বিএনপি-যুবদল নেতাদের শাস্তি দাবি গ্রামবাসীর
Published: 31st, January 2025 GMT
বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগ তুলে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের দিঘিরকান্দা চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বক্তারা অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্ষোভকারীদের জবাবদিহি চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি বেলায়েত হোসেন।
শুক্রবারের মানববন্ধনে কড়িহাতা ইউনিয়নের দিঘিরকান্দা, কোড্ডাইদ ও পাকিয়াব এলাকার শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন। দিঘিরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও কড়িহাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.
কোড্ডাইদ গ্রামের ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও তাঁর ভাইদের কাছে এলাকাবাসী অনেকটাই জিম্মি। ১ নম্বর ওয়ার্ডে কোনো কিছু করতে হলে তাদের অনুমতি ছাড়া সম্ভব নয় বলে তারা প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন।
পাকিয়াব গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, কিছুদিন আগে একটি পারিবারিক কলহ মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবুল মিয়া ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা
দাবি করেন।
দিঘিরকান্দা মোড়ের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের ছত্রছায়ায় এলাকায় ব্যাপকহারে মাদকের কারবার চলছে। অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কেটে আশপাশের ইটের ভাটায় সরবরাহেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা। এসব কারণে এলাকার রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সমস্যার প্রতিকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এসব অভিযোগের সবই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার বা মাটি কাটায় তিনি, তাঁর দল বা অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। এসব বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলকারীদের কাছে নেই। এজন্য বিক্ষোভকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
কড়িহাতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে সমকালকে বলেন, তাদের কাছে এমন অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ নিয়ে কেউ আসেনি। অভিযোগ তদন্ত করে কারও দোষ পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”
তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”
বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।