রাজশাহীতে বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবজির দাম
Published: 4th, August 2025 GMT
রাজশাহীতে বর্ষাকালে বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কাঁচা সবজির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজিভেদে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা। কেবল আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আজ সোমবার সকালে নগরের সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে কথা হয় রাজমিস্ত্রির জোগালি মনির হোসেনের সঙ্গে। এক কেজি পটোলের দাম ৫০ টাকা শুনেই তিনি মাথা নেড়ে বললেন, ‘এই পানিতে ঢ্যাঁড়স-পটোল সবকিছুরই দাম তো আগুন রে ভাই। কয় দিন আগেও দেড় শ ট্যাকা লইয়া বাজারে গিয়া ব্যাগ ভরা তরকারি লইয়া আনতাম। এখন ওই দামে তিনডা জিনিসও জোটে না। ওপর থেইক্য বৃষ্টি, নিচ থেইক্য দাম।’
পটোলের দাম আগের তুলনায় ২০ টাকা বেড়েছে বলে জানালেন মনির। তাঁর দাবি, দুই দিন আগেই তিনি পটোল কিনেছেন ৩০ টাকায়।
নগরের সাহেববাজার, নিউমার্কেট ও বিনোদপুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ১২০ থেকে বেড়ে ১৫০ টাকা, প্রতি কেজি পেঁপে ২০ থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা, পটোল ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, করলা ৫০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৫০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে এসেছে কিছু মৌসুমি নতুন সবজি। প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, আর ফুলকপি কেজিপ্রতি ১০০ টাকা দরে। তবে ক্রেতার স্বস্তির খবর, একমাত্র আলুর দাম ৫ টাকা কমে এখন কেজিতে ২০ টাকা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল-আমিন আজ সকালে বাজারে এসে কিছুটা হতাশ। বিনোদপুর বাজারে তিনি বললেন, ‘বেগুনের দাম তো হাই ছিলই। সেটা খাওয়া বাদ অনেক দিন ধরে। ঢ্যাঁড়স আর পটোলের দামও বেড়ে গেছে। একটি ছোট লাউও ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানালেন কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী আবদুস সাত্তার। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি মাঠেই পইচা গেছে। সরবরাহ কম। এই কারণে দাম বাড়ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এখনো কিছু কিছু আইটেম সস্তা আছে। কিন্তু বৃষ্টি চলতে থাকলে দাম আরও বাড়ব।’
শুধু সবজি নয়, ডিমের দামও বেড়েছে। প্রতি হালি সাদা ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, আর লাল ডিম ৪৪ টাকায়। তিন দিন আগেও এর দাম প্রতি হালিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কম ছিল। ডিম ব্যবসায়ী আহমেদ হাদি বলেন, ‘এই কয় দিন আগেও ডিম ৩৪ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হইত। এখন আবার বাড়ছে। ৪০ থেকে ৪২ টাকায় থাকলে স্বাভাবিক। কিন্তু এর বেশি হইলে কষ্ট হয় মানুষের।’
এদিকে সোনালি মুরগির দামও কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে অন্য প্রজাতির মুরগির দামে তেমন হেরফের হয়নি। মাছ, গরু ও খাসির মাংস ও চালের দামও প্রায় একই রয়েছে।
রাজশাহীতে এ বছর বর্ষাকালের শুরু থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। আষাঢ় মাসের প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে। শ্রাবণ মাসেও সেই ধারা অব্যাহত আছে। অতিবৃষ্টির কারণে খেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে এবার আষাঢ়ে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে। আষাঢ়ের শেষ দিনে সবচেয়ে বেশি ৯১ মিলিমিটারের অধিক বৃষ্টিপাত হয়। শ্রাবণেও প্রায় প্রতিদিনই অব্যাহত আছে। গত সোমবার রাত থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত ৬০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রোববার রাতেও ২০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০ ট ক ৫০ ট ক দ ন আগ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’
ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।