জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৪৬৪ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ক‌রে ভোগ দখলে রাখা এবং ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৫৮ কোটি ৪০ লাখ ৮৩ হাজার ৫০৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অ‌ভি‌যো‌গে সা‌বেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং এবং তার স্ত্রী মেহ্লা প্রুর বিরু‌দ্ধে পৃথক দু‌টি মামলা দা‌য়ের ক‌রে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন।

রবিবার (৩ আগস্ট) ক‌মিশ‌নের মহাপ‌রিচালক আক্তার হো‌সেন এ তথ‌্য জানান।

আসা‌মি‌দের বিরু‌দ্ধে দুর্নী‌তি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা মোতাবেক মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এবং দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় অ‌ভি‌যোগ আনা হ‌য়ে‌ছে। দ্বিতীয় মামলায় স্ত্রীর স‌ঙ্গে বীর বাহাদুর‌কেও আসা‌মি করা হ‌য়ে‌ছে।

প্রথম মামলায় বলা হয়, বীর বাহাদুর উশৈ সিং সরকা‌রি ক্ষমতার অপব‌্যবহার ক‌রে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৪৬৪ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ক‌রে‌ছেন। পরবর্তী তা ভোগ দখলে রেখে এবং নিজের নামে ১৩টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৫৮ কোটি ৪০ লাখ ৮৩ হাজার ৫০৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ক‌রে‌ছেন।

দুদক জানায়, অনুসন্ধা‌নে বীর বাহাদু‌রের বৈধ উৎ‌সের প‌রিমাণ পাওয়া যায় ২০ কোটি ৩৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪৯ টাকা, অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত সম্পদের মূল্য ২৯ কোটি ৫৬ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৩ টাকা। অন্যদিকে তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের মূল্য ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৪৬৪ টাকা।

দ্বিতীয় মামলায় বলা হয়, আসা‌মি মেহ্লা প্রু তার স্বামী বীর বাহাদুর উশৈ সিংয়ের সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৯৪ হাজার ঠাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রে‌খে‌ছেন। তাছাড়া নিজের নামে ৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১৫ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ১৮৪ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ক‌রে‌ছেন। যা দুর্নী‌তি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন// 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ঞ ত আয় র

এছাড়াও পড়ুন:

আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ

সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে কারচুপির অভিযোগকারী ছাত্রীকেই সন্দেহ কমিশনের
  • আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
  • জেমকন গ্রুপের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর বিরু‌দ্ধে মামলা কর‌বে দুদক
  • জেমকন গ্রুপের দুই পরিচালকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করবে দুদক
  • ভারত–পাকিস্তান লড়াই: একসময় আগুন জ্বলত, এখন শুধু ধোঁয়া