মানিকগঞ্জ জেলা কারাগার যেন ‘দুর্নীতির আখড়া’!
Published: 23rd, January 2025 GMT
সিংগাইর উপজেলার গোলাইডাঙ্গা গ্রামের ইদ্রিস আলী নিজের স্ত্রীকে নিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে এসেছেন হাজতি ছেলে শিপলুর সাথে সাক্ষাৎ করতে। নাম ঠিকানা দিয়ে সহজে সাক্ষাৎও পেয়েছেন, কোনো টাকা পয়সা লাগেনি। তবে সাক্ষাৎ করে আসার পর থেকেই নিজের চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি ইদ্রিস আলী। কী এমন কথা হয়েছে ছেলের সাথে, যা শুনে দরিদ্র ইদ্রিসের চোখের কোনে জল? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে মিলেছে কারাগারে বন্দিদের দুঃসহ জীবনযাপনের এক ভয়াবহ চিত্র।
ইদ্রিস আলীর স্ত্রী বলেন, “ছোট ছেলে শিপলু একটি মামলার দুই নাম্বার আসামি। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) আদালতে জামিন চাইলে তা না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন বিচারক। শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকায় সাক্ষাৎ করতে পারেননি। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ছেলের সাথে সাক্ষাৎ হয়। ছেলে তাকে জানান, যেকোনো মূল্যে তাকে যেনো জামিনে বের করা হয়। জেলের খাবার খেয়ে যেকোনো সময় মৃত্যু হতে পারে। খাবারের মান এতই নিম্নমানের!”
ইদ্রিস আলী বলেন, “আমরা গরিব কিন্তু জেলখানায় খাওয়ানোর মতো খাওন আমার পুলা কোনদিন খায় নাই। পুলাডা বারে বারে কইছে এই খাওন খাইলে মইরাও যাইতে পারে। যেমনেই হোক পুলারে যানি বাইর করি। দেহা অহনের পরে ক্যান্টিনের লাইগা ছয়শো ট্যাকা রোববার জমা দিছি, যানি একটু ভালো মতোন খাইতে পারে। মঙ্গলবারে পুলাডার জামিন অইছে। জেলখানায় পুলাডারে পানির মতন ডাইল, যা তা নিরামিষ, সকালে কোনো রকমের ছোট্ট রুটি দিতো। জেল খানায় আগে দেহা করবার আইলে দুইশো কইরা টাহা লাগতো, এহন লাগে না। এডা খুবই ভালো অয়ছে। তয় খাওয়ানোর মান আগের চাইয়্যা দিন দিন খারাপ অইছে।”
শুধু ইদ্রিস আলীই এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বিষয়টি এমন নয়। মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের সামনে হাজতিদের বহু আত্মীয় খাবারের মান ভালো নয় বলে দুঃখ করেছেন। ফলে তারা ক্যান্টিনের জন্য পিসিতে টাকা জমা দিয়ে আসেন।
তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে প্রাপ্ত নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, বন্দিদের সকালের খাবারে সপ্তাহের চার দিন সবজি-রুটি, দুই দিন খিচুড়ি ও একদিন হালুয়া-রুটি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সকালের খাবারে হাজতিদের রুটির ওজন ৯০ গ্রাম ও কয়েদিদের রুটির ওজন ১২০ গ্রাম। খিচুড়িতে হাজতিদের খিচুড়ির চাউলের ওজন ৯০ গ্রাম ও কয়েদিদের ১২০ গ্রাম এবং সবজির ওজন উভয়ের জন্য ১৫০ গ্রাম করে থাকবে।
দুপুরের খাবারে হাজতিদের ২৪৭.
এসব খাবারের সাথে মাসে ১০ দিন মাংস ও অন্যান্য দিন মাছ দেওয়ার নিয়ম। এরমধ্যে পাঁচ দিন গরুর মাংস, চার দিন মুরগির মাংস, একদিন ছাগি/খাসির মাংস, অন্যান্য দিনগুলোতে বিভিন্ন প্রকারের মাছ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
মাছ ৩৬.৪৫ গ্রাম, গরুর মাংস ৩৮.৭৮ গ্রাম, খাসির মাংস ৩৬.৪৫ গ্রাম এবং মুরগির মাংস ৩৭.৯০৮ গ্রাম দেওয়ার নিয়ম। খাবার পরিবেশনের এসব নিয়ম কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই বলে জানান জামিনে বের হয়ে আসা আসামিরা।
দেড় মাসের বেশি সময় জেলে থেকে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর জামিনে বের হয়েছেন শিবালয়ের হারেজ। তিনি বলেন, “নতুন জেল সুপার একদিন ঘুইরা দেইখ্যা যারা রান্দন বারন করে তাগো ডাইক্যা আনছিলো। তাগো ডাইক্যা জিগাইলো খাওন এতো কম দেওয়া অয় ক্যান? তারপর কয়দিন খাওনের পরিমাণ বাড়ছিলো। আমরা তো আর জানি না কতটুকুন খাওন আমাগো দিবো, আমরা তো আর নিয়ম জানি না। আমাগো যা দিছে তাই খাইছি। তয় একটু মাংস সপ্তাহে দুইবার পায়ছি কিন্তু খাসির মাংস দেড়মাসের মধ্যে একবারও পাই নাই। কয়বার মাংস পাওয়ার নিয়ম তাতো জানি না।”
এদিকে জেলা কারাগারে অসুস্থ বন্দিদের সেবায় একজন সহকারী সার্জন ও একজন ডিপ্লোমা নার্সের পদ থাকলেও ওই পদে কর্মরত নেই কোনো চিকিৎসক ও নার্স। বন্দিদের সেবায় রয়েছে ২০ শয্যা বিশিষ্ট কারা হাসপাতাল ও একজন ফার্মাসিস্ট। অসুস্থ বন্দিদের সেবায় কারা হাসপাতাল করা হলেও টাকার বিনিময়ে সেখানে চলছে আয়েশি জীবন যাপন।
এমন অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে আদালত প্রাঙ্গণ এলাকা ও জেলা কারাগার এলাকায় পরিচয় গোপন রেখে অনুসন্ধান করেছে রাইজিংবিডির এই প্রতিবেদক।
অনুসন্ধান বলছে, পাঁচ হাজার টাকা দিলে এক মাসের জন্য কারা হাসপাতালের শয্যা বরাদ্দ পাওয়া যায়। ব্যক্তি বিশেষে এ টাকা উঠানামা করলেও ঘুষ ছাড়া কেউ শয্যা পায় না। আসামিকে প্রথমদিন ওয়ার্ডে কাটাতে হয়, আগের দিন ঘুষের টাকা দিলেই পরের দিন থেকে কারা হাসপাতালে আরাম আয়েশে থাকতে পারেন হাজতি। এক মাসের আগে জামিন হয়ে গেলে ওই টাকা ফেরত দেওয়া হয় না। একদিন থাকলেও পাঁচ হাজার, এক মাস থাকলেও পাঁচ হাজার। তবে কারাগারের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারিরা অপরিচিত কারো সাথে এ টাকার লেনদেন করেন না। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে নির্দিষ্ট পরিচিত লোকজনের সাথে তারা লেনদেন করেন।
আবু তালেব গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর জামিন পেয়েছেন। নভেম্বরের ৩ তারিখ থেকে তিনি ৪৬ দিন জেলে ছিলেন। ওই সময়ে কারাগারে একাধিক দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে ফিরেছেন তিনি। আবু তালেব বলেন, “প্রতিটি ওয়ার্ডে রাইটারসহ কয়েকজন দায়িত্বে থাকেন। এসব দায়িত্বরত ব্যক্তিরা বন্দিদের কাছে বিছানার জন্য পনেরশ’ টাকা দাবি করেন। যার কাছে যেভাবে পারে টাকা নেয়। টাকা না দিলে টয়লেটে থাকতে হবে বলেও হুমকি দেন। একবার জেল সুপার পরিদর্শনে এলে আনোয়ার নামের এক বন্দী এসব বিষয় তাকে জানান। তারপর ওয়ার্ডের দায়িত্বরা বন্দিদের সাথে আরো বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। জেল সুপার পরিদর্শনে খাবার কম দেওয়ায় অসন্তুষ্ট প্রকাশ করলে কয়েকদিন খাবারের পরিমাণ বেড়েছিলো। আসলে কী পরিমাণ বরাদ্দ থাকে তা বন্দিদের পক্ষে জানা সম্ভব না।”
অপর আসামি নজরুল ব্যাপারী বলেন, “দেড় মাসের বেশি সময় কারাগারে ছিলাম। টাকা ছাড়া কোনো বিছানা বা চাদর কিছুই দেয় না। টাকা না দিলে মেঝেতে ছালা বিছিয়ে ঘুমাতে হয়। ওদের কাছে টাকাই সব। জেলখানার খাবারের মান ভালো হলে ক্যান্টিন চলবে কীভাবে? ওদের খাবার যদি ভালো হতো, তাহলে তো বন্দিদের আর ক্যান্টিনের খাবার কিনে খেতে হতো না।”
মানবাধিকার কর্মী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “কোনো আসামি সাজা পেলেও তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা যাবে না। সরকার নির্ধারিত সুযোগ সুবিধা বন্দিদের নিশ্চিত করা কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। এসব সুযোগ সুবিধা দিতে বন্দিদের কাছ থেকে কারাগারের অসাধু কর্তা ব্যক্তিরা টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন। যা মানবিধার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও অন্যায়। আসামিদের বিচার করবে আদালত। কিন্তু এসব অন্যায়ের সাথে জড়িতদের বিচার করবে কে? যাদের টাকা আছে, তারা কারাগারে বেশি সুযোগ সুবিধা পাবে, এটা মোটেও ঠিক না।”
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন কচি বলেন, “জেলা কারাগার এখন বাইরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট। সাক্ষাৎ করতে আগে টাকা লাগতো, এখন লাগে না এমন দৃশ্য দেখিয়ে ভিতরে ঠিকই দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে রেখেছে। সবার চোখে ধুলো দিয়ে এমন অনিয়ম চলছে। জেলের ভিতরে টাকাওয়ালারা ঘুষ দিয়ে হাসপাতালে আরাম আয়েশে থাকে, আর গরিবরা টাকা না থাকায় প্রাপ্য তোষক-বালিশের অধিকার টুকুও পায় না। এমন অনিয়ম বন্ধে কারা পরিদর্শনকারীদের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”
এসব অনিয়মের বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির খান বলেন, “খাবারের মান নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন খাবারের মান খুবই ভালো। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন্দিরা বিছানা পাবেন। কেউ টাকা নিয়ে থাকলে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারা হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে থাকার সুযোগ নেই। তারপরও কেউ অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। বন্দিদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “কারাগার পরিদর্শন করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কোথাও কোনো অনিয়ম, ঘাটতি থাকলে সাথে সাথে তা ঠিক করা হচ্ছে। তারপরও কোনো অসাধু কর্মকর্তা অনিয়মের সাথে জড়িত কিনা সে বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন কগঞ জ জ ল স ক ষ ৎ কর র জন য থ কল ও ওজন র র ওজন একদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯
ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।
আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।