বেপরোয়া গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
Published: 28th, July 2025 GMT
ময়মনসিংহের সড়ক-মহাসড়কে সাড়ে তিন বছরে ৭৭২ জনের মৃত্যু—এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান কেবল সংখ্যা নয়, বরং প্রতিদিনের রূঢ় বাস্তবতা। প্রতিটি প্রাণহানি একটি পরিবারকে শোকে নিমজ্জিত করেছে, অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিয়েছে। একই সময়ে গুরুতর আহত ও অঙ্গহানির শিকার হয়েছেন প্রায় এক হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতি আমাদের সড়কব্যবস্থার নৈরাজ্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ দুরবস্থা তুলে ধরে।
বিআরটিএর তথ্য বলছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট আঞ্চলিক সড়ক দুর্ঘটনার ‘হটস্পট’। বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং, আঁকাবাঁকা সড়ক এবং থ্রি-হুইলারের অবাধ চলাচল—সব মিলিয়ে এই সড়কগুলোকে মৃত্যুকূপে পরিণত করেছে। চার লেনের মহাসড়ক হলেও উল্টো পথে গাড়ি চলা, গতিসীমা অমান্য করা এবং হাইওয়েতে ধীরগতির থ্রি-হুইলার চলাচল পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক করছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সতর্কবার্তা ও গতিসীমা নির্ধারণ করেছে, কিন্তু চালকদের অনিয়ম ও বেপরোয়া গতির কারণে তা কোনো কাজে আসছে না। অনেক চালক মনে করেন, ভালো রাস্তা মানেই বেশি গতি। এই মানসিকতা ভাঙতে কঠোর নজরদারি ও শাস্তির বিকল্প নেই।
প্রশ্ন হচ্ছে, এই মৃত্যুর মিছিল থামাতে প্রশাসনের ভূমিকা কোথায়? সড়কে নিয়ম ভাঙা, বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং রোধে কেন কঠোর নজরদারি ও শাস্তি নেই? জাতীয় মহাসড়কে থ্রি–হুইলার নিষিদ্ধ থাকলেও বিকল্প পরিবহন না থাকায় এবং দুর্বল নজরদারির কারণে সেগুলো নির্বিঘ্নে চলছে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজে সক্রিয় হলেও প্রতিরোধমূলক উদ্যোগের ঘাটতি প্রকট। শুধু দুর্ঘটনার পর উদ্ধার নয়, দুর্ঘটনা প্রতিরোধই হতে হবে মূল লক্ষ্য। এ জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে হাইওয়ে পুলিশের উপস্থিতি ও নজরদারি বাড়ানো এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিড ক্যামেরা বসানো জরুরি।
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উপেক্ষিত হচ্ছে—জনসচেতনতা ও চালকের প্রশিক্ষণ। অধিকাংশ দুর্ঘটনা চালকদের অসতর্কতা, অভ্যাসগত আইন ভাঙা এবং প্রতিযোগিতামূলক গতির কারণে ঘটছে। যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে, যাতে তাঁরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে চালকদের বাধ্য না করেন। পাশাপাশি থ্রি-হুইলারের বিকল্প হিসেবে নির্ভরযোগ্য লোকাল পরিবহনব্যবস্থা চালু না করলে এসব দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনাগুলোকে নিছক দুর্ঘটনা বলা যায় না; এগুলো একধরনের ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’। দায়িত্বশীলদের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে আর কোনো প্রাণ যেন সড়কে না ঝরে—এখনই সেই দাবি তুলতে হবে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করতে হবে। ময়মনসিংহের সড়কগুলোতে বেপরোয়া গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে পুলিশকে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন ব যবস থ নজরদ র ব পর য় র সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
মাহিদুল ও মজিদের সেঞ্চুরি, ৮ রানের জন্য পাননি মুমিনুল
মজিদের সেঞ্চুরি ও হায়দারের ঝড়ে ময়মনসিংহের ৫৫৫
জাতীয় ক্রিকেট লিগে নবাগত ময়মনসিংহ দারুণভাবে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। প্রথম ইনিংসে মোহাম্মদ নাঈম ও মাহফিজুল ইসলামের পর এবার সেঞ্চুরি পেয়েছেন আবদুল মজিদ। অধিনায়ক শুভাগত হোম ও আবু হায়দারও খেলেছেন ঝোড়ো ইনিংস। তিনজনের ব্যাটে ভর করে ময়মনসিংহ ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে। কক্সবাজার একাডেমি গ্রাউন্ডে বল হাতে শুরুও করেছে ভালো—প্রতিপক্ষ রংপুর দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ১৮ রান তুলে ফিরেছে ড্রেসিংরুমে।
২ উইকেটে ২৮১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে ময়মনসিংহ। তবে ২২ রান যোগ করতেই পড়ে যায় আরও দুটি উইকেট। এরপর মজিদ ও শুভাগত গড়েন ১৩০ রানের জুটি। ৮৬ বলে ৬৫ রান করে শুভাগত আউট হওয়ার পর মজিদ জুটি গড়েন তাহজিবুল ইসলামের সঙ্গে (২১)। ষষ্ঠ উইকেটে আসে ৩৪ রান। এরপর হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র ৪২ বলেই সপ্তম উইকেটে তোলেন ৭৭ রান। ৩৪ বলে ৫ ছক্কায় ৬০ রান করেন হায়দার। অপর প্রান্তে ১৮৬ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৯ রানে অপরাজিত থাকেন মজিদ। ১১০ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে এটি তাঁর ১৪তম সেঞ্চুরি।
সেঞ্চুরি হাতছাড়া মুমিনুলের৯২ রানে আউট হয়েছেন চট্টগ্রামের মুমিনুল হক