সমতলের চা শিল্পে দালালদের দৌরাত্ম্যে বন্ধ করতে আগামী বছর পঞ্চগড়ে চা বোর্ডের পক্ষ থেকে কয়েকটি চা পাতা ক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন। 

তিনি বলেন, “বাগানে গিয়ে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি চা কিনবে চা বোর্ড। পরে সেই চা কারখানায় সরবরাহ করা হবে।”

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চা চোরাচালান রোধ ও উত্তরাঞ্চলের চা শিল্পের উন্নয়নে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

বিসিসি-শ্রমিক ইউনিয়নের সমঝোতা, আন্দোলন প্রত্যাহার 

ভিয়েতনাম থেকে কেনা হচ্ছে এক লাখ মেট্রিক টন চাল

মেজর জেনারেল শেখ মো.

সরওয়ার হোসেন বলেন, “সমতলের অর্ধেক চা নিলামে বাজারে যায় না। অবৈধ চা যে প্রতিষ্ঠান পরিবহন করবে সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে যেসব কারখানা অবৈধ প্রক্রিয়ায় চা কেনাবেচায় জড়িত থাকবে সেই কারখানাও বন্ধ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে চা বোর্ড।” 

তিনি আরো বলেন, “চা শিল্পের উন্নয়নে টি টেস্টের ক্ষেত্রে ব্লাইন্ড টি টেস্ট সিস্টেম চালুর পরিকল্পনা করছি আমরা।”

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলীর সভাপতিত্বে মতবিনিসময় সভায় অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি, চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান বক্তব্য রাখেন।

এসময় চা বোর্ডের সদস্য ড. পীযূষ দত্ত, পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈয়দপুর সেনানিবাসের ২৯ বীর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ইউসুফ চৌধুরী, চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমির হোসেন, বাংলাদেশ স্মল টি ওনার্স এন্ড টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, বিডার, বায়ার, কুরিয়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিসহ চা শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে

তীব্র খরার কবলে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান। সেখানে বাসিন্দাদের সুপেয় পানির প্রধান উৎসটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ গতকাল রোববার এ খবর জানিয়েছে।

তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএর খবরে বলা হয়, তেহরানে খাবার পানি সরবরাহের পাঁচটি উৎসের একটি আমির কবির বাঁধ। সেটিতে এখন মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি আছে। এটি জলাধারটির মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ।

বেহজাদ পারসা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহ তেহরানের খাবার পানির চাহিদা মেটানো যাবে।

ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।

কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার মোকাবিলা করছে ইরান। গত মাসে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তেহরান প্রদেশে এবার বৃষ্টির যে মাত্রা, তেমনটা গত এক শতাব্দীতে খুব একটা দেখা যায়নি।

এক কোটির বেশি মানুষের নগর তেহরান তুষারাচ্ছন্ন আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮ হাজার ৩৭০ ফুট) পর্যন্ত। এই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো বহু জলাধারে পানির জোগান দেয়।

বেহজাদ পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।

তেহরানে পানি সরবরাহ করা বাকি জলাধারগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এই কর্মকর্তা।

ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।

এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।বেহজাদ পারসা, তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক

পানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ হিসেবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বারবার সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর চলতি গ্রীষ্মে ঘন ঘন পানি সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।

জুলাই ও আগস্টে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দুই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ইরানে সে সময় তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিং হয়েছে।

ওই দুই মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়ে গিয়েছিল।

জুলাই ও আগস্ট মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছুঁয়ে ছিল।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আজ যেভাবে আলোচনা হয়েছে, পানিসংকট পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’

ইরানজুড়ে পানিসংকট একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের শুষ্ক প্রদেশগুলোতে। ভূগর্ভস্থ সম্পদ ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা ও সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে পানি ঘাটতির জন্য দায়ী করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে ভূমিকা রাখছে।

আরও পড়ুনপ্রচণ্ড গরমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ইরানিদের কম পানি ব্যবহারের আহ্বান২০ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ