আশঙ্কা আগেই ছিল, তবে আশার বাণীও ছিল। কিন্তু সত্যি হয়েছে আশঙ্কাই। ইতিহাসের উষ্ণতম জানুয়ারি মাসের খেতাব পেয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি। ইউরোপের পরিবেশ মনিটর কোপারনিকাস জলবায়ু পরিবর্তন পরিষেবা বৃহস্পতিবার প্যারিসে দিয়েছে এই তথ্য।

সংস্থাটি বলছে, শিল্পবিপ্লবের আগের তুলনায় ১.৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে গত মাসের তাপমাত্রা। যদিও বিজ্ঞানীরা আশা করেছিলেন, শীতল ‘লা নিনা’ অবস্থার কারণে গত বছরের রেকর্ড সৃষ্টিকারী বৈশ্বিক তাপমাত্রা এ বছরে এসে কিছুটা কমবে। কিন্তু তাপমাত্রা না কমে উল্টো রেকর্ড মাত্রায় অথবা রেকর্ড মাত্রার কাছাকাছি অবস্থান করছে। কেন আবহাওয়ার এমন বৈরী রূপ– এ প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজে পাননি আবহাওয়াবিদ ও বিজ্ঞানীরা।

কোপারনিকাসের জলবায়ু বিজ্ঞানী জুলিয়েন নিকোলাস বলেছেন, আমরা যেমনটা প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমন হচ্ছে না। বৈশ্বিক তাপমাত্রায় শীতল লা নিনার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

কোপারনিকাস জলবায়ু পরিবর্তন সংস্থা বলেছে, বৈশ্বিক থার্মোস্ট্যাটে মানবসৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ এখন চরমে পৌঁছেছে। আবহাওয়ার এই চরমভাবাপন্ন অবস্থার বিরূপ প্রভাবে মানবজাতির পাশাপাশি বড় আকারের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃতির। হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। দ্য গার্ডিয়ান।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ