ভারতের প্রথম এয়ার স্ট্রাইকের ঘটনা নিয়ে সিনেমা
Published: 23rd, January 2025 GMT
ভারতীয় নাগরিক যখন ছিলেন না, তখনও একাধিকবার পর্দায় দেশপ্রেমের গল্প বলেছেন বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার। এরপর যখন এই অভিনেতার ‘ওএমজি ২’ সিনেমা মুক্তি পেল, তখনই তাঁর কপাল খুলল। পেলেন ভারতীয় নাগরিকত্ব। যার জেরে নিন্দুকদের কাছে ঘুচেছে ‘কানাডিয়ান কুমার’ তকমা। গত বছরের গান্ধী জয়ন্তীতে দেশাত্মবোধক সিনেমার ঘোষণা করছিলেন অক্ষয় কুমার। নাম ‘স্কাই ফোর্স’। ভারতের প্রথম এয়ার স্ট্রাইকের ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। যৌথভাবে সিনেমাটি পরিচালনা করছেন সন্দীপ কেওলানি এবং অভিষেক কাপুর। চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন সন্দীপ খোদ।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আবহে আকাশপথে যে ভয়ংকর হামলার ঘটনা ঘটেছিল, সেই ঘটনাই এবার পর্দায় তুলে ধরেছেন অক্ষয়। ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর পাশাপাশি লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জন্মবার্ষিকীও। সে পরিপ্রেক্ষিতেই এই নতুন ছবির ঘোষণা করেছিলেন বলিউডের এই খিলাড়ি। কারণ এ ঘটনা যে সময়ে ঘটেছিল, তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। ছবিতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডারের পোশাক গায়ে জড়িয়েছেন অক্ষয়। এই থ্রিলার গল্পে অক্ষয়ের সঙ্গী বীর পাহাড়িয়া। এ ছবির মাধ্যমেই বলিউডে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন বীর। ছবিতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর তরুণ অফিসারের চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। ছবিতে শত্রুপক্ষের ডেরায় মিশন চলাকালে নিখোঁজ হয়ে যায় তাঁর যুদ্ধবিমান। তাঁর স্ত্রীর ভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেত্রী সারা আলি খানকে।
উল্লেখ্য, বলিউড অভিনেত্রী জাহ্নবী কাপুরের প্রেমিক শিখর পাহাড়িয়ার ছোট ভাই বীর। পাশাপাশি এ মুহূর্তে পর্দার বাইরে সারা আলি খানের সঙ্গে বর্তমানে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। বলিপাড়ায় কান পাতলেই শোনা যায়, একসময় নাকি পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন এ দু’জন! তাদের একসঙ্গে ইতিউতি যাওয়ার একাধিক ছবিও প্রকাশ্যে এসেছিল নেটপাড়ায়। আবার কেউ কেউ অবশ্য বলেন, কেদারনাথ ছবিতে কাজের আগেই বীরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সাইফকন্যা। তবে ‘কফি উইথ করণ’-এর একটি পর্বে সঞ্চালক করণ মজা করে সারার উদ্দেশ্যে বলতে শোনা গিয়েছিল, জাহ্নবী যখন শিখরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন প্রায় একই সময়ে সারাও বীরের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি সিনেমার ট্রেলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে সারার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা অল্প কথায় ভাগ করলেন বীর। তাঁর কথায়, ‘এই ছবিতে সারার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভীষণ সুন্দর। সে মানুষ হিসেবে যেমন মিষ্টি, তেমনই দারুণ। খুব সাহায্য করেছে আমাকে। ইতোমধ্যে ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ কয়েকটি বছর কাটিয়ে ফেলেছে সে। যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তাই সে যেভাবে আমাকে এই ছবির শুটিংয়ে সাহায্য করেছে, তাতে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ। সারাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।’ ‘স্কাই ফোর্স’ সিনেমার অন্য একটি চরিত্রে রয়েছেন নিমরত কর।
সিনেমাটি নিয়ে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অক্ষয় বলেন, ‘১৯৬৫ সালের ঘটনা। আমাদের দুজনের চরিত্রই বাস্তব। বীর অভিনয় করেছেন স্কোয়াড্রন লিডার আজ্জামাদা বি দেবাইয়া চরিত্র। যে এক কথায় বিপ্লবী। যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন সবাইকে বাঁচাতে সে সারগোধা পৌঁছে গিয়েছিল; যা ছিল পাকিস্তানের অংশ। তারপর সবাই ভেবে নেয় সে গাদ্দার। এরপর দীর্ঘসময় ধরে কেউ জানত না যে সে আসলে হিরো। ছবিতে তার সিনিয়রের ভূমিকায় রয়েছি। যে শপথ নেয় সত্যিটা সামনে আনার।’
গেল বছর অক্ষয় অভিনীত প্রায় সব ছবিই ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অক্ষয় বলেন, ‘আমি নতুন বছরের অপেক্ষায় ছিলাম। তবে এমন নয় যে এটা আমার সঙ্গে প্রথমবার ঘটেছে, এটা আমার সঙ্গে আগেও ঘটেছে। তবে বিফল হলে আমি নিজেই নিজেকে বলি, পরিশ্রম করতে থাক, আরও পরিশ্রম করতে হবে।’ সিনেমাটি নিয়ে অক্ষয় আরও বলেন, ‘এক বীরত্বপূর্ণ আত্মত্যাগের অকথিত কাহিনির সাক্ষী থাকুন– ভারতের প্রথম এবং সবচেয়ে মারাত্মক যুদ্ধবিমান হামলার কাহিনি মিশন স্কাই ফোর্স।’ চলতি বছরে ‘স্কাই ফোর্স’ ছাড়াও ‘হাউসফুল ৫’ এবং ‘ওয়েলকাম টু দ্য জঙ্গল’-এর মতো ছবিতেও দেখা যাবে অক্ষয়কে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।