রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি শাখার কর্মকাণ্ড দেশের ভাবমূর্তির ক্ষতি করছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 11th, January 2025 GMT
রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি শাখার কর্মকাণ্ড দেশের ভাবমূর্তি ও ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, পৃথিবীর কোনো দেশের রাজনৈতিক দলের এত শাখা বা কর্মী নেই। বিশেষ করে বিএনপি, আওয়ামী লীগ এবং জামায়াত—ক্ষেত্রবিশেষে জাতীয় পার্টিরও সারা বিশ্বে শাখা আছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। সেন্টার ফর এনআরবি আজ শনিবার সকালে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে কয়েকটি বড় রাজনৈতিক দল আছে। তারা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। কারণ, পৃথিবীর কোনো রাজনৈতিক দলের এত শাখা, কর্মী নেই। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াত, ক্ষেত্রবিশেষে জাতীয় পার্টির সারা বিশ্বে যত শাখা আছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে দুই দল, তিন দল প্রচণ্ড শত্রুভাবাপন্ন; একই রকম শত্রুভাবাপন্ন আমাদের প্রবাসীরা, যাঁরা এসব দলের শাখাগুলোতে আছেন। এ রকম কী পৃথিবীর কোনো দেশের ক্ষেত্রে আপনারা দেখেছেন? কেউ একজন দেশ থেকে যায়, আর তাঁকে ডিম ছোড়ার জন্য বা তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার জন্য বিরাটসংখ্যক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে? ইস্যুভিত্তিক না, স্রেফ ব্যক্তি এবং দলভিত্তিক যে প্রতিক্রিয়া হয়—এটা বিরাট ক্ষতি করছে আমাদের ইমেজের (ভাবমূর্তি) ক্ষেত্রে, আমাদের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে।’
ভারতের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী কোথাও গেলে সেখানে দুয়োধ্বনি দেওয়ার জন্য কেউ দাঁড়িয়ে থাকে না। আমাদের এখানে হয়। এটা চিরদিন হয়ে আসছে। এটা থেকে আমাদের বের হতে হবে। দ্বিতীয়ত, ভারতীয়রা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, আমরা পাই না কেন? কারণ, আমরা স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত হই খুব কম।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে, সেদিকে তাকান। কত ভারতীয় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে চলে আসছেন। আমাদের ক্ষেত্রে কতটুকু হয়, বরং পাকিস্তানে কিছুটা হচ্ছে। বাংলাদেশিরা টাওয়ার হেমলেটসে কিছু হয়েছে, যুক্তরাজ্যে কয়েকজন এমপি আছেন, এটা হলো বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ের…। ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য আমাদের অবশ্যই ভালো কাজ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, এনআরবিদের ভূমিকা বিশ্বে ইতিবাচক, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচকও আছে। সেদিকে নজর দিতে হবে। একজন ট্যাক্সিচালকের গাড়িতে ভুল করে কেউ যদি বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেলে রেখে যায় এবং তিনি সেটা তার মালিককে খুঁজে বের করে ফেরত দেন—এই ঘটনা কিন্তু ভাবমূর্তি অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু যখন দেখা যায়, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে যারা মারা যায় কিংবা উদ্ধার হয় তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ বাংলাদেশের, তখন ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।
এনআরবি চেয়ারপারসন এম এস সেকিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সভাপতি আবদুল হাই সরকার, ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সাবেক ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি ঘিরে উত্তেজনা এখন চূড়ান্তে। ২-১ ব্যবধানে সিরিজে ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকলেও পঞ্চম ও শেষ টেস্টটি একটি পরিণতির লড়াই হিসেবে সমাসন্ন। তবে ঠিক এই সময়েই বড় দুঃসংবাদ এসে আঘাত হেনেছে ইংলিশ ড্রেসিংরুমে। ইনজুরিতে পড়ে সিরিজ নির্ধারণী ওভাল টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন অধিনায়ক বেন স্টোকস।
বুধবার (৩০ জুলাই) ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, ওভালে মাঠে নামা হচ্ছে না স্টোকসের। ম্যানচেস্টারে চতুর্থ টেস্টে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তিনি। ব্যাটে-বলে সমান পারদর্শী স্টোকস ছিলেন দলের ভারসাম্য ধরে রাখার অন্যতম স্তম্ভ। তার অনুপস্থিতি তাই শুধু একজন খেলোয়াড়কে হারানো নয়, বরং একটি জয়ের প্রত্যয়ের বড় চ্যাপ্টারও হারানো।
এই ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাবেন ওলি পোপ। যিনি প্রথমবারের মতো সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় দলের।
আরো পড়ুন:
শেষ ম্যাচের আগে ভারতের শিবিরে ধাক্কা, বিশ্রামে বুমরাহ
ওভাল টেস্টের ইংল্যান্ড দল ঘোষণা, ওভারটনের প্রত্যাবর্তন
স্টোকস ছাড়াও ওভাল টেস্টে দেখা যাবে না জোফরা আর্চার, ব্রাইডন কার্স ও লিয়াম ডসনকে। চোট ও ফিটনেস ইস্যুর কারণে তারা বাদ পড়েছেন স্কোয়াড থেকে।
অবশ্য একাদশে ফিরেছেন দুই পরিচিত মুখ জশ টাঙ ও জেমি ওভারটন। বিশেষ নজর কেড়েছেন গাস অ্যাটকিনসন। যিনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মে মাসে খেলার পর হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ছিলেন মাঠের বাইরে। সারে কাউন্টির হয়ে ফের মাঠে ফিরে জায়গা পেয়েছেন জাতীয় দলে। ইংল্যান্ডের পেস বিভাগে তার উপস্থিতি বাড়াবে গতি ও ধার।
চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন বেন স্টোকস। চার ম্যাচে তার ঝুলিতে ১৭ উইকেট। ম্যানচেস্টার টেস্টে ভারতের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার ও ব্যাটে সেঞ্চুরি করে একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছিলেন। লর্ডসেও দুই ইনিংস মিলিয়ে রান করেছেন ৭৭, নিয়েছেন আরও পাঁচ উইকেট।
তাই ইংলিশ শিবির শুধু একজন ব্যাটার বা একজন বোলার হারায়নি, তারা হারিয়েছে একজন পূর্ণাঙ্গ ম্যাচ উইনারকে। স্টোকসের মতো একজন অলরাউন্ডার যিনি প্রয়োজনের সময় ছায়ার মতো আক্রমণে নেতৃত্ব দেন এবং ব্যাট হাতে গড়েন ম্যাচের ভিত, তার অভাব যে দলকে নাড়া দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ:
জ্যাক ক্রাউলি, বেন ডাকেট, ওলি পোপ (অধিনায়ক), জো রুট, হ্যারি ব্রুক, জ্যাকব বেথেল, জেমি স্মিথ (উইকেটকিপার), ক্রিস ওকস, গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন ও জশ টাঙ।
ঢাকা/আমিনুল