অবৈধ অভিবাসীদের হাতে হাতকড়া ও পায়ে শিকলের বেড়ি পরিয়ে ফেরত পাঠানো হলেও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারত সরকার প্রতিবাদ পর্যন্ত জানায়নি। বিষয়টি নিয়ে বিজেপিবিরোধীরা পার্লামেন্টে আলোচনার দাবি তুললে তা মানা হয়নি। পরে বিরোধী দলগুলোর বিক্ষোভের মুখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বিবৃতি দেন। তাতে শুধু বলা হয়, অবৈধ অভিবাসীদের সঙ্গে যাতে দুর্ব্যবহার করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারত কথা বলছে।

গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পণ্যবাহী বিমানে ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হয়। হাতে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরানো যাত্রীদের ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ফেরত আসা যাত্রীদের সাক্ষাৎকারও প্রচারিত হয়। তাঁদের নামানো হয় অমৃতসর বিমানবন্দরে।

পরে জানাজানি হয়, পুরো যাত্রাপথে যাত্রীদের শৃঙ্খলিত রাখা হয়েছিল। এই অমানবিক প্রত্যাবর্তন নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদের দুই কক্ষে বিরোধীরা দাবি জানালেও তা মানা হয়নি। প্রতিবাদে দফায় দফায় লোকসভা অচল থাকে। সংসদ ভবন চত্বরে রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ বিভিন্ন বিরোধী দলের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখান। অংশ নেন সমাজবাদী পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, আম আদমি পার্টির সদস্যরাও।

এই বিক্ষোভের মুখে রাজ্যসভায় বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় বিবৃতি দেন জয়শঙ্কর। এর আগে তিনি দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। বিবৃতিতে তিনি বলেন, অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো নতুন কিছু নয়। ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছর কতজনকে যুক্তরাষ্ট্র ফেরত পাঠিয়েছে, সেই হিসাব দেওয়ার পাশাপাশি তিনি বলেন, উড়োজাহাজে সব সময়ই অভিবাসীদের নিয়ন্ত্রণে (হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি) রাখা হয়। তবে নারী ও শিশুদের সেই নিয়ন্ত্রণের আওতায় রাখা হয় না। তিনি বলেন, সে দেশের নিয়ম মেনেই তা করা হয় এবং এটা শুধু ভারতীয়দের ক্ষেত্রেই করা হচ্ছে না, এই নিয়ম চালু রয়েছে ২০১২ সাল থেকে।

জয়শঙ্করের বিবৃতির পর বিরোধীরা বেশ কিছু প্রশ্ন তোলেন। সব প্রশ্নের উত্তর তিনি স্পষ্ট ভাষায় দেননি। হাতকড়া ও বেড়ি পরানো ভারতীয়দের ফেরত পাঠানোর রীতির প্রতিবাদও করেননি। কলম্বিয়া সরকারের মতো ভারত কেন নিজস্ব বিমান পাঠাল না, সেই প্রশ্নও করা হয়েছিল। জয়শঙ্কর তা-ও এড়িয়ে গেছেন। স্পষ্টতই সরকার চায় না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগভাজন হতে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ তকড়

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক

গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।

ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন। 

লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।

ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।

ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/টিপু  

সম্পর্কিত নিবন্ধ