সাইফের ওপর হামলার মতো করে ছবির প্রচার, বিতর্কের মুখে বাঙালি অভিনেতা
Published: 7th, February 2025 GMT
বারান্দায় বসে বই পড়তে পড়তে গৃহকর্তা উঠে পাশের ঘরে ঢুকেছিলেন। বুঝতেই পারেননি ঠিক পেছন পেছন ঘরে ঢুকেছে এক দুর্বৃত্ত! পানি নিতে যখন তিনি ফ্রিজের কাছাকাছি, ঘাড় ঘোরাতেই চোখ কপালে! এ কে! কীভাবে ঢুকল, কোন মতলবে! ভয়ে বাড়ির মালিক চিৎকার করে উঠতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই দুর্বৃত্ত। ধস্তাধস্তির মধ্যেই শেষমেশ দুর্বৃত্ত উধাও। এ পর্যন্ত পড়েই পাঠক নিশ্চয়ই সম্প্রতি বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের বাড়িতে হওয়া হামলার সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন। সাইফের বাড়িতে হওয়া হামলার অনুকরণে গল্প সাজিয়ে নিজের ছবির প্রচারে নামলেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। তা নিয়েই নিন্দার ঝড়। প্রবল সমালোচনার মুখে ঋত্বিক চক্রবর্তী। খবর সংবাদ প্রতিদিনের
গতকাল বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করেন ঋত্বিক স্বয়ং। যাঁর সঙ্গে সাইফের ওপর হামলার মিল পেয়েছেন নেটিজেনরা। শুধু তা–ই নয়, সাইফের বাড়ি থেকে পালানোর সময় যেমন দুষ্কৃতকারীর মুখ ধরা পড়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরায়, একইভাবে ঋত্বিকের ভিডিওর দুষ্কৃতকারীর মুখও সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে।
আরও পড়ুনসাইফ আলী অভিনেতা হিসেবে যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলেন০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫তফাত একটাই, ক্যামেরার সামনে চিরকুট মেলে ধরে সেই দুষ্কৃতকারীই জানাচ্ছে, ‘এটুকুই জানাতে এসেছিলাম।’ তলায় লেখা ছবির নাম ও মুক্তির তারিখ।
নিজেদের ছবির প্রচারে অভিনব কৌশল ব্যবহারের রেওয়াজ বহুদিনই চালু বলিউডে। আমির খানকেও নিজের ছবির প্রচারে ছদ্মবেশে গোটা দেশ চষে ফেলতে দেখা গিয়েছে। সেই প্রচার কৌশলেই অঙ্গ হিসেবে আমিরকে এমনকি হানা দিতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর বাড়িতেও। কিন্তু ঋত্বিকের এই কৌশল ভালোভাবে নেননি নেটিজেনরাও।
একাংশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মন্তব্যের ঘরে। বলিউডের এক তারকার জীবনে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনা নিয়ে এমন প্রচার আখেরে টালিউডেরই মর্যাদাহানি করেছে বলেও সরব অনেকেই। তবে এ ঘটনা নিয়ে ঋত্বিকের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাসাবাড়িতে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু নিয়োগ বন্ধে আইন করার সুপারিশ
বাসাবাড়ির কাজে তথা গৃহকর্মে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়োগ বন্ধে কঠোর আইন করার পাশাপাশি কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।
বাংলাদেশ জাতীয় শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাজ করানো হলে তা শিশুশ্রমের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা হয়। এ ছাড়া গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি ২০১৫-তে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুকে গৃহকর্মে নিয়োগ করা যাবে না।
শ্রম সংস্কার কমিশন এ প্রসঙ্গে বলেছে, গৃহকর্মে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়োগ বন্ধে কঠোর আইন করতে হবে। একই সঙ্গে এই আইনের কার্যকর বাস্তবায়নেও গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, সেখানে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গৃহশ্রমিকদের বাংলাদেশ শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিতে হবে। এর আগপর্যন্ত নিশ্চিত করতে হবে ‘গৃহকর্মীর কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা–২০১৫’–এর যথাযথ বাস্তবায়ন।
নিয়োগের ক্ষেত্রে আবাসিক, অনাবাসিক, খণ্ডকালীন বা স্থায়ী—সব ধরনের গৃহশ্রমিকদের জন্য কর্মঘণ্টা, বেতন, ছুটি, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সুবিধা উল্লেখ করে একটি স্বচ্ছ ও নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্মসংস্থান চুক্তি প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে শ্রমিকের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটি কার বরাবর, কোন স্থানে এবং কীভাবে দায়ের করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাসহ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
গৃহশ্রমিকদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি ও নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মাধ্যমে গৃহকর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া গৃহকর্মীদের সংগঠন বা ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রদানেরও সুপারিশ করেছে কমিশন।
পারলারের কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নেওয়ার পরামর্শ
এদিকে বিউটি পারলার খাতের শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে এ খাতের কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা ও তাঁদের সন্তানদের জন্য শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র বা ডে কেয়ার সুবিধা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতের কথা বলেছে কমিশন।
অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ খাতে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠনের সুপারিশও করেছে কমিশন। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীদের কাজের মান ও ঝুঁকি বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা এবং তাঁদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে পদোন্নতি কাঠামো তৈরি করতে হবে।
দেশের সব বিউটি পারলার শ্রমিকদের পেশাগত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা সুরক্ষার জন্য শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের স্বীকৃতি দেওয়া, অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে।
বিউটি পারলারের কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান করাসহ সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নির্দেশিকা প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বিউটি পারলারের কর্মীদের বড় একটি অংশ রাতে বাসায় ফেরে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে ও রাত্রিকালীন বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের হয়রানি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব শ্রমিকের সামাজিক মর্যাদা, সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে কমিউনিটিভিত্তিক উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।