সিডনির হারবার ব্রিজে ফিলিস্তিনের পক্ষে ইতিহাসের বৃহত্তম মিছিল, অংশ নেন বাংলাদেশিরাও
Published: 3rd, August 2025 GMT
সিডনির আকাশ সকাল থেকেই মুখ গোমড়া করে ছিল। টিপটিপ বৃষ্টি আর কনকনে ঠান্ডা বাতাস উপেক্ষা করে লাখো মানুষের স্রোত যখন শহরের কেন্দ্রস্থলের দিকে এগোচ্ছিল, তখনই বোঝা যাচ্ছিল, আজকের দিনটি সাধারণ কোনো দিন হবে না। রোববার সিডনির ইতিহাস নতুন করে লেখা হতে চলেছে। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানাতে এবং গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদে আজ সিডনির আইকনিক হারবার ব্রিজের ওপর দিয়ে হেঁটে গেল এক অবিস্মরণীয় জনসমুদ্র। আয়োজকদের দাবি, এই মিছিলে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা দুই থেকে তিন লাখ ছাড়িয়েছে, যা এই শহরের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এতে প্রচুর প্রবাসী বাংলাদেশিও অংশগ্রহণ করেছেন।
উত্তপ্ত ছিল পরিস্থিতিমিছিলটি অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে থেকে এক সপ্তাহ ধরে সিডনিজুড়ে বিরাজ করছিল চরম উত্তেজনা। নিউ সাউথ ওয়েলসের মুখ্যমন্ত্রী ক্রিস মিন্স ও পুলিশ প্রশাসন এই মিছিলের অনুমতি দিতে নারাজ ছিল। তারা নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে মিছিলটি বন্ধ করার জন্য রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার আদালত পুলিশের আবেদন খারিজ করে দিয়ে মিছিলের পক্ষে রায় দেয়। এই আইনি লড়াই এবং সরকারের সরাসরি বিরোধিতা সাধারণ মানুষের মধ্যে উল্টো একধরনের জেদ তৈরি করে। আদালতের রায়ের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছিল। সবাই যেন পণ করেছিলেন, সব বাধা উপেক্ষা করে হারবার ব্রিজে তাঁরা যাবেনই।
প্রতিবাদে অংশ নেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া সম্মানে ভূষিত সাবেক সিটি কাউন্সিলর ও সমাজকর্মী সাবরিন ফারুকী ও তাঁর ছেলে। ৩ আগস্ট, ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ডন র
এছাড়াও পড়ুন:
শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি
গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
আরো পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের
এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, “কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ