রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর একাডেমিক ভবনগুলোতে ভোট গ্রহণ করা হবে।

বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম।

এদিকে, ২৮ সেপ্টেম্বর রাকসুর ভোগ গ্রহণের নতুন তারিখ ঘোষণা করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, আগামী ২৮ তারিখ দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠী। এই দিনে ভোট গ্রহণ করা হলে সবাই ভোট দিতে পারবেন না।

অন্যদিকে, ভোটের তারিখ পেছানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাবি শাখা। 

নতুন তারিখ অনুযায়ী মনোয়নপত্র বিতরণের শেষ দিন ৩১ আগস্ট। মনোনয়নপত্র দাখিল ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ সেপ্টেম্বর ও ৭ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৮ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ১১ সেপ্টেম্বর। প্রাথমিক তালিকা সম্পর্কে প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ১৪ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ১৫ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ১৬ সেপ্টেম্বর। ভোট গ্রহণ ২৮ সেপ্টেম্বর। ফলাফল সেদিনই প্রকাশ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড.

এফ নজরুল ইসলাম বলেছেন, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও আরো কিছু তারিখ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, ভোটকেন্দ্র আবাসিক হল থেকে একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর, ভোটার তালিকায় ছবি সংযুক্তি ও সাইবার বুলিং রোধে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ভোট গ্রহণের তারিখ পেছানোর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিবর্তন, ভোট কেন্দ্র একাডেমিক ভবনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত ও ডোপটেস্ট করতে ৪-৫ দিন সময় লাগবে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, মহাষষ্ঠীতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেছেন আইন বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সোমা পাল। তিনি বলেন, দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীও উৎসব। এদিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা একদম অযৌক্তিক। এই তারিখে নির্বাচন হলে আমরা কোনোভাবেই থাকতে পারব না। একদিন আগে হলেও থাকা সম্ভব হতো। প্রশাসন কি তাহলে চায় না হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করুক? এই তারিখে ভোট হলে কখনই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ, মহাষষ্ঠীর এক দিন আগেই আমরা বাসায় চলে যাই।

ঢাকা/ফাহিম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র নত ন ত র খ ভ ট গ রহণ গ রহণ র

এছাড়াও পড়ুন:

আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।

আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।

আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি