রংপুরে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা বিচার, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিকদের হত্যার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে সমাবেশ করেছেন সাংবাদিকেরা। তাঁরা বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব নিবর্তনমূলক আইন বাতিল, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মিথ্যা মামলা ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

আজ শনিবার রংপুর টাউন হলে দিনব্যাপী সাংবাদিক সমাবেশে এসব দাবি করেন রংপুর বিভাগে কর্মরত সাংবাদিকেরা। রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরপিইউজে) আয়োজনে সকালে এ সমাবেশের উদ্বোধন করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামানের (প্রিয়) মা শামসি আরা জামান।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে টাকা দেওয়া হলেও সাংবাদিকেরা টাকা পাননি। ফ্যাসিস্ট–বিরোধী লড়াইয়ে যে সাংবাদিকেরা ছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে টাকা পাবেন।

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী। তিনি বলেন, অধিকাংশ গণমাধ্যম এখন দলীয় লিফলেট কিংবা উদ্দেশ্যমূলক পত্রিকা হিসেবে বের হচ্ছে। এই মিডিয়াগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অথবা ব্যবসায়িক ঢাল হিসেবে। কিন্তু সেটি হওয়ার কথা ছিল না। বাংলাদেশে বাস্তবিক অর্থে যদি বলি, একটি ক্ষমতামুখী সাংবাদিকতা চলছে। যার উদ্দেশ্যে হলো ক্ষমতাশালীদের তোষামোদী করে অর্থবিত্তের মালিক হওয়া।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মমতাজ শিরিন ভরসা, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল প্রমুখ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক এবং সঞ্চালনা করেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান। সরকার মাজহারুল মান্নান গত সরকারের সময়ে রংপুর বিভাগের সাংবাদিকদের নামে হয়রানিমূলক ও মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানান। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের বেতন–ভাতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের অভিযোগে হাকিমির বিচার দাবি ফরাসি কৌঁসুলিদের

২০২৩ সালে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল পিএসজি তারকা আশরাফ হাকিমির বিচার করার দাবি তুলেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। মরক্কোর এই রাইটব্যাক অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।

নঁতের কৌঁসুলি অফিস বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, তদন্তে নিয়োজিত বিচারককে ধর্ষণের এই অভিযোগ ফৌজদারি আদালতে তোলার অনুরোধ করেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। কৌঁসুলি অফিস থেকে এএফপিকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজের আদেশ কাঠামোর ভেতরে থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার এখন তদন্তে নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর।’

আরও পড়ুননিষেধাজ্ঞা মেসির পিছু ছাড়ছে না, এবার নিষিদ্ধ হলেন তাঁর দেহরক্ষী৫৭ মিনিট আগে

গত মে মাসে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে পিএসজির ৫–০ গোলের জয়ে বড় অবদান ছিল হাকিমির। পিএসজির প্রথম গোলটি ২৬ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়ের। সর্বশেষ ২০২২ বিশ্বকাপেও প্রথম আরব দেশ হিসেবে মরক্কোর সেমিফাইনালে ওঠায় দারুণ অবদান ছিল হাকিমির। ২০২৩ সালের মার্চে ২৪ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি অভিযোগকারীকে প্যারিসের উপকণ্ঠে বুলান–বিয়ানকুতে অবস্থিত নিজের বাসায় আসার খরচ দেন। তখন হাকিমির স্ত্রী ও সন্তান ছুটি কাটাতে বাইরে ছিলেন। অভিযোগকারী সেই নারী এরপর পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাকিমির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এবং তখন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। সেই নারী আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে না চাইলেও কৌঁসুলিরা হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।

পুলিশকে অভিযোগকারী নারী তখন জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইনস্টাগ্রামে হাকিমির সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেই রাতে ট্যাক্সি করে হাকিমির বাসায় তিনি গিয়েছিলেন এবং ভাড়াটা পিএসজি তারকাই দেন। পুলিশকে সেই নারী বলেছিলেন, হাকিমি সম্মতি ছাড়াই তাঁর শরীর স্পর্শ করেন এবং তারপর ধর্ষণ করেন। পুলিশের এক সূত্রও তখন এএফপিকে এ কথা জানায়। এক বন্ধুকে ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে আসতে বলেছিলেন সেই নারী। পরে সেই বন্ধু এসে তাঁকে নিয়ে যান।

আরও পড়ুনরিয়াল মাদ্রিদ ছাড়তে চান না কোনো খেলোয়াড়, ‘বেকায়দায়’ ক্লাব কর্তৃপক্ষ২ ঘণ্টা আগে

কৌঁসুলিরা গতকাল হাকিমির বিচারের দাবি তোলার পর তাঁর আইনজীবী ফ্যানি কোলিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এএফপি। তাঁর মতে, কৌঁসুলিদের এ সিদ্ধান্ত, ‘মামলার উপকরণ বিচারে বোধগম্য নয় এবং অর্থহীন। আশরাফ হাকিমিসহ আমরা শান্তই আছি এবং আমরা প্রক্রিয়ার শুরুতে ছিলাম। আমরা অবশ্যই আপিলের সব রকম পথই বের করব।’ কোলিন দাবি করেন, তাঁর মক্কেল, ‘পরিকল্পিতভাবে অন্যায় দাবির শিকার’।

অভিযোগকারী নারীর আইনজীবী র‌্যাচেল–ফ্লোর প্রাদো এএফপিকে বলেছেন, ‘এই মামলার কোনো কিছুতেই অন্যায় দাবির আলামত নেই। আমার মক্কেল এ খবরে (হাকিমিকে বিচারের সন্মুখীন করা) অনেক স্বস্তি পেয়েছে।’

গত মৌসুমে পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল জয়ে দারুণ ভূমিকা ছিল হাকিমির

সম্পর্কিত নিবন্ধ