বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগ তুলে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের দিঘিরকান্দা চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বক্তারা অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্ষোভকারীদের জবাবদিহি চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি বেলায়েত হোসেন। 
শুক্রবারের মানববন্ধনে কড়িহাতা ইউনিয়নের দিঘিরকান্দা, কোড্ডাইদ ও পাকিয়াব এলাকার শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন। দিঘিরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও কড়িহাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.

সিরাজউদ্দিন অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা মৃত আহম্মদ আলী, একই গ্রামের ওহাবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মো. সিরাজ উদ্দিন ও বড়হর গ্রামের মাহাবুবুল আলম দিঘিরকান্দা চৌরাস্তা এলাকায় বড়হর গ্রামের মো. আনছার আলীর কাছ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে ৩৫ শতাংশ জমি কিনেছিলেন। ৫ আগস্টের পর ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন, তাঁর বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট মো. তোফাজ্জল হোসেন, ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজউদ্দিন, ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আমির হোসেন ও সহসভাপতি মো. বাদল মিয়ার নেতৃত্বে জমিটি দখলের পাঁয়তারা চলছে। কয়েক দিন আগে তারা সেখানে ইট, বালু ও পিলার স্থাপন করতে যান। পরে এলাকাবাসীর বাধার মুখে তারা সরে যান। ওই জমিটি যেভাবেই হোক দখলের হুমকি দিচ্ছেন ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজউদ্দিন।

কোড্ডাইদ গ্রামের ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও তাঁর ভাইদের কাছে এলাকাবাসী অনেকটাই জিম্মি। ১ নম্বর ওয়ার্ডে কোনো কিছু করতে হলে তাদের অনুমতি ছাড়া সম্ভব নয় বলে তারা প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন। 
পাকিয়াব গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, কিছুদিন আগে একটি পারিবারিক কলহ মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবুল মিয়া ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা 
দাবি করেন। 
দিঘিরকান্দা মোড়ের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের ছত্রছায়ায় এলাকায় ব্যাপকহারে মাদকের কারবার চলছে। অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কেটে আশপাশের ইটের ভাটায় সরবরাহেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা। এসব কারণে এলাকার রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সমস্যার প্রতিকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। 
এসব অভিযোগের সবই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার বা মাটি কাটায় তিনি, তাঁর দল বা অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। এসব বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলকারীদের কাছে নেই। এজন্য বিক্ষোভকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
কড়িহাতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে সমকালকে বলেন, তাদের কাছে এমন অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ নিয়ে কেউ আসেনি। অভিযোগ তদন্ত করে কারও দোষ পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন