পারিবারিক বিষয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছেলে ও পুত্রবধূ মিলে নিজের গর্ভধারিনী মা কাঞ্চন খাতুনকে (৭৫) অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মারধর ও নির্যাতনের সেই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছেলে এবং পুত্রবধূসহ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে।

শনিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের হাঁপানিয়া রামচন্দ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

আটককৃতরা হলেন- কাঞ্চন খাতুনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৫), পুত্রবধূ সোনালী খাতুন (৪০), ছেলের শ্যালক মনিরুজ্জামান (৪২), শ্যালিকা ফরিদা খাতুন (৩৮) ও মুরশিদা খাতুন (৩৬)।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। 

এ ঘটনায় কাঞ্চন খাতুনের ছোট মেয়ে আম্বিয়া খাতুন বাদি হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। নিজের মাকে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রিজু তামান্না জানান, বৃদ্ধ মাকে মারধরের ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে স্থানীয়রা সমস্যার সৃষ্টি করে। পরে ঘটনাস্থলে সেনা বাহিনীর টিম উপস্থিত হয়। সেনা বাহিনীর সহায়তায় অভিযুক্তদের আটক করা হয়। আটককৃতদের প্রথমে সেনা ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ওই নারীর মেয়ে আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে আমার মায়ের নামে কে যেন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ভাবির কাছে বলেছেন মা নাকি তাকে গালমন্দ করেছেন। সে কথা শুনেই ভাবি সরাসরি মাকে মাটিতে ফেলে বেদম মারধর করে। পরে আমার ভাইও এসে মাকে প্রচণ্ড মারধর করে। মায়ের শারিরীক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি মায়ের নির্যাতনের বিচার চাই।”

ভাইরাল হওয়া ফেসবুক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে বৃদ্ধ শাশুড়ি কাঞ্চন খাতুনকে (৭৫) তার পুত্রবধূ সোনালী মাটিতে ফেলে মারপিট করছে। দ্বিতীয় দফায় পুত্র নজরুল ইসলাম তার মায়ের গলাটিপে ধরছে। এক পর্যায় ছেলে মাকে উঁচু করে তুলে মাটিতে আছাড় মেরে ফেলে দিচ্ছে। বৃদ্ধা মা চিৎকার করে কান্নাকাটি করছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বৃদ্ধ মাকে মারপিটের ঘটনায় ছেলে ও তার পুত্রবধূসহ পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) সকালে আটককৃতদের পাবনা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ঢাকা/শাহীন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ত রবধ ফ সব ক ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

দুদকের অভিযান: ঘুষসহ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও সহকারী আটক

চট্টগ্রামে কাস্টমস হাউসে ফাঁদ অভিযান চা‌লি‌য়ে ঘুষের টাকাসহ দুজন‌কে হা‌তে না‌তে আটক ক‌রে‌ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আটককৃতরা হ‌লেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউ‌সের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় এবং তার সঙ্গী মাইনুদ্দীন। তা‌দের কাছ থে‌কে ৩০ হাজার ঘু‌ষের টাকা উদ্ধার করা হয়।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে ঘুষের টাকাসহ কাস্টমসের কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

ডিএসসি‌সির দুই কর্মকর্তাসহ ৬ জন‌কে আসা‌মি ক‌রে মামলা

মঙ্গলবার গোপন সংবাদ সংবা‌দের ভি‌ত্তি‌তে দুর্নীতি দমন কমিশন, চট্টগ্রাম-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি টিম এই অ‌ভিযান প‌রিচালনা ক‌রে।

দুদক জানায়, হোমল্যান্ড প্লাস্টিক স্যু ইন্ডাস্ট্রিজ-এর প্রোপাইটর আমির হোসেন জাপান থেকে আমদানি করা ব্রেক অ্যাক্রিলিক মিক্সড প্লাস্টিক ওয়াস্ট এন্ড স্ক্র্যাপ (মূল্য ৬ হাজার ৪২৮.১০ মার্কিন ডলার) ছাড়করণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করলে চট্টগ্রাম কাস্টম‌সের শুল্কায়ন সেকশন-৭(বি) -এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় ও মো. ছারওয়ার উদ্দিন ইচ্ছাকৃতভাবে হয়রানি করে নির্ধারিত রেটের বাইরে অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং টাকা প্রদান না করলে পণ্য ছাড়করণে বিলম্ব ও নিলামে বিক্রির হুমকি দেন।

উক্ত হুমকির প্রেক্ষিতে হোমল্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রির প্রোপাইটার আমির হোসেন রাজস্ব কর্মকর্তাদের এরূপ দুর্নীতিমূলক ঘুষ দাবির বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম কার্যালয়কে অবহিত করেন।

কমিশনের জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধির আলোকে ঘুষ দাবিকারী শুল্ক বিভাগের রাজস্ব কর্মকর্তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং এ বিষয়ে কমিশনের অনুমোদন গ্রহণ করে।

অভিযানকালে দুদকের বিশেষ টিম অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছদ্মবেশে ঘুষ লেনদেন পর্যবেক্ষণ করে। এ সময় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় এবং তার সঙ্গী মাইনুদ্দীনকে ঘুষের টাকা ৩০ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযান শেষে আলামতের জব্দ তালিকা প্রণয়ন, স্বাক্ষীদের বক্তব্য গ্রহণসহ সকল আইনানুগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে মামলা রুজুপূর্বক আটককৃতদের থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকালে উক্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুদকের অভিযান: ঘুষসহ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও সহকারী আটক