রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় র‍্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ৮ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মিন্টু হালদার (৪২), মো. নাজমুল হাসান, নির্মল হালদার (৩৭), সালাউদ্দিন (৩৫), মো.  দেলোয়ার হোসেন সিকদার (৫৫), সৈয়দ শামীম হোসেন (৪৫), পবিত্র পাল (৩৮) ও বলরাম চন্দ্র পাল (৩৭) ।

শাহবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুলাই দুপুরে রঞ্জন চন্দ্র সিংহ নামে এক ব্যক্তি পায়ে হেঁটে বাংলাদেশ সচিবালয় মেট্রো স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছালে ৩-৪ জন অজ্ঞাতনামা লোক র‍্যাবের পোশাক পরিহিত অবস্থায় তাকে জোরপূর্বক একটি সাদা রঙের হাইয়েস মাইক্রোবাসে তুলতে চেষ্টা করে। এ সময় তিনি তাদের হাত থেকে বাঁচতে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ভর্তি ব্যাগ রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলেন। তখন র‍্যাবের পোশাক পরিহিত লোকজন ধাক্কা দিয়ে তার ব্যাগটি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। উক্ত ব্যাগে নগদ ৪ লাখ টাকা ও প্রায় ১১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল। পরবর্তীতে এ ঘটনায় রঞ্জন চন্দ্র সিংহের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই শাহবাগ থানায় মামলা হয়।

আরো পড়ুন:

সিংড়ার ভ্যানচালক জিহাদ হত্যার রহস্য উদঘাটন, ২ বন্ধু গ্রেপ্তার

ধামরাইয়ে অস্ত্রসহ ডাকাত গ্রেপ্তার

থানা সূত্রে জানা যায়, উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে শাগবাগ থানার একটি চৌকস দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের হেফাজত হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তিনটি র‍্যাব ইউনিফর্ম (শার্ট), একটি র‍্যাব ইউনিফর্ম (প্যান্ট), দুইটি র‍্যাবের হ্যাঙ্গিং ব্যাজ, চারটি র‍্যাবের সোল্ডার ব্যাজ, ছয়টি র‍্যাবের র‍্যাঙ্ক ব্যাজ, একটি র‍্যাবের লেনিয়ার্ড, একটি র‍্যাবের টিউনিং হ্যাঙ্গিং ব্যাজ, একটি র‍্যাব লেখা ক্যাপ, ১১টি মোবাইল ফোন, দুইটি খেলনা পিস্তল, দুইটি হ্যান্ডকাফ, দুইটি সিগন্যাল লাইট, একটি হিরো স্কুটি উদ্ধার করা হয়।

থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। তারা রাজধানীর তাতিবাজার স্বর্ণপট্টি এলাকায় আগত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অনুসরণ করে তাদের জন্য সুবিধাজনক স্থানে পথরোধ করে র‍্যাব ও ডিবির পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করতো মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন। তাদের নামে একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে।

ঢাকা/এমআর/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ হব গ থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ