Samakal:
2025-05-01@11:20:25 GMT

মেক্সিকান নারীদের গল্প

Published: 16th, January 2025 GMT

মেক্সিকান নারীদের গল্প

মেক্সিকোর কুখ্যাত এক মাদকসম্রাট এমিলিয়া পেরেজ। তাঁর জীবনজুড়ে আছে অসংখ্য অপরাধ, ক্ষমতার লড়াই এবং প্রতিশোধের গল্প। হঠাৎ একদিন এমিলিয়া নিজের পুরুষ পরিচয় থেকে নারীতে রূপান্তরিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমন গল্প নিয়ে ফরাসি নির্মাতা জ্যাক অঁদিয়ার বানিয়েছেন ‘এমিলিয়া পেরেজ’। এই রূপান্তরের পেছনে এমিলিয়ার লক্ষ্য ছিল নতুন পরিচয়ে জীবন শুরু করা এবং অপরাধ জগৎ থেকে বেরিয়ে আসা।

কিন্তু তাঁর এ সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন মুক্তির স্বাদ দেয়, অন্যদিকে তাঁকে আরও গভীর সংকটেও ফেলে। পুরোনো পরিচয় তাঁকে ছেড়ে যেতে চায় না এবং শত্রুরা তাঁর নতুন পরিচয় আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যায়। এই চরিত্র ছাড়াও এ সিনেমায় দেখানো হয়েছে আরও তিন প্রতিষ্ঠিত নারীর গল্প। যারা নিজের মতো করে সুখী হতে চায়।

সিনেমাটি নিয়ে শুরুতে ততটা আলোচনা না হলেও, গত বছর কান উৎসবে ছবিটির প্রিমিয়ারের পর প্রশংসিত হয়েছিল। এ ছবির অন্যতম চার নারীর ভূমিকায় অভিনয়ের সুবাদে আদ্রিয়ানা পাজ, কার্লা সোফিয়া গাসকোন, সেলেনা গোমেজ ও জোয়ি সালদানা– এই চারজন কানের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান।  এরপর থেকেই ছবিটি নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়। কিন্তু এই মিউজিক্যাল কমেডি যে এতটা সমাদৃত হবে, কে ভেবেছিল! গোল্ডেন গ্লোবে সর্বোচ্চ ১০টি মনোনয়ন পায় সিনেমাটি। মনোনয়নের মতোই গোল্ডেন গ্লোবের মূল আসরে সর্বোচ্চ চার পুরস্কার জিতেছে ‘এমিলিয়া পেরেজ’।

হলিউডের একাধিক চলচ্চিত্র সমালোচকরা সিনেমাটিকে শুধু একটি অপরাধ জগতের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের পুনর্জন্ম এবং নিজেকে খুঁজে পাওয়ার গল্প হিসেবেও বলেছেন। সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কার্লা সোফিয়া গাসকোন। চলতি গোল্ডেন গ্লোবের ইতিহাসে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী হিসেবে সেরা অভিনেত্রী (মিউজিক্যাল অথবা কমেডি) বিভাগে মনোনীত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন। তাই পুরস্কার বিতরণের মঞ্চে তিনি বলেন, ‘অন্ধকারকে দমিয়ে আলো সবসময়ই জয়ী হয়। আমাদের প্রাণ, অস্তিত্ব কিংবা পরিচয় কেড়ে নিতে পারবে না কেউই।’

চিত্রনাট্য, অভিনয় আর নির্মাণের কারণে রটেন টোমাটোজে ছবিটির গড় রেটিং ৭৬ শতাংশ। বেশির ভাগ সমালোচকই ছবিতে কার্লা সোফিয়া গাসকোনের অভিনয়কে অন্যতম সেরা বলে রায় দিয়েছেন। টাইম সাময়িকীর মতে, ‘এটা খ্যাপাটে একটা ছবি, নিঃসন্দেহে বছরের সেরা মিউজিক্যাল।’ কেবল পেশাদার সমালোচকরাই নন, গত বছর ছবিটির প্রশংসা করেছেন অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ, এমিলি ব্লান্ট, ইভা লঙ্গোরিয়া, গায়িকা ম্যাডোনা, নির্মাতা গিয়ের্মো দেল তোরো, মাইকেল মানরা। টাইম, সাইট অ্যান্ড সাউন্ডসহ বিভিন্ন সাময়িকী গত বছরের সেরা ছবির তালিকায় রেখেছিল ‘এমিলিয়া পেরেজ’কে।

ছবিটি নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। বিশেষ করে মেক্সিকোতে। দেশটির নানা নেতিবাচক বিষয় তুলে ধরায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক রোষের মুখে পড়েন নির্মাতা। দেশটির অনেক চিত্রসমালোচকও মনে করেন, ছবিতে মেক্সিকোর বিষয়গুলো খুব হালকাভাবে উঠে এসেছে। এ ছাড়া মেক্সিকোর পরিপ্রেক্ষিতে ছবি হলেও প্রায় সব অভিনেত্রীই অন্য দেশের, এটা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে।

সমালোচনার পাশাপাশি এত প্রশংসা, পুরস্কার আর মনোনয়ন অঁদিয়ারের জন্য বাড়তি প্রাপ্তি বলে মনে করছেন। এ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নির্মাতা বলেন, ‘এটা খুবই সময়োপযোগী কাজ, সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে বক্তব্য আছে। এটা এমন একটা কাজ, যা আমি চাইলে ১০ বছর আগে বানাতে পারতাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই অস্থির সময়ে আশা করি ‘এমিলিয়া পেরেজ’ হবে আলোর বাতিঘর।’
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে বেঁধে মারধর, ভাঙচুর ও লুটপাট

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে পরিবারের সবাইকে বেঁধে মারধর করে স্বর্ণালংকার ও মুঠোফোন লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ছয়টি দোকান ভাঙচুর ও মালামাল লুট করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার দক্ষিণ অনইলবুনিয়া গ্রামের বটতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের প্রধান হারুন অর রশিদ (৬৫) থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ৯৯৯–এ ফোন করা হলেও এক কিলোমিটার দূরের কাঁঠালিয়া থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে আড়াই ঘণ্টা পরে।

হারুন অর রশিদ বলেন, ২০০৭ সালে বটতলা বাজারে ছয় শতাংশ জমি কিনে ছয়টি টিনের দোকানঘর তৈরি করে ব্যবসা শুরু করেন তিনি ও তাঁর দুই ছেলে। এর পেছনেই বসতঘর তৈরি করে তাঁরা বসবাস করছেন।

হারুন অর রশিদের ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, ভোরে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র হাতে বাড়িতে প্রবেশ করে অন্তত ১৫ জন দুর্বৃত্ত। প্রথমেই তারা পরিবারের সব সদস্যকে মারধর করে হাত–পা বেঁধে ফেলে। পরে ঘরের মধ্যে থাকা ৫টি মুঠোফোন ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ সময় বাইরে অবস্থান করা ৫০ জনের একটি দল তাঁদের ছয়টি দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে মালামাল, টিন ও কাঠ ট্রাক ভরে নিয়ে গেছে। ছয়টি দোকানের মধ্যে ছিল মুদির দোকান, চায়ের দোকান, কসমেটিকসের দোকান ও মুরগির দোকান। ঘটনার সময় ভোরের আলো ফোটেনি, কেবল ফজরের আজান হচ্ছিল। দুর্বৃত্তরা তাঁর ছোট দুই বোনকে ব্যাপক মারধর করেছে।

মেহেদী হাসান বলেন, সম্প্রতি ফয়সাল আহম্মেদ নামের একজনের কাছ থেকে বটতলা বাজারে ছয় শতাংশ জমি কেনেন নাসির খান নামের ঢাকার এক ব্যবসায়ী। গত ২২ এপ্রিল জমির দলিল করেই তাঁদের জমিকে নিজের কেনা সম্পত্তি দাবি করে উচ্ছেদের জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন নাসির খান। তাঁর ভাড়া করা লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির খানের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মং চেনলা বলেন, ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, জনবল কম থাকায় ঘটনাস্থলে যেতে দেরি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ