আনসার বাহিনীকে আরো প্রশিক্ষিত করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 15th, January 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘‘দেশে বর্তমানে আনসার-ভিডিপির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬১ লাখ। এই বিপুল সদস্যের আনসার বাহিনীকে আরো প্রশিক্ষিত করে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আনসার বাহিনীর প্রশিক্ষণেও বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে। মৌলিক অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণসহ সবাইকে বিভিন্ন কর্মমুখী ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশের সংকটময় সময়ে তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক)-সহ বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।’’
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সদর দপ্তরে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আনসার সদস্যরা রাষ্ট্রের যে কোনো সংকট ও দুর্যোগে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা প্রদান, নির্বাচনি দায়িত্ব পালন, কেপিআই স্থাপনার সুরক্ষাসহ দেশ সেবায় আনসার সদস্যরা সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আনসার সদস্যদের সুযোগ-সুবিধার কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আমরা সেগুলোর সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে অঙ্গীভূত আনসাররা ৩ বছর চাকরির পর ৬ মাসের জন্য যে বিশ্রামে যেতে হত বা কর্মহীন হয়ে যেত, সে প্রথা অর্থাৎ রেস্ট প্রথা বাতিল করা হয়েছে।’’
ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচাররোধে সাংবাদিকদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের সম্বন্ধে অনেক আজেবাজে কথা বলত বা অপপ্রচার করত। আপনারা সঠিক সংবাদ পরিবেশন করে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের ভালো জবাব দিয়েছেন। আপনাদের সঠিক ও সময়োপযোগী ভূমিকা রাখার কারণে তাদের অপপ্রচার অনেকটা বন্ধ হয়েছে। সেজন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’’
উপদেষ্টা এ সময় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় আরো মনোযোগী হওয়ার জন্য উপস্থিত সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান। এটি করতে পারলে দেশ ও জনগণের জন্য উপকারী হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এ সময় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ পিএসসি উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র সদস য উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
২ থেকে ৫ টাকার সবজিও পাওয়া যায় গোলবানুর দোকানে, ছাত্রীরাই একমাত্র ক্রেতা
চারপাশ খোলা, বাঁশ ও কাগজের ছাউনি দিয়ে একটি ঝুপড়ি দোকানে প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে আছেন ষাটোর্ধ্ব এক নারী। জীর্ণশীর্ণ কাপড় ও শরীর দেখে যে কেউ ভাবতে পারেন, তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন। তাঁর সামনে ছয় থেকে সাত রকমের শীতকালীন সবজির পসরা সাজানো আছে। ছুটির দিন থাকায় কিছুক্ষণ পরপর ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। দাঁড়িপাল্লা দিয়ে ওজন করে তাঁদেরকে ব্যাগে করে সবজি দিচ্ছেন ওই নারী। বিক্রয়মূল্য নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে দরদাম করতেও দেখা যায় তাঁকে।
শনিবার সকালে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক প্রথম ছাত্রী হলের পাশে বেশ কিছুক্ষণ এ দৃশ্য দেখার পর কথা হয় ওই নারীর সঙ্গে। তিনি জানালেন, তাঁর নাম গোলবানু। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ১১ ছিল। সে অনুযায়ী এখন তাঁর বয়স ৬৩ হবে। স্বামী জমশেদ আলী অসুস্থ। পরিবারের সদস্য ১১ জন। এর মধ্যে তাঁর এক ছেলে, ছেলের বউ, ছেলের সন্তান, অসুস্থ স্বামীসহ মোট পাঁচজন সদস্য আছেন। অন্যদিকে বিবাহিত মেয়ের স্বামী শারীরিকভাবে রোগাক্রান্ত হওয়ায় তাঁর সন্তানসহ পরিবারের ছয় সদস্য গোলবানুর পরিবারেই থাকেন। গোলবানুর ছেলে দিনমজুরির কাজ করেন। তবে সব দিন কাজ মেলে না। মেয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন টিয়রবাড়ি এলাকায় তাঁরা বসবাস করেন।
গোলবানুর দোকানের ক্রেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্রীরা। ছাত্রীদের কেউ কেউ গোলবানুকে ‘খালা’, কেউ ‘মামি’ বলে সম্বোধন করেন। হলে ব্যক্তিগতভাবে রান্না করার সুযোগ থাকায় ছাত্রীদের অনেকেই নিজের খাবার নিজেই তৈরি করেন। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে সবজি আনতে গিয়ে সময় এবং বাড়তি অর্থ গুনতে হয় তাঁদের। সে জন্য অধিকাংশ ছাত্রীই গোলবানুর কাছ থেকে তরকারি কেনেন।
শনিবার ক্যাম্পাসে ছুটির দিন থাকায় সবজি-তরকারি একটু কম পরিমাণে নিয়ে আসেন গোলবানু। আড়ত থেকে ওই দিন তিনি এক টুকরি টমেটো, ৫ কেজি আলু, ৬ কেজি শিম, ১৫ কেজি বেগুন, ২৪টি ফুলকপি, ১০টি বাঁধাকপি, ৫ কেজি পেঁয়াজের ডাঁটা, ৫ কেজি গাঁজর, আড়াই কেজি কাঁচা মরিচ, ১ কেজি ধনেপাতা, কয়েক আঁটি পুঁইশাক ও লালশাক এনেছেন বলে জানান। এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁর অর্ধেক বিক্রি হয়েছিল।
গোলবানুর দোকানের ক্রেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্রীরা