শালবনে আকাশছোঁয়া গিলালতা, পর্যটকের ভিড়
Published: 27th, August 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নে জোতমাধব গ্রামের শালবনে ছড়িয়ে আছে প্রকৃতির এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। মাটি থেকে শুরু করে চারটি লতা পেঁচিয়ে উঠে গেছে শালগাছের শীর্ষে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন আকাশে ওঠার সবুজ সিঁড়ি। শালবনের ভেতরে প্রবেশ করলে চোখে পড়ে এ লতার অপূর্ব বিস্তার। অনেকেই লতায় বসে ছবি তুলছেন।
এই গিলালতা গাছ শিম পরিবারের উদ্ভিদ, যা ১৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এর পাতা যৌগিক, প্রতিটি পত্রফলে ২ থকে ৮টি ছোট পাতা থাকে। মে মাসে ফোটে সাদা সরু পাপড়ির ফুল, আর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পাকে লাউয়ের মতো বৃহৎ সবুজ ফল, যার প্রতিটি ফলেই ১০ থেকে ১৫টি লালচে শক্ত বীজ থাকে। লতার কাণ্ড, পাতা, ছাল ও বীজে রয়েছে নানা ঔষধি গুণ। কিন্তু বাংলাদেশের বনাঞ্চল থেকে এটি বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নলকূপ মিস্ত্রি জালাল উদ্দীন বলেন, “আট বছর আগে লালমনিরহাট থেকে বীজ সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকেই গাছের জন্ম। প্রাথমিকভাবে রান্নার জন্য বীজ আনা হলেও, আমার স্ত্রী চারটি বীজ বেছে বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেছিলেন। কয়েক বছরের মধ্যে চারা বড় হয়ে গেলে তা শালবনে স্থানান্তর করা হয়।”
গিলালতার সবুজ চাঁদোয়া
তিনি আরো বলেন, “চারটি গাছের মধ্যে একটি স্ত্রী ও তিনটি পুরুষ গাছ। কেবল স্ত্রী গাছে ফল ধরে, যা প্রতিবছর গড়ে ১০০ থেকে ১৫০টি বীজ দেয়। প্রতিদিন এই লতা দেখতে শালবনে ভিড় করছেন নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোররা।”
দর্শনার্থী সোহেলী আক্তার বলেন, “এ ধরনের লতা আগে কখনো দেখিনি। মনে হয় যেন আকাশে ওঠার সবুজ সিঁড়ি। পরিবার নিয়ে এসেছি, দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে।”
দর্শনার্থী আব্দুল আজিজ বলেন, “বেশকিছু দিন থেকে ফেসবুকে এই গিলা লতা দেখছি। তাই আজ দেখতে এলাম। আসলে অদ্ভুত আকারের এই গাছ, দেখে মনে হচ্ছে লতাগুলো আকাশে উঠার সিঁড়ি। আমি মুগ্ধ হয়েছি।”
জোতবানী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সাজেদুর রহমান বলেন, “এই শালবনে যাতায়াত আগে কষ্টকর ছিল। তবে এখন রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধা ও গাছ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “শালবনের এই গিলালতা শুধু স্থানীয় পর্যটনের আকর্ষণ নয়। এটি একটা গবেষণার ক্ষেত্রেও হতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ সম্পদও হবে। প্রকৃতির আঁকা এক হাতের শিল্পকর্মের মতো। চারটি গিলালতা আজ পর্যটক ও গ্রামের মানুষের গর্বের কেন্দ্রবিন্দু।”
ঢাকা/মোসলেম/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের
তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের ওপর বিশ্ববরেণ্য ইসলামী বক্তা ড. জাকির নায়েককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট ডিগ্রি’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।
সোমবার (৩ নভেম্বর) এ দাবিতে ঢাবি উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ তথা জানান তারা।
আরো পড়ুন:
বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু
ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ড. জাকির নায়েক একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইসলামী চিন্তাবিদ ও মানবতাবাদী সংগঠক। তিনি শুধু ইসলাম প্রচারই করেননি, বরং মানবকল্যাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ইউনাইটেড এইড’ নামের সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো শিক্ষার্থী বৃত্তি ও সহযোগিতা পাচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি বিশ্বমঞ্চে মানবতার প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
তারা বলেন, ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকারের ষড়যন্ত্রে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হলেও মালয়েশিয়া তাকে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে গ্রহণ করেছে। এমন একজন মানবতাবাদী ও জ্ঞানচর্চার প্রতীক ব্যক্তিত্বকে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করে, তাহলে তা দেশের মর্যাদাকে আরো উজ্জ্বল করবে।
এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে ড. জাকির নায়েককে ডিগ্রি প্রদান করে দাবি জানান।
এছাড়া তারা ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি ক্রমবর্ধমান বুলিং, হ্যারাসমেন্ট ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জ্ঞানচর্চার স্থানে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণ ও অনলাইন বুলিং উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। আমরা উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় জেনেছি, ইতোমধ্যেই হ্যারাসমেন্ট ও সাইবার ট্যাগিং প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এসব কমিটি দ্রুত কার্যকর করতে হবে, যাতে অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী