মহাষষ্ঠীতে রাকসু নির্বাচনের তারিখ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
Published: 27th, August 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর একাডেমিক ভবনগুলোতে ভোট গ্রহণ করা হবে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম।
এদিকে, ২৮ সেপ্টেম্বর রাকসুর ভোগ গ্রহণের নতুন তারিখ ঘোষণা করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, আগামী ২৮ তারিখ দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠী। এই দিনে ভোট গ্রহণ করা হলে সবাই ভোট দিতে পারবেন না।
অন্যদিকে, ভোটের তারিখ পেছানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাবি শাখা।
নতুন তারিখ অনুযায়ী মনোয়নপত্র বিতরণের শেষ দিন ৩১ আগস্ট। মনোনয়নপত্র দাখিল ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ সেপ্টেম্বর ও ৭ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৮ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ১১ সেপ্টেম্বর। প্রাথমিক তালিকা সম্পর্কে প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ১৪ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ১৫ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ১৬ সেপ্টেম্বর। ভোট গ্রহণ ২৮ সেপ্টেম্বর। ফলাফল সেদিনই প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড.
ভোট গ্রহণের তারিখ পেছানোর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিবর্তন, ভোট কেন্দ্র একাডেমিক ভবনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত ও ডোপটেস্ট করতে ৪-৫ দিন সময় লাগবে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মহাষষ্ঠীতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেছেন আইন বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সোমা পাল। তিনি বলেন, দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীও উৎসব। এদিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা একদম অযৌক্তিক। এই তারিখে নির্বাচন হলে আমরা কোনোভাবেই থাকতে পারব না। একদিন আগে হলেও থাকা সম্ভব হতো। প্রশাসন কি তাহলে চায় না হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করুক? এই তারিখে ভোট হলে কখনই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ, মহাষষ্ঠীর এক দিন আগেই আমরা বাসায় চলে যাই।
ঢাকা/ফাহিম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র নত ন ত র খ ভ ট গ রহণ গ রহণ র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের আবেদনের পর মনোনয়নপত্র নেওয়ার সময় বাড়ল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র নেওয়া ও জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। একইভাবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার ছিল মনোনয়নপত্র নেওয়ার শেষ দিন। এ ছাড়া আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। সময় বাড়ানোর বিষয়টি আজ বেলা দেড়টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় দুই দিন বাড়ানোর দাবিতে আজ বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করে ছাত্রদল। সংগঠনটির পক্ষে শাখা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান এই আবেদন করেন। এ ছাড়া একই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে করা এক আবেদনে ইসলামী ছাত্র মজলিসের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আগামী রোববার পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি করা হয়।
ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমানের করা আবেদনে বলা হয়, গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট গ্রামবাসীদের হামলার শিকার হয়ে আহত অনেক শিক্ষার্থী এখনো গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারেননি। এ অবস্থায় নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও দুই দিন বাড়ালে নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক সব শিক্ষার্থীর জন্য মঙ্গল হতো। জানতে চাইলে আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এই আবেদন করেছি।’
ইসলামী ছাত্র মজলিসের আবেদনটিতে সই করেন সংগঠনটির শাখা সভাপতি সাকিব মাহমুদ ও সেক্রেটারি নাজমুস সাদাত। তাঁরা উল্লেখ করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রমেই বেশি ব্যস্ত। এ অবস্থায় তাড়াহুড়া ও মানসিক চাপ নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া অনেকের জন্যই কষ্টকর হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার সময় রোববার পর্যন্ত বাড়ানো হোক।’
জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি সাকিব মাহমুদ বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। বেশির ভাগ প্রার্থীই একাডেমিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত। এ অবস্থায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ও প্যানেল গোছানো কষ্টকর। এসব বিবেচনায় তাঁরা মেয়াদ বাড়ানোর দাবি করেছেন।
গতকাল রাত পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ মিলিয়ে ২৩২ পদের বিপরীতে ১ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪৮৮ জন এবং ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের ২০৬টি পদের বিপরীতে ৬০০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র জমা
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে সকাল থেকেই ভিড় দেখা গেছে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে। এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সাদিয়া মাহসিন। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের এই শিক্ষার্থী বিজয় ২৪ হলের সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হারজিত থাকবেই। তবে এই উৎসবমুখর নির্বাচনে অংশ নিয়ে খুব ভালো লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনের শেষ সময়ে এমন আয়োজনের অংশ হতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে।’
আজ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটসহ ক্যাম্পাসে সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর শীর্ষ পদে থাকা কাউকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখা যায়নি।
আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর এবং চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।