ময়মনসিংহের সড়ক-মহাসড়কে সাড়ে তিন বছরে ৭৭২ জনের মৃত্যু—এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান কেবল সংখ্যা নয়, বরং প্রতিদিনের রূঢ় বাস্তবতা। প্রতিটি প্রাণহানি একটি পরিবারকে শোকে নিমজ্জিত করেছে, অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিয়েছে। একই সময়ে গুরুতর আহত ও অঙ্গহানির শিকার হয়েছেন প্রায় এক হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতি আমাদের সড়কব্যবস্থার নৈরাজ্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ দুরবস্থা তুলে ধরে।

বিআরটিএর তথ্য বলছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট আঞ্চলিক সড়ক দুর্ঘটনার ‘হটস্পট’। বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং, আঁকাবাঁকা সড়ক এবং থ্রি-হুইলারের অবাধ চলাচল—সব মিলিয়ে এই সড়কগুলোকে মৃত্যুকূপে পরিণত করেছে। চার লেনের মহাসড়ক হলেও উল্টো পথে গাড়ি চলা, গতিসীমা অমান্য করা এবং হাইওয়েতে ধীরগতির থ্রি-হুইলার চলাচল পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক করছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সতর্কবার্তা ও গতিসীমা নির্ধারণ করেছে, কিন্তু চালকদের অনিয়ম ও বেপরোয়া গতির কারণে তা কোনো কাজে আসছে না। অনেক চালক মনে করেন, ভালো রাস্তা মানেই বেশি গতি। এই মানসিকতা ভাঙতে কঠোর নজরদারি ও শাস্তির বিকল্প নেই।

প্রশ্ন হচ্ছে, এই মৃত্যুর মিছিল থামাতে প্রশাসনের ভূমিকা কোথায়? সড়কে নিয়ম ভাঙা, বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং রোধে কেন কঠোর নজরদারি ও শাস্তি নেই? জাতীয় মহাসড়কে থ্রি–হুইলার নিষিদ্ধ থাকলেও বিকল্প পরিবহন না থাকায় এবং দুর্বল নজরদারির কারণে সেগুলো নির্বিঘ্নে চলছে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজে সক্রিয় হলেও প্রতিরোধমূলক উদ্যোগের ঘাটতি প্রকট। শুধু দুর্ঘটনার পর উদ্ধার নয়, দুর্ঘটনা প্রতিরোধই হতে হবে মূল লক্ষ্য। এ জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে হাইওয়ে পুলিশের উপস্থিতি ও নজরদারি বাড়ানো এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিড ক্যামেরা বসানো জরুরি।

এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উপেক্ষিত হচ্ছে—জনসচেতনতা ও চালকের প্রশিক্ষণ। অধিকাংশ দুর্ঘটনা চালকদের অসতর্কতা, অভ্যাসগত আইন ভাঙা এবং প্রতিযোগিতামূলক গতির কারণে ঘটছে। যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে, যাতে তাঁরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে চালকদের বাধ্য না করেন। পাশাপাশি থ্রি-হুইলারের বিকল্প হিসেবে নির্ভরযোগ্য লোকাল পরিবহনব্যবস্থা চালু না করলে এসব দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনাগুলোকে নিছক দুর্ঘটনা বলা যায় না; এগুলো একধরনের ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’। দায়িত্বশীলদের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে আর কোনো প্রাণ যেন সড়কে না ঝরে—এখনই সেই দাবি তুলতে হবে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করতে হবে। ময়মনসিংহের সড়কগুলোতে বেপরোয়া গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে পুলিশকে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন ব যবস থ নজরদ র ব পর য় র সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

পূর্বধলায় ট্রাকের পেছনে অটোরিকশার ধাক্কা, নিহত ২

নেত্রকোণার পূর্বধলায় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বালুবাহী ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। এ ঘটনায় দুইজন নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নেত্রকোণা–ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের নারান্দিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।

আরো পড়ুন:

মোটরসাইকেলে পিকআপের ধাক্কা, বিআরডিবি কর্মকর্তা নিহত

চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ল মাইক্রোবাস, আহত ৫

নিহতরা হলেন- ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানার চায়না মোড় এলাকার আব্দুল জলিল (৪৫) ও নেত্রকোণা সদর উপজেলার আসাদআটি গ্রামের শহীদ মিয়া (৪২)। আহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন- নিহত শহীদ মিয়ার স্ত্রী রেজিয়া আক্তার (৪০)। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, বালুভর্তি একটি ট্রাক সড়কের পাশে বিকল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। রাতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি ট্রাকটির পেছনে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রী মারা যান।

শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নান্নু খান বলেন, “ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাহিদুল-মজিদের সেঞ্চুরির দিনে মুমিনুলের ৮ রানের আক্ষেপ
  • দেশজুড়ে বৃষ্টি ও তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস
  • জুলাই সনদ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে: মামুনুল হক
  • এনসিএল: তিন সেঞ্চুরি ও মিরপুরে উইকেটের মিছিল
  • রংপুরকে পেয়েই আবার নাঈমের সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি মাহফিজুল ও সাদিকুরেরও
  • সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আন্তরিক হোন
  • গাজায় ব্যাংক খুলেছে, নেই নগদ অর্থ
  • রাতে বাড়িতে পুলিশের অভিযান, ভোরে ধানখেতে পাওয়া গেল রক্তাক্ত মরদেহ
  • সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে অটোরিকশার ধাক্কা, নিহত ২
  • পূর্বধলায় ট্রাকের পেছনে অটোরিকশার ধাক্কা, নিহত ২