বৃদ্ধা মাকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল: ছেলে- পুত্রবধূসহ আটক
Published: 31st, August 2025 GMT
পারিবারিক বিষয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছেলে ও পুত্রবধূ মিলে নিজের গর্ভধারিনী মা কাঞ্চন খাতুনকে (৭৫) অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মারধর ও নির্যাতনের সেই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছেলে এবং পুত্রবধূসহ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের হাঁপানিয়া রামচন্দ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন- কাঞ্চন খাতুনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৫), পুত্রবধূ সোনালী খাতুন (৪০), ছেলের শ্যালক মনিরুজ্জামান (৪২), শ্যালিকা ফরিদা খাতুন (৩৮) ও মুরশিদা খাতুন (৩৬)।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় কাঞ্চন খাতুনের ছোট মেয়ে আম্বিয়া খাতুন বাদি হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। নিজের মাকে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে।
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রিজু তামান্না জানান, বৃদ্ধ মাকে মারধরের ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে স্থানীয়রা সমস্যার সৃষ্টি করে। পরে ঘটনাস্থলে সেনা বাহিনীর টিম উপস্থিত হয়। সেনা বাহিনীর সহায়তায় অভিযুক্তদের আটক করা হয়। আটককৃতদের প্রথমে সেনা ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ওই নারীর মেয়ে আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে আমার মায়ের নামে কে যেন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ভাবির কাছে বলেছেন মা নাকি তাকে গালমন্দ করেছেন। সে কথা শুনেই ভাবি সরাসরি মাকে মাটিতে ফেলে বেদম মারধর করে। পরে আমার ভাইও এসে মাকে প্রচণ্ড মারধর করে। মায়ের শারিরীক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি মায়ের নির্যাতনের বিচার চাই।”
ভাইরাল হওয়া ফেসবুক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে বৃদ্ধ শাশুড়ি কাঞ্চন খাতুনকে (৭৫) তার পুত্রবধূ সোনালী মাটিতে ফেলে মারপিট করছে। দ্বিতীয় দফায় পুত্র নজরুল ইসলাম তার মায়ের গলাটিপে ধরছে। এক পর্যায় ছেলে মাকে উঁচু করে তুলে মাটিতে আছাড় মেরে ফেলে দিচ্ছে। বৃদ্ধা মা চিৎকার করে কান্নাকাটি করছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বৃদ্ধ মাকে মারপিটের ঘটনায় ছেলে ও তার পুত্রবধূসহ পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) সকালে আটককৃতদের পাবনা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ত রবধ ফ সব ক ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ