল প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েনি। মেট্রোরেল আমাদের লাগবে। আমাদের লক্ষ্য হলো, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এই প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হয়। সরকারের উদ্দেশ্য হলো একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করা, যাতে একাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারে এবং কম খরচে উন্নত মানের মেট্রোরেল নির্মাণ সম্ভব হয়। মেট্রোরেল আমাদের করতেই হবে; তবে তা হবে স্মার্ট ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে।’
আরও পড়ুনবিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে ফার্মগেটে একজন নিহত, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ২৬ অক্টোবর ২০২৫