বরগুনার তালতলীতে মো. আরাফাত খান নামে এক মোটরসাইকেল চালককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা আরাফাত সিকদারকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন হাওলাদার ও সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম জহির স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। 

বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা আরাফাত সিকদার উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও একই ইউনিয়নের কলারং গ্রামের শহিদ সিকদারের ছেলে। 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তালতলী উপজেলা ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙের অভিযোগের ভিত্তিতে তালতলী উপজেলার অধীনস্থ পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আরাফাত সিকদারকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। 

এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “কেন্দ্রীয়ভাবে আরাফাতকে বহিষ্কারের নির্দেশ পেয়ে বহিষ্কার করেছি। যদিও আমরাই তাকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করেছিলাম। কোনো অপরাধীদের জায়গা ছাত্রদলে নেই। এ ধরনের বিষয়ে আমরা পুলিশকে সহায়তা করবো।” 

উল্লেখ্য গত শনিবার রাতে মো.

আরাফাত খান ছাত্রদল নেতা আরাফাত সিকদারের মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে মোটরসাইকেলচালক আরাফাত খানকে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটে।

ঢাকা/ইমরান/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ন ত ছ ত রদল র স উপজ ল ত লতল

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ