প্রশ্নের উত্তরে সব সময় ভেতরকার ব্যাপারটা ধরা যায় না। কারণ, উত্তর কখনো কখনো আনুষ্ঠানিকও হয়। ক্রীড়াঙ্গনের কথাই ধরুন, কোনো ক্রিকেটারের দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে এবং সে বিষয়ে জানতে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে সব সময় ভেতরকার ব্যাপারটা না–ও বেরিয়ে আসতে পারে। খেলোয়াড় থেকে বোর্ড—সবাইকেই নিয়মনীতি মেনে কথা বলতে হয়। কিন্তু কখনো কখনো ঠিক উল্টোটাও ঘটে। সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে খেলোয়াড়ের পাল্টা প্রশ্নে ভেতরকার বিষয়টি সবাই ধরে ফেলেন!

আরও পড়ুনবুমরাই ডিসেম্বরের মাসসেরা৫১ মিনিট আগে

পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) গতকালের ড্রাফটে ঠিক এমন এক ঘটনাই ঘটেছে। ব্যাপারটি পাকিস্তানের তারকা পেসার শাহিন আফ্রিদিকে নিয়ে। বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলে পাকিস্তানে উড়াল দিয়েছেন পিএসএলের দল লাহোর কালান্দার্সের এই তারকা পেসার। ড্রাফটে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে পাল্টা প্রশ্ন করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ পড়ার বিষয়ে ভেতরকার ব্যাপারটাই সম্ভবত ফাঁস করে দিলেন আফ্রিদি!

ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির শুরুতে শেষ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই টেস্টের সিরিজে আফ্রিদিকে দলে রাখেনি পাকিস্তান। সিরিজটি ২–০ ব্যবধানে তারা হেরেছে। এ সিরিজে আফ্রিদির বাদ পড়া নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) জানিয়েছিল, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পূর্ণ ফিট হিসেবে পেতে তাঁকে টেস্ট সিরিজে রাখা হয়নি।

যদিও সে সময় পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ক্রিকেট পাকিস্তান জানিয়েছিল, বিশ্রাম নয়, নির্বাচকদের ‘অবাধ্য’ হওয়ায় আফ্রিদিকে টেস্ট সিরিজে দলে রাখা হয়নি। এসব নিয়ে তখন পক্ষে–বিপক্ষে বেশ একপশলা বিতর্কও হয়েছিল।

আরও পড়ুনদল না পেয়ে ক্ষোভে চিরতরে পিএসএল বর্জনের ঘোষণা পাকিস্তানি ফাস্ট বোলারের১ ঘণ্টা আগে

শুধু কি তা–ই, শুক্রবার থেকে মুলতানে শুরু হতে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে আফ্রিদিকে দলে রাখেননি পাকিস্তানের নির্বাচকেরা। তো পিএসএলের ড্রাফটে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ পড়া নিয়ে জানতে চান, ‘শাহিন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে আপনাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও দলে নেই।’

সাংবাদিক এটুকু বলতেই মাইক্রোফোন একটু টেনে পাল্টা তাঁকে প্রশ্ন করেন শাহিন আফ্রিদি, ‘বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল? এটুকু বলে মিটিমিটি হাসছিলেন বাঁহাতি এই পেসার। সাংবাদিক তখন নিজের প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় আফ্রিদি বলেন, ‘আপনার প্রশ্নটি ভালো ছিল।’ এরপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য দোয়াও চান তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজে খেলা আফ্রিদিকে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে ‘ওয়ার্ক লোড’–এর কথা জানিয়েছিল পিসিবি। ক্রিকেট পাকিস্তান সে সময় জানিয়েছিল, টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণার আগে এক নির্বাচক আফ্রিদিকে ৪ দিনের একটি ম্যাচ খেলতে বলেছিলেন। কোনো কারণে সেটি খেলেননি আফ্রিদি। এমন অবাধ্যতার কারণেই সেই টেস্ট সিরিজের দলে জায়গা পাননি আফ্রিদি।

আরও পড়ুনপিএসএল নিয়ে ইসিবির মুখোমুখি ইংলিশ ক্রিকেটাররা২ ঘণ্টা আগে

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও তাঁর ও নাসিম শাহর বাদ পড়া নিয়ে নির্বাচকদের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানায়, ‘নির্বাচকেরা শাহিন ও নাসিমকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেরা অবস্থায় পেতে চান, এটা ৫০ ওভারের প্রতিযোগিতা এবং আমরা সেখানে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন।’ ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি।

বিপিএলে এবার ফরচুন বরিশালে খেলেছেন শাহিন আফ্রিদি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের ক্রিকেট নিয়ে সাকিবের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে মিরাজের

প্রায় দেড় যুগ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে সমানভাবে পারফর্ম করেছেন সাবেক এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আর দেশেও ফিরতে পারেননি সাকিব। বয়স ৩৮ হওয়ায় জাতীয় দলে তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।

তবে এখনো সাকিবের ভাবনাজুড়ে রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। এমনটা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। কিছু দিনে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সের হয়ে সাকিবের সঙ্গে খেলেছেন মিরাজ। 

সেখানেই দেশের ক্রিকেট নিয়ে সাকিবের সঙ্গে অনেক কথা হয়েছে মিরাজের। নাজমুল হোসেন শান্তকে সরিয়ে এক বছরের জন্য ওয়ানডে অধিনায়ক করা হয়েছে মিরাজকে। ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর শুক্রবার (১৩ জুন) শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আসেন মিরাজ। 

এ সময় সাকিবের সঙ্গে আলাপ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে পিএসএল খেলেছি। তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। উনি (সাকিব আল হাসান) মন থেকে চান বাংলাদেশ ক্রিকেট এগিয়ে যাক। যারা এখন নতুন, উঠতি খেলোয়াড়, তারা যেন ভালো ক্রিকেট খেলে।’

সাকিবের বার্তাটা ছিল পরিষ্কার—সফল হতে হলে সবাইকে একসঙ্গে খেলতে হবে। ‘বলেছে যে অবশ্যই দল হিসেবে একসঙ্গে খেলতে হবে। কারণ, বাংলাদেশ দল যখন একসঙ্গে পারফর্ম করে, তখনই ভালো ফল আসে,’ যোগ করেন মিরাজ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী বছরে কি আবার আইপিএল-পিএসএল সংঘাত
  • দেশের ক্রিকেট নিয়ে সাকিবের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে মিরাজের