শরতের শুরুতে শাপলায় সেজেছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের খোয়াড় গ্রামের বিলাঞ্চল। থইথই স্বচ্ছ জলে ফোটা সাদা শাপলার মনমাতানো দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন শত শত পর্যটক ভিড় করছেন এখানটায়। 

প্রকৃতি যেন তার সমস্ত সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে এই গ্রামে। পর্যটকরা কেউ ক্যামেরায় এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ধারণ করছেন, আবার কেউবা নৌকায় চড়ে শাপলার শান্ত সৌন্দর্যের সাথে নিজেদের একাত্মতা প্রকাশ করছেন।

ঢাকা থেকে আসা দর্শনার্থী মো.

আবিদ বলেন, “শহরের কোলাহল ছেড়ে এমন শান্ত পরিবেশে এসে মন ভরে গেল। শাপলার সাদা রং আর চারপাশের সবুজে এক অন্যরকম শান্তি পাচ্ছি।” 

স্থানীয় কলেজের ছাত্রী রিতা আক্তার বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখানকার ছবি দেখে এসেছিলাম। বাস্তবে এর সৌন্দর্য আরও হাজার গুণ বেশি।” 

গ্রামের বাসিন্দা মো. হেমায়েত ফকির বলেন, “শাপলার ফুলে গ্রামের সৌন্দর্য বহুগুণ বেড়ে যায়। এটি আমাদের গ্রামের মানুষের সরলতার প্রতিচ্ছবি।”

স্থানীয় বাসিন্দা আবু মুসা জানান, শুকনো মৌসুমে এই জমিতে পেঁয়াজ ও পাটের চাষ হয়। বর্ষা এলে প্রাকৃতিকভাবেই এখানে শাপলার জন্ম হয়, যা গ্রামের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। শাপলা শুধু সৌন্দর্যই নয়, জীবিকারও মাধ্যম। এখানকার তরুণ ও যুবকরা শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন। এতে করে অনেক বেকার যুবকও স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, “বর্ষা ও শরৎকালে খাল-বিলে শাপলা ফোটে। এ ফুল শুধু সৌন্দর্যই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। শাপলার ডাটায় ভিটামিন, খনিজ ও আঁশ রয়েছে। ফুলের বীজ ও গুঁড়ো দিয়ে তৈরি খই বেশ সুস্বাদু।” 

তিনি জানান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন যদি এই সৌন্দর্য রক্ষায় উদ্যোগ নেয়, তবে খোয়াড় গ্রাম ভ্রমণপিপাসুদের জন্য তীর্থস্থানে পরিণত হতে পারে।

যারা প্রকৃতির অকৃত্রিম সৌন্দর্য এবং গ্রামীণ জীবনের সরলতা উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য খোয়াড় গ্রাম একটি দারুণ পছন্দ হতে পারে।

ফরিদপুর শহর থেকে বাস বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ৮-১০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ঠেনঠেনিয়া বা বালিয়াগটি বাজারে নেমে অটোরিকশা বা ভ্যানে করে খোয়াড় গ্রামে পৌঁছানো যায়। শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন গ্রামটি।

ঢাকা/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র স ন দর য শ পল র

এছাড়াও পড়ুন:

চিকিৎসার অভাবে শ্রমিক মৃত্যুর অভিযোগ, বন্দরে মহাসড়ক অবরোধ

অসুস্থ শ্রমিককে ছুটি না দেওয়া, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহাসড়কের মদনপুর অংশে তারা এ অবরোধ করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিচারের আশ্বাসে এগারোটায় মহাসড়ক থেকে সরে যায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। 

শ্রমিকরা জানান, 'লারিস ফ্যাশন' নামে একটি রপ্তানিমুখি গার্মেন্টসের নারী শ্রমিক রিনা (৩০) অসুস্থ অবস্থায় ডিউটি করে যাচ্ছিলেন। গতকাল তিনি অসুস্থতা বোধ করলে কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। তবে কর্তৃপক্ষ তার আবেদনে কোনো সাড়া না দিয়ে কাজ করে যেতে বাধ্য করেন। পরে অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে সহকর্মীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শ্রমিক রিনা কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার দুলালের মেয়ে। অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ এ মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। 

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সড়িয়ে দেন। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ও পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ