প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরলো যুক্তরাষ্ট্র
Published: 21st, January 2025 GMT
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এ পদক্ষেপ নেন তিনি। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গতকারী দেশকে এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে চলা বৈশ্বিক লড়াই প্রচেষ্টা থেকে সরিয়ে নিলেন ট্রাম্প।
সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির স্পোর্টস ভেন্যু ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনায় সমবেত সমর্থকদের সামনে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে প্রত্যাহারের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এর আগে তিনি বলেন, আমি অবিলম্বে অন্যায্য, একপেশে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি প্রতারণা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করছি। চীন যখন দায়মুক্তি পাচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের নিজেদের শিল্পের ক্ষতি করতে পারে না। এই পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র পুরো বিশ্বের মধ্যে ২০১৫ সালের ওই চুক্তির বাইরে থাকা তিন দেশ– ইরান, লিবিয়া ও ইয়েমেনের পাশে স্থান পেল।
ওই চুক্তিতে বিশ্বব্যাপী সরকারগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব এড়াতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি শিল্পবিপ্লবের আগের স্তর থেকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (২ দশমিক ৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) মধ্যে রাখতে সম্মত হয়েছিল। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। তার পর চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত এক বছর পর কার্যকর হবে।
এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ে ট্রাম্পের সন্দেহ প্রতিফলিত হলো, যাকে তিনি ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে অভিহিত করে আসছেন। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোকে সর্বোচ্চ উৎপাদনের জন্য প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্ত করার তাঁর বৃহত্তর পরিকল্পনার সঙ্গেও খাপ খায়। এখন বিশ্বের শীর্ষ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণকারী দেশ চীন। তবে এর পরেই আছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর রয়টার্স ও আলজাজিরার।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প য র স জলব য়
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া